আরেক রকম ● নবম বর্ষ একবিংশ সংখ্যা ● ১-১৫ নভেম্বর, ২০২১ ● ১৬-৩০ কার্ত্তিক, ১৪২৮

প্রবন্ধ

‘তোমায় আমি পাইনি যেন...’

প্রবুদ্ধ বাগচী


রবীন্দ্রনাথ গীতাঞ্জলির ৩৯ নম্বর গানে জানিয়েছিলেন তাঁর এক অতৃপ্তির কথা। আমাদের মনে পড়ে সেখানে তিনি লিখছেনঃ “হেথা যে গান গাইতে আসা আমার / হয়নি সে গান গাওয়া- / আজো কেবলি সুর সাধা আমার / কেবল গাইতে চাওয়া”। কবিতার বিচারে পাশাপাশি দুটো লাইনে ‘কেবল’ শব্দের ব্যবহার খুব সংগত না হওয়া সত্ত্বেও এই গানের মধ্যে আছে এক সুতীব্র অতৃপ্তি ও না-পারার আকুলতা। সেই আবেদন এতটাই গহন যে শব্দ প্রয়োগের ওই শিথিলতা তাকে আড়াল করে দাঁড়ায়। যে গান তিনি গাইতে চাইছেন তা কিছুতেই তাঁর আয়ত্তে থাকছে না আর, সুর সরে যাচ্ছে তার প্রার্থিত মাত্রা থেকে। এই গানের একদম পরিণতিতে কবি লিখছেনঃ “আছি পাবার আশা নিয়ে / তারে হয়নি আমার পাওয়া”। অর্থাৎ, গোটা গান জুড়ে যে না-পাওয়ার বেদনা উচ্চারিত হল তা একরকম ভাবে শমিত হয়ে আসে তাঁর শেষের কথায়। এই ভাষ্যকে আমরা কে কীভাবে দেখতে চাইব সেটা একেবারেই একটি ব্যক্তিনির্ভর প্রতিবেদন। একটি বিশেষ গান গাইতে চাওয়া মানে কারোর উদ্দেশে তা নিবেদনের আততি হিসেবে আমরা ধরতেই পারি, আর সেই না-পারাটুকু দিনের শেষে হয়ে উঠতেই পারে ভিন্ন কোনো আশার ভরকেন্দ্র। তাকে আমার পাওয়া হল না কিন্তু ভরসা রইল আমি তাকে পাব, আর যেদিন পাব সেদিন সেই গানটিও উজাড় করে দেব তাকে। যে গান নিয়ে আমরা এতক্ষণ কথা বলছি, সেই গানে এমন লাইনও আছে, ‘আমি দেখি নাই তার মুখ, আমি / শুনি নাই তার বাণী / কেবল শুনি ক্ষণে ক্ষণে তাহার / পায়ের ধ্বনিখানি’ - অর্থাৎ কি না ‘সে’ বা ‘তিনি’ যে আমার কাছেই আছেন তার একটা ইশারা পাওয়া যাচ্ছে। হয়তো সেই অনুভবের ভিতর দিয়েই ক্রমশ আদল পায় তাকে ‘পাবার আশা’।

এখন এই গান বা কবিতায় এইসব তিনি বা সে-কে কেমন ভাবে ব্যাখ্যা করা যাবে সেটা কোনও সমস্যা নয়। শঙ্খ ঘোষ লিখেছিলেন, রবীন্দ্রনাথের পূজা পর্যায়ের গান উপভোগ করতে গেলে শ্রোতার বা পাঠকের বাধ্যত ভক্ত না হলেও চলে। বরং এইটাই সেই গানের জোর। একটি শ্যামাসঙ্গীত শুনতে গেলে মনের ভিতর এক মৃন্ময়ী শ্যামামূর্তি নির্মাণ এবং তাতে গভীর বিশ্বাস জ্ঞাপন প্রয়োজন, বিপরীতপক্ষে একজন মুক্তমনা নিরীশ্বর হয়েও নিঃশর্ত রসগ্রহণ সম্ভব হয় রবীন্দ্রনাথের অধিকাংশ গানে। তাই ‘গীতাঞ্জলি’ পর্বের লেখাগুলিকে সাধারণভাবে ভক্ত ও ঈশ্বরের কথোপকথন হিসেবে বিবেচনা করা হলেও সকলকেই যে তাতে সমর্থনের হাত বাড়াতে হবে তার কোনও মানে নেই। তবে খেয়াল করা দরকার এইসব লেখায় অস্তি বা পজিটিভ ভাবনার একটা প্রবল ছায়াপাত আছে। তাই কাউকে না পাওয়া কবির কাছে ট্র্যাজেডি নয়, বরং তারই মন্থনে উঠে আসা এক অনন্ত আশা - ‘রয়েছ তুমি, একথা কবে / জীবন মাঝে সহজ হবে’। এই তিনিই বলবেন, ‘প্রভু, তোমা লাগি আঁখি জাগে / দেখা নাই পাই / পথ চাই / সেও মনে ভাল লাগে’। কিন্তু দেখা না-পেয়েও ভাল লাগার নিশ্চিন্তি, এইই কি সব? তার মানে কি কোথাও কোনো ট্র্যাজেডি নেই?

আর এই পাওয়া না-পাওয়ার হিসেব মেলাতে গেলে আমাদের মনে পড়ে অন্য এক গানের কথা, যে গানের মর্মবাণীকে ঠিক প্রথাগত অস্তিবাদের কাঠামোয় আর ধরা যায় না। কাউকে যে গান শোনাতে চাইলাম বা যেভাবে তাকে পেতে চাইলাম সেই না-পাওয়া নেতির মধ্যে দিয়ে সব সময় ইতি-কেই স্পর্শ করতে হবে এমন সমীকরণ সব সময় সত্যি না হওয়াই তো ভাল। ইতি আর নেতির ভারসাম্য তাতে বিঘ্নিত হয়, ব্যাহত হয় বৈচিত্র। প্রয়াত অশোক মিত্র অনেকদিন আগে তাঁর একটি লেখায় বলেছিলেন ‘পেশাদার আশাবাদের’ (প্রফেশনাল অপ্টিমিজম) কথা, যা তাঁর মতে পরিত্যাজ্য বলেই মনে হয়েছিল। তার থেকে ‘ভালমন্দ যাহাই আসুক সত্যেরে লও সহজে’ এই মানসিকতা অনেক বেশি অবাধ। তাই পরম বিশ্বাসের পাশে থাকুক চরম ট্র্যাজেডি। ভরসার গায়ে গায়ে বেজে উঠুক বেদনাও। আমাদের এই গানে আছে সেই বেদনা।

গান গাওয়া নয় এই লেখা বলছে গান মনে আসার কথা। আসলে যা হয়তো একটা সৃজন মুহূর্তের ধারাভাষ্য। অবশ্যই শুধু ধারাভাষ্য নয়, আরও কিছু। আরও কিছু চলাচল, দৃশ্য থেকে দৃশ্যান্তরের পটবদল। একবার পড়ে নেওয়া যাক ১৯১৫ সালে রচিত পুরো গানটি।

কাল রাতেরবেলাগান এলো মোর মনে,
তখন তুমি ছিলে না মোর সনে ॥

যে কথাটি বলব তোমায় ব’লে
কাটল জীবন নীরব চোখের জলে

সেই কথাটি সুরের হোমানলে
উঠল জ্বলে একটি আঁধার ক্ষণে-

তখন তুমি ছিলেনা মোর সনে ॥
ভেবেছিলেম আজকে সকাল হলে
সেই কথাটি তোমায় যাব বলে।

ফুলের উদাস সুবাস বেড়ায় ঘুরে,
পাখির গানে আকাশ গেল পূরে,

সেই কথাটি লাগল না সেই সুরে
যতই প্রয়াস করি পরানপণে-
যখন তুমি আছ আমার সনে ॥

পাশ্চাত্যের এক কবি বলেছিলেন কবিতার প্রথম লাইনটি আসে ঈশ্বরের হাত থেকে। আমাদের প্রিয় কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ও মনে মনে তাই বিশ্বাস করতেন। কবিতার বদলে বিষয়টি গান ভাবলেও সেই গান তৈরির তীব্র মুহূর্তের কথা রবীন্দ্রনাথ কিছু কিছু বলে গেছেন। কখনো উল্লেখ করেছেন ‘নাবার ঘরে একটু একটু করে’ গান তৈরির কথা, কখনো প্রবল ঝঞ্ঝার মধ্যে হঠাৎ জেগে ওঠা একটি লাইন, আবার জ্যোৎস্না প্লাবিত উন্মুক্ত ছাদে বসে তাঁর মধ্যে ঘনিয়ে উঠেছে গান। একইভাবে যতীন দাসের অনশন মৃত্যু তাঁকে দিয়ে লিখিয়ে নিয়েছে বজ্রকঠিন ব্রতপালনের গান। তবে এই বিশেষ গানের ইতিকথা আমাদের জানা নেই, আর তা না জানলেও কোনো ক্ষতি নেই। গোটা গানটাই তো কতগুলো গানের মুহূর্তের সমাকলন, যার পেছনে খেলা করে যাচ্ছে পরিবেশের আলোছায়া।

এই লেখার স্থায়ী পর্বটি একদিক দিয়ে খুব সরল, যেন একটা স্টেটমেন্ট। কাল রাতের বেলা আমার মনে গান এল কিন্তু তুমি তখন আমার কাছে ছিলে না। যেন এই না-থাকাটা কেবল একটা ঘটনামাত্র যার আলাদা কোনো তাৎপর্য নেই। কিন্তু গানের অন্তরা পর্বে ঘটে গেল অনেকগুলো ঘটনা। গান আর কথা এই দুটো শব্দ একেবারে আলাদা বিভাজিত সত্ত্বা নিয়ে উঠে এল এইবার। আসলে এই গান কিন্তু আর মামুলি নির্বিশেষ একটা গান রইল না আর। এটা সেই গান, যার মধ্যে আছে সেইসব কথা, যে কথা আরও কাউকে বলতে চাওয়া হয়েছে সুদীর্ঘকাল ধরে এবং সেই চাওয়া প্রবাহিত হয়েছে অশ্রুভরা বেদনায়। সেই না-বলা বাণী যখন অকস্মাৎ আশ্রয় পেল নিশীথের কোনো এক অব্যর্থ সুরে সেই চরম আনন্দ আর তৃপ্তিময় মুহূর্ত পরক্ষণেই অবশ হয়ে এল এই কারণে যে, এই গান যার শোনার বা যাকে শোনানোর কথা ছিল সে তো এই অন্ধকারের সঙ্গী নয়। অবশ্য এখানে সম্পূর্ণ অন্ধকার কথাটা প্রয়োগ করা যাবে কি না সেটা ভেবে দেখবার। কারণ ‘আঁধার ক্ষণে’ কিন্তু জ্বলে উঠেছে ‘সুরের হোমানল’ - সুরকে আগুন হিসেবে দেখবার কথা আছে তাঁর অন্য গানেও - ‘তুমি যে সুরের আগুন লাগিয়ে দিলে মোর প্রাণে’। আর আগুন মানে তো কিছুটা হলেও আলোকের উদ্বোধন। তার মানে ঘন আঁধার নয়, পরিব্যাপ্ত নিশীথ-বলয়ে সুরের অগ্নি-স্বাক্ষরে জেগে ওঠা কথার সূচিমুখ বার্তা। কিন্তু হায়, সেই বার্তা আসলে যার কাছে সঞ্চারিত হতে চায় তিনিই হাজির নেই সেই পরিসরে! এই অনুপস্থিতি নিজেই যেন এক বেদনাভরা অন্ধকার, ক্ষণিক আগুনের স্ফূর্তি যাকে প্রশমিত করতে পারেনি কোথাও। হয়তো পাশেপাশে মনে ভাসতে পারে ‘যতবার আলো জ্বালাতে চাই / নিভে যায় বারেবারে’র অনুষঙ্গ। আলো অন্ধকার ঘিরে এইভাবেই এই গানে আদল পেতে থাকে এক ট্র্যাজেডি।

আর অন্য সব রবীন্দ্রগানের মতোই এই গানের সঞ্চারীও সেই ট্রাজেডির নির্মাণে প্রণত হয়ে থাকে গানের শরীরে। কী বলে সে? সেটা দেখে নেওয়ার আগে একবার বুঝে নিতে হবে এই গানের কালিক অবস্থান। স্থায়ী ও অন্তরা আসলে কথা বলেছে অতীতে, তার সবটাই ‘কাল রাতের বেলা’র ভাষ্য। আর সঞ্চারীতে এসে গান দাঁড়িয়ে থাকে বর্তমানে - ‘আজকে’র সকালে। গানের বর্ণিত এই সকাল প্রথমেই নিয়ে আসে স্পষ্ট এক আশ্বাস - 'ভেবেছিলেম আজকে সকাল হলে / সেই কথাটি তোমায় যাব বলে।’ গতরাতের অন্ধকারে যে উপস্থিতির অভাবে পৌঁছে দেওয়া হয়নি সেই উচ্চারণ যার জন্য অনেকদিন জুড়ে ছিল চোখের জলের নীরব প্রতীক্ষা, আজ বোধহয় এসে পৌছালো সেই শুভক্ষণ। অন্তরা যেখানে শেষ হয়েছিল সেখানে ভরা ছিল বিক্ষত ট্রাজেডির শূন্য প্রান্তর, আজকের সকাল যেন তারই বিপ্রতীপ একটা পূর্ণতার ইশারা বহন করে আনতে চায়। এই আশ্বাসের কিছু সংগত কারণও তো খুঁজে পাচ্ছি গানের আভোগে। কারণ সেখানে বলা হচ্ছে ফুলের সুগন্ধ বাতাসে ভেসে বেড়ানোর কথা, জানানো হচ্ছে আকাশ ভরে-ওঠা পাখির কাকলির সংবাদ। যেন চারপাশ ভরে উঠেছে একরকম ভাবে আনন্দিত আর উচ্ছল প্রস্তুতিতে। আর তার কারণ তো এই যে সেই প্রার্থিত সত্ত্বা স্বয়ং এসে দাঁড়িয়েছে আজ এই মাহেন্দ্রক্ষণে, যার আসঙ্গ লিপ্সায় গান এসে দাঁড়িয়েছিল বিগত রাতের অন্ধকারে, যার প্রত্যাশায় নিবিড় আঁধারে জ্বলে উঠেছিল সুরের দীপ্তি। কিন্তু... হ্যাঁ এইখান থেকেই সমগ্র গানটি ঝাঁপ দিয়ে পড়ে অন্য এক কিনারায়। দীর্ঘ অপেক্ষার শেষে যার জন্য কথা দিয়ে গান গেয়ে উঠতে চাওয়া, যে তুঙ্গ মুহূর্তের জন্য ফুল-পাখি-প্রকৃতি বিছিয়ে ধরেছে তার উপাচার আর সেই মানব বা মানবী নিজে এসে দাঁড়িয়েছেন সেই আঙিনায় - ঠিক সেইখানে সেই অমোঘ কথা হারিয়ে ফেলল তার লগ্ন হয়ে থাকা সুর ! যিনি সেই গানে গানে রচনা করতে চান অনুভবের সেতু তিনি প্রাণপণ চেষ্টা করছেন অথচ সেই কথা ক্রমশ সরে যাচ্ছে সেই সুরের আশ্রয় থেকে, সুরে আর ধরা যাচ্ছে না সেই কথাকে। তৈরি হয়ে চলেছে এক অনিবার্য ব্যবধান। কী বলতে চাই আমি? কাকে কেমন করে বলতে চাই? ‘যখন তুমি আছ আমার সনে’ অথচ সেই তোমাকেই বলে উঠতে পারা যাচ্ছে না আমার কথা! কী অসহায় এক আর্তি! যে গান গাইতে চেয়েছিলাম অথচ গাইতে পারিনি, শুধু সুর সেধে গেছি - সেটা একটা অন্য যন্ত্রণা। আর এখানে সম্পূর্ণ এক ভিন্ন বাস্তবতায় এসে দাড়িয়েছে এই গান। একে কি একেবারে নতুন ধরনের এক ট্র্যাজেডি বলতে আমাদের আড়ষ্ট লাগবে?

একটু যদি খুঁটিয়ে ভাবি, অন্তরায় এসে যে বিপর্যয় আমাদের আশঙ্কিত করেছিল খানিক আগেই, সঞ্চারীতে এসে যেন সেই অন্ধকারের বিপরীতে দেখা গেল চিলতে আলোর রেখা। আভোগের প্রথম লাইন সেই আলোকেই আরও প্রোৎসাহিত করে ছড়িয়ে দিল আশ্বাসের ভোর। গত যামিনীর কৃষ্ণগহ্বর থেকে ক্ষণিক আলোর রেখা যেন আবছায়া এক আল্পনা বুনে দিয়ে যায় আমাদের মনে। আর ঠিক তখনই আবার ফিনকি দিয়ে উঠে আসে আর্তনাদঃ সেই কথাটি লাগল না সেই সুরে যতই প্রয়াস করি পরানপণে। আমরা কি সত্যিই প্রস্তুত ছিলাম এই পরিণতির জন্য?

আসলে এই গান এখানেই থেমে যায় এক স্তব্ধতা আর বিস্ময়ের সামনে। বিস্ময়, কারণ গতরাতের অন্ধকারে কথা ঠিক ঠিক বেজে উঠেছিল সুরে অথচ সেই সুরের উদ্দিষ্ট সেখানে গরহাজির, আর আজ সকালে যখন সেই উদ্দিষ্ট নিজেই এসে উপস্থিত হয়েছেন পাখির গানে ভরা সুবাসিত আকাশের নীচে ঠিক তখনই থেমে যাচ্ছে সুর, সরে যাচ্ছে কথা! এই ঘনঘোর অব্যক্ত বেদনার সামনে কি আর আমরা কোনো কথা সাজিয়ে তুলতে পারি? তাই স্তব্ধতা। এই পাওয়া আর না-পাওয়ার বুননকে কিন্তু এবার আর কোনো আশাবাদের বেড়া দিয়ে ঘিরে রাখা অসম্ভব। একদিকে সুরের অব্যর্থ সংযোগে কথাকে জাগিয়ে তোলা অথচ জাগার সাথীকে কাছে না পাওয়ার ট্র্যাজেডি, অন্যদিকে সাথীকে পেলেও প্রাণপণে চেষ্টা করে সুরের নাগাল না পাওয়া ও তার কাছে নিজের মনের কথা পৌঁছে দিতে না পারার ট্র্যাজেডি - এক দিগন্ত থেকে অন্য দিগন্ত অবধি এই বিপুল বেদনার বিস্তার নিয়ে অন্ধকার ক্যানভাস হয়ে বেজে চলে এই গান। আর তা কি কোথাও ছুঁয়ে থাকে না আমাদের জীবনেরও নানা আনাচ কানাচ?