আরেক রকম ● নবম বর্ষ চতুর্থ সংখ্যা ● ১৬-২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ● ৩-১৫ ফাল্গুন, ১৪২৭

প্রবন্ধ

আসন্ন বিধানসভা নির্বাচন সম্পর্কিত কিছু ভাবনা

বরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়


একটু পিছিয়ে যেতে হবে প্রথমেই। গত শতাব্দীর সাত আটের দশক। মোটামুটি পাঁচের কোঠায় যাঁদের বয়স বা আরেকটু বেশি - তাঁদের অবশ্যই মনে আছে। সেটা হয়তো বাঙালি অন্য আর পাঁচজনের চেয়ে সামান্য একটু হলেও বেশি রাজনীতি সচেতন বলেই। বেশ কিছু রাজনৈতিক দেওয়াল লিখনের কথা স্মৃতি নিয়ে একটু টানাটানি করলেই ভেসে উঠবে। চোখা চোখা বিশেষণ, বিশেষ বিশেষ শব্দবন্ধ, রঙিন দেওয়ালে রকমারি ছড়া, সরস উপস্থাপনা - সেই সময়ের রাজ্য রাজনীতির এ এক অতি পরিচিত ছবি। তৎকালীন দুই প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বাম ও কংগ্রেসের প্রবল বিরোধিতার সাক্ষ্য বহন করতো রাজ্যের দেয়াল রাজনীতি। আক্রমণ, প্রতিআক্রমণে রাজনৈতিক বিরোধিতার ছবি ফুটে উঠতো পাড়ায় পাড়ায় মোড়ে মোড়ে।

সাতের দশকে দেশবন্ধু পার্কের উল্টোদিকের বাড়ির দেওয়ালে যেমন ভোটের তারিখ দিয়ে লেখা হয়েছিলো - ‘…তারিখ আসছে দিন, জ্যোতি বসুর বিয়ের দিন’। এর উত্তরে ওই লেখনীর ওপরেই কোনো রসিক রাজনীতিক কালো রঙ দিয়ে লিখে দিয়েছিলো - ‘লিখেছিস বেশ করেছিস, ইন্দিরাকে সাজিয়ে রাখিস’। তারও আগে ছিলো ‘দিল্লি থেকে এলো গাই, সঙ্গে বাছুর সিপিআই’ কিংবা ‘চীনের প্রতীক কাস্তে হাতুড়ি, পাকিস্তানের তারা, এখনও কি বলতে হবে দেশের শত্রু কারা?’ অথবা আটের দশকের শেষ দিকে ‘কে খেয়েছে কে খেয়েছে বোফর্সের মৌ, আমি খাইনি, ছেলে খায়নি, খেয়েছে আমার বউ’। হাওড়া সদর লোকসভা কেন্দ্রে যেবার সিপিআই(এম) প্রার্থী সমর মুখার্জির বিরুদ্ধে দাঁড়ালেন কংগ্রেসের প্রিয়রঞ্জন দাসমুন্সি সেবার কংগ্রেস দেয়াল লিখলো - ‘সমর বাবু হবেন কাবু আর কটা দিন পরে, লালকেল্লার চেয়ার ছেড়ে হবেন কুপোকাত, হাওড়া শহর করে রেখেছেন শিবপুর শ্মশানঘাট’। এর পাল্টা লেখা হল - ‘দড়ির টানে পুতুল নাচে ছেলের কোমরে ঘুন্সি, কালোবাজারির টাকায় নাচে প্রিয় দাসমুন্সি’। এই লড়াইতে যেমন জায়গা করে নিতো সাঁইবাড়ি, মরিচঝাঁপি, বিজন সেতু তেমনই জায়গা পেতো খাদ্য আন্দোলন, জরুরি অবস্থা, মালোপাড়া গণহত্যা। প্রচার যুদ্ধে সূচ্যগ্র দেয়াল দুই প্রধান প্রতিপক্ষের কেউ কাউকে ছাড়তে রাজী ছিলো না। কোনো কোনো অন্ধ বাম সমর্থকের মনে ‘কংগ্রেস’ নামটার প্রতি এত বিতৃষ্ণা ছিলো যে সিপিআই(এম) কেন ‘পার্টি কংগ্রেস’ করে তা বোঝাতেও বেশ সময় লেগে যেত বয়স্কদের।

এ সবই নেহাত কথার কথা নয়। বলা যেতে পারে রাজ্য রাজনীতির ইতিহাস। বাম কংগ্রেস বিরোধিতার দীর্ঘ ইতিহাস। ছয়ের দশকের শেষদিকের যুক্তফ্রন্ট থেকে শুরু করে পরবর্তী সময়ের বামফ্রন্ট - ফ্রন্ট বড়ো কম দেখেনি এ রাজ্য। রাজ্যে ফ্রন্ট গঠন করে জোট রাজনীতির পথে হাঁটা শুরু করা বাংলাতে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দুই পক্ষের বিরোধিতা বেড়েছে বৈ কমেনি। একদিকে বামজোটের ছাতার তলায় জড়ো হয়েছে ফরওয়ার্ড ব্লক, আরএসপি, সিপিআই সহ একাধিক দল। অন্যদিকে পরবর্তী সময়ে ১৯৯৮ সালে সদ্য জন্ম নেওয়া তৃণমূল কংগ্রেস জোট বাঁধে বিজেপির সঙ্গে। এরপর থেকে বহু জোট দেখেছে রাজ্য। কখনও কংগ্রেস-তৃণমূল কংগ্রেস-এসইউসি, কখনও কংগ্রেস-তৃণমূল কংগ্রেস, কখনও তৃণমূল কংগ্রেস-বিজেপি। ২০০৪ সালে কেন্দ্রের ইউপিএ-১ সরকারকে বাইরে থেকে সমর্থন জুগিয়েছিলো বামেরা। যদিও সে সমর্থন ছিলো নির্বাচন পরবর্তী। সরকার বাঁচিয়ে রাখার সমর্থন। তবে সেটাও একধরনের সমঝোতাই ছিলো। আর রাজ্যের বাম জোট তো ছিলোই। সেখানে ক্রমশ দলের সংখ্যা বেড়েছে। বহু ছোটো ছোটো দল বামফ্রন্টে শামিল হয়ে রাজ্যের বুকে রাজনীতি করেছে। যদিও বাম কংগ্রেস বিরোধিতার জায়গাটা রাজ্য রাজনীতিতে অটুটই ছিলো একটা দীর্ঘ সময় পর্যন্ত। এখনও যে এই বিরোধিতা রাজ্যের কোথাও অবশিষ্ট নেই তা জোর গলায় বলাটা একটু মুশকিল। সে প্রসঙ্গে পরে আসছি।

রাজনীতির কথা বলতে গেলে অবধারিত ভাবে ভোটের কথা আসে। আর ভোট এলেই সামনে আসে পাটিগণিত, সমীকরণ, পরিসংখ্যান। চুলচেরা সমস্ত বিশ্লেষণ। কোন আসনে কত ভোটার, গত নির্বাচনে কতজন প্রার্থী ছিলেন, কে কত ভোট পেয়েছিলেন এই সমস্ত তুল্যমুল্য বিচার সব রাজনৈতিক দলই করে থাকে। এর থেকেই ঠিক করা হয় সম্ভাবনা এবং তখনই ওঠে জোটের প্রশ্ন। এখানে যতটা না রাজনৈতিক মতাদর্শ জড়িত থাকে তার থেকে অনেক বেশি থাকে নির্বাচনে জয় পরাজয়ের অঙ্ক, সম্ভাবনা। সেদিক থেকে বিচার করতে গেলে নির্বাচন কেন্দ্রিক জোট নির্বাচনী লড়াইয়ের কৌশল ছাড়া আর কিছুই নয়। আর কে না জানে যুদ্ধ এবং প্রেমে কোনো পথ অবলম্বনই নাকি অন্যায় নয়।

ন্যায় নীতির বিতর্কে না ঢোকাই শ্রেয়। শ্রেয় এই কারণেই তাতে সরল বিষয় জটিল হবে, বিভ্রান্তি বাড়বে। কারণ যে বাম কংগ্রেস জোট এখানে আলোচ্য তা শুধুমাত্রই এক নির্বাচনী সমঝোতা। আরও সহজ করে বললে আসন সমঝোতা। মতাদর্শের সমঝোতা নয়। বিষয়টা এরকম নয় যে কংগ্রেস বামফ্রন্টে যোগ দিয়ে নির্বাচনে লড়াই করছে। বরং বিষয়টা অনেক বেশি সরল পাটিগণিত, পরিসংখ্যান এবং বাস্তব ভিত্তিক। এর সঙ্গে যুক্ত আছে অতীতের নির্বাচনী ফলাফল, ভোট শতাংশের হার প্রভৃতি। বামফ্রন্ট এবং বাম-কংগ্রেস নির্বাচনী আসন সমঝোতা এক করে ফেললে মুশকিল দু’তরফেই। যেখানে ছুঁতমার্গ নিয়ে চললে বিপদ বাড়বে। কমবে না। লড়াইয়ের নীতি এবং লড়াইয়ের কৌশল ঘিরে বিভ্রান্তি না থাকাই ভালো। অবশ্য এই কথাগুলো লিখে ফেলা যতটা সহজ বোঝানো ততটা সহজ নয়। কারণ মতাদর্শ আঁকড়ে যারা রাজনীতি করেন তাঁদের বিষয়টা আলাদা। তাঁদের কাছে দলীয় শৃঙ্খলাই শেষ কথা। আর এই বৃত্তের বাইরে যারা থাকেন তাঁদের যে কোনো রাজনৈতিক দলকে সমর্থনের পেছনে কাজ করে আবেগ, ব্যক্তিগত কিছু চাওয়া পাওয়া, হতাশা, আক্রোশ, রাগ ইত্যাদি। হঠাৎ করে চরম বিরোধী দুই রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী আসন সমঝোতা বা জোটের কথা শুনলে সেই আবেগে আঘাত লাগা খুব একটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। কোনো এক পক্ষ নয়। দুই পক্ষেই এই ধরণের কিছু মানুষ ছিলেন, আছেন, থাকবেন। আবেগ এবং বাস্তবের সংঘাত থাকবেই। দ্বন্দ্বও থাকবে। আমি রাজনৈতিক পণ্ডিত, তাত্ত্বিক - কোনোটাই নই। গুরুগম্ভীর কথা বা জটিল বিষয় এড়িয়ে যেতেই পছন্দ করি। তবু এক্ষেত্রে যখন প্রবল জটিল একটা বিষয়ে ঢুকে পড়েছি তখন নাহয় আলোচনা চালিয়েই যাই।

একটু আগেই সরল পাটিগণিতের কথা বলেছিলাম। যদিও রাজনীতিতে সবসময়েই যে সরল পাটিগণিত কাজ করবেই এমনটা নয়। তার ভুরি ভুরি প্রমাণ আছে। যেমন বিগত লোকসভা নির্বাচনে দিল্লিতে সব আসনে বিজেপি জয়ী হলেও বিধানসভা নির্বাচনে পরাজিত হয়েছে। আবার বিগত বিধানসভা নির্বাচনে রাজস্থানে কংগ্রেস জয়ী হলেও তার কয়েক মাস পরের লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যের ২৫ আসনের মধ্যে কংগ্রেসের ঝুলিতে কোনো আসন নেই। অথচ রাজস্থান বিধানসভায় কংগ্রেসের আসন ১০৪। একইভাবে মধ্যপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস জয়ী হলেও লোকসভা নির্বাচনে ২৯ আসনের মধ্যে কংগ্রেস জয়ী হয় ১টি আসনে। অর্থাৎ এটা স্পষ্ট যে লোকসভা এবং বিধানসভা নির্বাচনের গতিপ্রকৃতি সবসময় একইরকম হয়না। ঠিক সেভাবেই লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি ১৮ আসন পেয়েছে বলেই যে বিধানসভায় ক্ষমতার কাছাকাছি পৌঁছে যাবে বিষয়টা এমন নয়। বিজেপি রাজ্যে ক্ষমতায় এসেই গেছে এমন একটা হাওয়া তুলে দেবার চেষ্টা হলেও অঙ্ক কিছুটা জটিল। এই জটিলতার কথা বিজেপি একদম জানেনা তাও নয়। বরং জানে বলেই নির্বাচন পরবর্তী কেনাকাটার ওপর পুরোপুরি ভরসা না রেখে আগেভাগেই বাজার করতে নেমে পড়া। ভোটের আগেই যতটা সম্ভব ঘর গুছিয়ে নেবার চেষ্টা। তবে এই অঙ্কও পুরোপুরি মিলবে কিনা তা সময় বলবে। বিশেষত লকডাউনের সময় বিজেপির একাধিক জনবিরোধী পদক্ষেপ, অভিবাসী শ্রমিকদের দুর্দশা, শ্রম আইন লঘুকরণের চেষ্টা, সাম্প্রতিক কেন্দ্রীয় বাজেট, কৃষি আইন বাতিলের দাবীতে দীর্ঘ আড়াই মাসের বেশি সময় ধরে চলা অনড় আন্দোলনে এই মুহূর্তে বিজেপি কিছুটা হলেও ব্যাকফুটে। সাম্প্রতিক দু-দুটো দেশব্যাপী ধর্মঘটে সেকথা অনেকটাই স্পষ্ট হয়েছে। তাই এবারের রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল বিজেপির কাছে খুব একটা স্বস্তিদায়ক নাও হতে পারে।

রাজ্যে ২০১১ বিধানসভা নির্বাচনে ১৮৪ আসন পাওয়া তৃণমূল কংগ্রেস পেয়েছিলো ৩৮.৯৩ শতাংশ ভোট। ৩০.০৮ শতাংশ ভোট পেয়ে সিপিআই(এম) জয়ী হয়েছিলো ৪০ আসনে। ৯.০৯ শতাংশ ভোট পেয়ে কংগ্রেস জিতেছিলো ৪২ আসনে। ৪.৮০ শতাংশ ভোট পেয়ে ফরওয়ার্ড ব্লকের ১১ আসন, ২.৯৬ শতাংশ ভোট পেয়ে আরএসপি-র ৭ আসন এবং ১.৮৪ শতাংশ ভোট পেয়ে সিপিআই-এর ২ আসন। এছাড়াও বামেদের পক্ষে সমাজবাদী পার্টি ও ডিএসপি জয়ী হয়েছিলো ১টি করে আসনে। বিজেপি ৪.০৬ শতাংশ ভোট পেলেও কোনো আসনে জয়ী হয়নি।

২০১৬ বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল এককভাবে লড়াই করে। আসন সমঝোতা হয় বাম কংগ্রেসের। সেবার তৃণমূল কংগ্রেস ভোট পায় ৪৪.৯১ শতাংশ। জয়ী হয় ২১১ আসনে। ১৯.৭৫ শতাংশ ভোট পেয়ে সিপিআই(এম) জয়ী হয় ২৬ আসনে। ১২.২৫ শতাংশ ভোট পেয়ে কংগ্রেস জয়ী হয় ৪৪ আসনে। বিজেপি ১০.১৬ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হয় ৩টি আসনে। ২.৮২ শতাংশ, ১.৬৭ শতাংশ এবং ১.৪৫ শতাংশ ভোট পেয়ে ফরওয়ার্ড ব্লক, আরএসপি এবং সিপিআই জয়ী হয় ২, ৩ ও ১ আসনে।

২০১৪ লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল ভোট পায় ৩৯.০৫ শতাংশ। বামেরা পায় ২৯.৯ শতাংশ ভোট। বিজেপি ১৭.০২ এবং কংগ্রেস ৯.৫৮ শতাংশ। আসন যথাক্রমে ৩৪, ২, ২, ৪। ২০১৯ এ তৃণমূল ভোট পায় ৪৩.৩ শতাংশ। বিজেপি ৪০.৭ শতাংশ। সিপিআই(এম) ৬.৩৩ (বাম ৭.৫%) এবং কংগ্রেস ৫.৬৭ শতাংশ। আসন যথাক্রমে ২২, ১৮, ২, ০।

এই পরিসংখ্যানগুলো সকলেরই জানা। তবু বলা। কারণ ২০১১ বিধানসভা নির্বাচনে ৪ শতাংশ ভোট পাওয়া বিজেপি ২০১৪ নির্বাচনে ১৭ শতাংশ ভোট পায়। আবার ২০১৬ বিধানসভা নির্বাচনে ভোট কমে হয় ১০ শতাংশ। ২০১৯-এ বেড়ে হয় ৪০ শতাংশ। কাজেই ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনেও যে বিজেপি লোকসভার প্রাপ্ত ভোট ধরে রাখতে পারবেই এর কোনো নিশ্চয়তা নেই। তৃণমূল গত কয়েকটি নির্বাচনে ভোট শতাংশ যে জায়গায় নিয়ে গেছে তা নিয়ে অনেক বিতর্ক আছে এবং এবার এই শতাংশ ধরে রাখা মুশকিল। এর পাশাপাশি বাম এবং কংগ্রেসের ভোট শতাংশ এবার বাড়ার সম্ভাবনা প্রবল।

এতকিছু লিখে ফেলার পর মনে হতেই পারে ভোট শতাংশের সামান্য হেরফেরে এমন কী ঘটতে পারে যে যার জন্য আসন সমঝোতা করতে হবে বাম কংগ্রেসকে। সিপিআই(এম)-এর ২২তম পার্টি কংগ্রেসে যে রাজনৈতিক লাইনের কথা বলা হয়েছিলো তাতে বলা হয় - ‘সরকারের ভেতরে ও বাইরে হিন্দুত্ববাদী শক্তির গুরুতর চ্যালেঞ্জের মুখে সমস্ত ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক শক্তির ব্যাপকতম সমাবেশের লক্ষ্যে মঞ্চ তৈরি করা জরুরি’। ভারতের বর্তমান পরিস্থিতি অনুসারে জরুরি প্রয়োজন বিজেপির মোকাবিলা, বিজেপির সাম্প্রদায়িক সর্বগ্রাসী মেরুকরণের রাজনীতির মোকাবিলা। বামেদের কাছেও মূল গুরুত্বের বিষয় সেটাই। যে কথা সাম্প্রতিক সময়ে বারবার স্পষ্ট করেছেন সিপিআই(এম) সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। তাঁর মতে, দেশে বিজেপিকে বড়ো ধাক্কা দিতে হলে বাঙলায় বিজেপিকে আটকানো জরুরি। বিজেপি-আরএসএস-এর সঙ্গে কারোর তুলনা করা ঠিক হবে না। আর এই রাজ্যে বিজেপিকে কারা হাত ধরে নিয়ে এসেছিলো, কীভাবে বিজেপিকে জমি তৈরি করে দেওয়া হয়েছে তা সকলেরই জানা। এখনও রাজ্য এবং কেন্দ্রের নীতির মধ্যে কোনো ফারাক নেই। তাই শুধু বিজেপি নয়, এই রাজ্যে লড়াই তৃণমূলেরও বিরুদ্ধে। বিরোধীরা ঠিক মত একজোট হতে না পারলে বিজেপি-তৃণমূলকে হারানো যাবে না।

লড়াই বিজেপির বিরুদ্ধে। লড়াই তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এই দুই পারস্পরিক সহকারী শক্তিকে আটকানোর লক্ষেই এই আসন সমঝোতা বা জোট গুরুত্বপূর্ণ। রাজনৈতিক রণকৌশলের অংশমাত্র। আসন্ন নির্বাচনে বিরোধী ভোট ভাগাভাগি করে তৃণমূল বিজেপিকে সুবিধা না পেতে দেওয়া। সমস্ত বিরোধী গণতান্ত্রিক জোটের ভোটকে এক করে এই শক্তির বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের সংগ্রামকে আরও জোরদার করাই এই মুহূর্তে সবথেকে বেশি প্রাসঙ্গিক।