আরেক রকম ● নবম বর্ষ একাদশ সংখ্যা ● ১-১৫ জুন, ২০২১ ● ১৬-৩১ জ্যৈষ্ঠ, ১৪২৮

প্রবন্ধ

বাংলা সনেট

শুভ্রা বসু


মহাকাব্য ও সনেট - সাহিত্যের দুই বিপরীত মুখী রূপ। একটি বিশাল - অপরটি ক্ষুদ্র - যেন সমুদ্র ও শিশির। একটির মধ্যে নিহিত বিচিত্র সম্পদ - কাহিনি, ঘটনা, চরিত্র প্রভৃতি সহস্র ধারার সেখানে সম্মিলন। কিন্তু আর একটি সীমিত গণ্ডির মধ্যে আবদ্ধ-সন্ধ্যাতারার মত মিটিমিটি জ্বলছে। সেই ছোট্ট সম্পদ নিয়েই সে পাঠকের মনে গুণ্ গুণ্ করে ফেরে। মনকে আনন্দে ভরপুর করে তোলে। D. G. Rossetti-র ভাষায় বলা যায়, “A Sonnet is a moment’s monument”.

সাহিত্যের এই নিটোল রূপটির জন্মলগ্ন আজ কুয়াসাচ্ছন্ন। তবে খুব সম্ভব ১২২০ খৃষ্টাব্দের কাছাকাছি কোনো সময়ে ইতালীতে এর জন্ম হয়। সনেট শব্দটিও এসেছে ইতালীয় ‘Sonnetta’ থেকে। Sonnetta শব্দের মানে হল একটি স্বর। মধ্যযুগে ইতালীতে ক্রবাদুর নামে এক ধরনের কবি তিন চার স্তবকের গান গেয়ে বেড়াতেন। তাঁরা এগুলিকে সোনেটা বলে অভিহিত করতেন। সেই থেকেই সনেটের জন্ম হয়।

কেউ কেউ বলেন Pier-delle-Vigue-এর প্রথম রচয়িতা, কেউ বা বলেন Fra Gurittone। এরপর Dante ও সনেট রচনা করেন। কিন্তু পেত্রার্কার সনেটকেই সবাই আদর্শ বলে মেনে নিয়েছে। সনেট গীতিকবি তারই আর একটি রূপ। চোদ্দ লাইনের মধ্যে কবি তাঁর মনের ভাব ব্যক্ত করেন। চোদ্দ লাইনের এই ছোট্ট কবিতায় দুটি ভাবগত ও মিলগত ভাগ থাকে। প্রথমটি আট লাইনের তাকে বলা হয় Octave বা অষ্টক এবং পরেরটি ছয় লাইনের যাকে বলা হয় Sestet বা ষষ্টক। সমুদ্র তরঙ্গের মত ভাবের তরঙ্গ অষ্টকে উচ্ছলিত হয়ে বেলাভূমিতে এসে ক্ষণমাত্র ভেঙ্গে পড়ে কিন্তু আবার বিপরীত আবর্তনে ষষ্টকে অবসান প্রাপ্ত হয়। অষ্টকের প্রথম চার পংক্তির পর সামান্য ভাবযতি থাকে আট পংক্তি শেষে তাই স্পষ্টতর হয়। এই আট পংক্তিতে দুটি পংক্তি মিল থাকে সেই মিল বিন্যাসে কিছু স্বাধীনতা থাকলেও প্রথম, চতুর্থ, পঞ্চম, অষ্টম পংক্তিতে একটি মিল এবং দ্বিতীয় তৃতীয়, ষষ্ঠ ও সপ্তম পংক্তিতে আর একটি মিলবিন্যাসই সুপ্রচলিত রীতি। অষ্টক যেমন অনতিস্পষ্ট দুটি চতুষ্পংক্তিক শ্লোকে ভাগ হয় ষষ্টক তেমনি দুটি ত্রিপংক্তিক শ্লোকে দুই বা তিনটি মিলে বিন্যস্ত হয়। এখানে অষ্টকের মাত্র দুটি মিল এবং ষষ্টকের দুটি মিল একটি সুস্পষ্ট ক্রমবিন্যাসে আবর্তিত হবার ফলে ছন্দধ্বনিগত এবং ভাবগত বন্ধন মুক্তির একটি পরিপূর্ণতা লক্ষ্য করা যায়। Theodore Watts Dunton পেত্রার্কীয় সনেট সম্বন্ধে বলেছেন -
“A sonnet is a wave of melody
From heaving waters of the impassioned soul
A billow of tidal music one and whole
Flows in the ‘Octave’; then returning free,
Its ebbing surges in the ‘Sestet’ roll
Back to the deeps of Life’s tumultuous sea.”

পেত্রার্কা সনেটে প্রেমই প্রধান বিষয়বস্তু। প্রেমের বেদনায় তা ভরপুর। ধর্মযাজক পেত্রার্কা লরা নামে এক বিবাহিতা তরুণীকে ভালবাসেন। সেই সুতীব্র প্রেমের বেদনাই জন্ম দিতে থাকে সনেটের।

পরবর্তী যুগের সনেটের ইতিহাসেও প্রেমই হ’ল প্রধান বিষয়বস্তু - এবং শেষ পর্যন্ত প্রেমই এর একমাত্র বিষয় না হলেও খুব গভীর আবেগ, ভাব ও ভাবনাই সনেটের জন্ম দেয়।

ষোড়শ শতাব্দীতে Wyatt এবং Surrey পেত্রার্কার সনেটের আদর্শে ইংরাজিতে সনেট লিখতে আরম্ভ করেন। কিন্তু সেক্সপীয়রের লেখনীই সনেটকে প্রসিদ্ধ করে তুলল। সেক্সপীয়র সনেটে প্রথম তিনটি চৌপংক্তিক শ্লোকে কল্পনা পক্ষবিস্তার করে এবং শেষ দুটি মিত্রাক্ষর পংক্তিতে তা দানা গুটিয়ে নেমে আসে। সেক্সপীয়র সনেটের বৈশিষ্ট হল তাতে তিনটি চৌপদী থাকে এবং শেষে মিলযুক্ত একটি দ্বিপদী থাকে।

বাংলা সাহিত্যে মাইকেল মধুসূদন দত্তই সর্বপ্রথম ইউরোপীয় সনেটকে নিয়ে আসেন। মহাকাব্যের কোলাহল মুখরিত রণোন্মাদনেরপাশে তিনি আপন নিভৃত মনের গান গাইলেন। মধুসূদন হৃদয়ের উদ্বেল উচ্ছ্বাসকে ঘনীভূত করে ছোট এই ছাঁচের মধ্যে ঢেলে দিতেন। এইজন্য তিনি বাংলা সনেটের জন্মদাতা হলেও সার্থক হয়েছিলেন।

ইউরোপীয় সাহিত্যের প্রতি মধুসূদনের বরাবরই গভীর অনুরাগ ছিল। পেত্রার্কার সনেটও তাঁকে আকৃষ্ট করে। সাহিত্যের এ রূপটিকে বাংলায় নিয়ে আসবার কথা তিনি ভাবলেন; তিনি বললেন - “I dare say the Sonnet will do wonderfully well in our language.”

মধুসূদন হিন্দু কলেজের ছাত্রজীবনে কতগুলি ইংরেজি সনেট রচনা করেন। এগুলি Iambic দ্বিদল পঞ্চপর্বিক প্রবহমান পংক্তিবন্ধে রচিত। মিলবিন্যাসে শিথিল পেত্রার্কীয়, এবং স্বাধীন রীতি গ্রহণ করেছেন।

১৮৬৫ খৃষ্টাব্দ থেকেই কবি বাংলায় সনেট রচনায় আগ্রহী হন। আগে ‘মাতৃভাষা’ নামে সনেট রচনা করলেও এ সময় থেকেই তিনি এ নিয়ে চর্চা আরম্ভ করেন। এর পরই চতুর্দশপদী কবিতাবলী প্রকাশিত হয়। তিনি পেত্রার্কার আদর্শে সনেট রচনা করেছেন বলে উল্লেখ করেন। কিন্তু আঙ্গিকে পেত্রার্কার সঙ্গে কিছুটা মিল থাকলেও Laura Poems এর প্রেম বিষয়ক কাব্যগুচ্ছের রচনাদর্শ মধুসূদন প্রায় গ্রহণ করেননি। মিলটনের সনেটাদর্শ এবং রোমান্টিক যুগের ইংরেজ কবিদের পেত্রার্কীয় আঙ্গিকের স্বাধীন রচনা রীতি মধুসূদনকে প্রভাবিত করেছিল। মিল্টন পেত্রার্কার    মিলবিন্যাস রীতি অনুসরণ করলেও স্বকীয়তার পরিচয় দিয়েছেন। বিষয়বস্তুর দিক দিয়ে মিল্টন প্রেম বর্ণাদর্শে ত্যাগ করেছে, অষ্টক, ষষ্টক বিভাগ বা দ্বাদশ দ্বিপংক্তিক ভাবের আবর্তনলীলাও অনেক ক্ষেত্রে রক্ষা করেন নি। মধুসূদনের চতুর্দশপদী রচনাতেও অনেক ক্ষেত্রেই এ বিশিষ্ট লক্ষ্য করা যায়। মিল্টন সনেটে Blank Verse ব্যবহার করেছেন মধুসূদনও প্রবহমান পয়ারবন্ধতেই রচনা করেছেন।

মধুসূদনের কাব্যের মূল প্রেরণা হ’ল বাংলাদেশ - তার চলচ্চিত্রে এসে মিশেছে ভারতমাতা এবং বিশ্ব। তাঁর চতুর্দশপদী কবিতাগুলি সম্পর্কে বলা যায় ‘স্বপ্ন দিয়ে তৈরী সে যে স্মৃতি দিয়ে ঘেরা’। তাঁর সনেটগুলিতে আত্মকথা প্রকাশ পেয়েছে। একদিকে ঘরে ফিরে আসার বেদনা অন্যদিকে জীবনের দুঃখ। পেত্রার্কা প্রেমে ব্যর্থ, মধুসূদন ঈপ্সিত যশে ব্যর্থ - তাই উভয়ের সনেটেই শোনা যায় দীর্ঘশ্বাস।

মধুসূদন বাংলা সাহিত্যের যে পথ খুলে দিলেন সে পথ ধরে রামদাস সেন, রাধানাথ রায়, রাজকৃষ্ণ রায় প্রভৃতি অনেকেই অগ্রসর হন কিন্তু সার্থকতা লাভ করতে পারেন নি। দেবেন্দ্র নাথ সেন, অক্ষয়কুমার বড়াল অবশ্য সনেট রচনায় সার্থক হয়েছিলেন। তাঁরা পেত্রার্কাকে অনুসরণ না করে সেক্সপীরীয় সনেটকেই আদর্শ বলে মেনে নিয়েছিলেন।

রবীন্দ্রনাথের আবির্ভাবের ফলেই সাহিত্যের এ শাখাটি আবার প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। সতের বৎসর বয়সে রবীন্দ্রনাথ, দান্তে ও পেত্রার্কা সম্বন্ধে প্রবন্ধ লিখতে গিয়ে তাঁদের সনেট অনুবাদ করেন। তারপর ‘কড়ি ও কোমল এ প্রায় ৫৮টি সনেট রচনা করেন। তাতে বিনুনী মিলের (Interlace rhyme) বহু বৈচিত্র লক্ষ্য করা যায়। বেশীর ভাগ সনেটেরই শেষ দুটি পংক্তিতে এক মিল দিয়েছেন। এটি পেত্রার্কীয় সনেটের রীতি বিরোধী। সেক্সপীয়রের আদর্শেও কবি কিছু সনেট রচনা করেছেন। ফরাসী সনেটে দেখা যায় চার পংক্তির দুটি স্তবকের পর একটি দ্বিপংক্তিক মিলবদ্ধ দিয়ে তারপর আবার চতুষ্পংক্তিক একটি স্তবক রচিত হয়। এই রীতিতেও কবি তিনটি সনেট রচনা করেছেন। পরবর্তীকালে প্রমথ চৌধুরী এ রীতি খুব ব্যবহার করেছেন।

মানসী, সোনার তরী পর্বেও কবি শতাধিক সনেট রচনা করেন, তারমধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য চৈতালী কাব্যগ্রন্থের সনেটগুলি। পূর্ব যুগের তুলনায় এ যুগে কবি পাশ্চাত্য আদর্শ অনেকটা বর্জন করেছেন। চৌদ্দ মাত্রার মাপটুকু রক্ষা করে ‘wave of melody’ সৃষ্টি করতে চেয়েছেন। বহিরঙ্গের প্রায় সব অবয়ব ত্যাগ করেছেন তবু গঠনের দৃঢ়তায় ভাবের স্পন্দমান প্রগাঢ়তায় সনেটের মাধুর্য প্রকাশিত হয়েছে।

নৈবেদ্য রচনার সময় থেকে রবীন্দ্রনাথ আরও স্বাধীনতা নিয়েছেন। সেখানে চৌদ্দ মাত্রায় পংক্তিমাপ রক্ষা করে দ্বিপংক্তিক মিল দিয়ে গিয়েছেন। কোনো কোনো সনেটে ভাগবত আবর্তন উপেক্ষা করেছেন, কোথাও অষ্টক ষটকের স্তবক বিভাগকে ভেঙ্গে দিয়েছেন কোথাও আবার ভাবের আবর্তন দুবারের বেশীও এসেছে। কিন্তু তার জন্য তার রস কোথাও ক্ষুণ্ণ হয়নি।

রবীন্দ্র প্রতিভার ছায়াতলে বসে যে কবি আপন বীণায় নতুন সুরের ঝঙ্কার তুলেছিলেন তাঁদের মধ্যে প্রমথ চৌধুরীর নাম উল্লেখযোগ্য। প্রমথ চৌধুরী নিজে বলেছেন -
‘পেত্রার্কা চরণে ধরি করি ছন্দোবন্ধ
যাঁহার প্রতিভা মর্তে সনেটে সাকার।
একমাত্র তাঁরে গুরু করেছি স্বীকার
গুরু শিষ্যে নাহি কিন্তু সাক্ষাৎ সম্বন্ধ।‘

কিন্তু তিনি অনেক ক্ষেত্রেই পেত্রার্কাকে অনুসরণ করেন নি। অনেক সনেটে পেত্রার্কার অষ্টক ষষ্টকের বিভাগ রক্ষা করা হয় নি। অনেক ক্ষেত্রেই দশম চরণে ভাবতরঙ্গ পূর্ণতা পেয়েছে, প্রায়ই তাঁর সনেটে নবম ও দশম চরণ একটি সম্পূর্ণ মিত্রাক্ষর পয়ারের আকার প্রাপ্ত, অনেক স্থলে সেক্সপীরীয় সনেটের অন্তিম পয়ারেরই অনুরূপ।

প্রমথ চৌধুরী রচিত সনেট পঞ্চাশতের সনেটগুলি প্রায় সবই ফরাসী সনেটের আদর্শে লেখা। প্রথমে দুটি চৌপদী, তারপর একটি দ্বিপদী তারপর আর একটি চৌপদী। ফরাসী এবং ইটালির সনেটে উভয় ক্ষেত্রেই প্রথম অষ্টক সমান। ষষ্টকে একটু প্রভেদ আছে। ফরাসীরা ছয়কে দু ভাগ করেছেন - প্রথমে একটি দ্বিপদী পরে একটি চৌপদী। প্রমথ চৌধুরী ফরাসী রীতিকে গ্রহণ করেছিলেন। কবি মনে করতেন যে সনেট হল sculpture ধর্মী - এর ভেতর উদ্দাম flow নেই, যেটুকু গতি আছে তা সঙ্ঘত, সংযত। তাই সনেট পাঠককে ভাসিয়ে নিয়ে যেতে পারে না। নিজের সনেট সম্পর্কে তিনি মন্তব্য করেছেন - “আমি যে সনেট লিখেছি সে অনেকটা experiment হিসেবে। যদি তা সত্ত্বেও আমার কবিতাগুলি সনেট কবিতা হিসেবে উতরে থাকে তা এই সনেটের বাঁধাবাঁধি নিয়মের গুণে।“

সনেটকার হিসেবে মোহিতলাল মজুমদারও বাংলা সাহিত্যে বিশেষ স্থান দাবি করেন। আঙ্গিকের প্রতি তাঁর আন্তরিক অনুরাগ থাকার ফলেই হয়ত তিনি এ ক্ষেত্রে সার্থক হতে পেরেছিলেন। পেত্রার্কীয় সনেটের অনুরাগী হলেও সেক্সপীরীয় আদর্শেও সনেট রচনা করেছেন।

মোহিতলাল মধুসূদন ও রবীন্দ্রনাথের মত Sonnet sequence বা সনেট পরম্পরা রচনা করেছেন। দ্রৌপদী, বঙ্কিমচন্দ্র, শরৎচন্দ্র প্রভৃতি সনেটের নাম এ প্রসঙ্গে করা যেতে পারে। সাধারণভাবে মোহিতলালের রচনা সম্পর্কে বলা যেতে পারে পেত্রার্কীয় আদর্শে রচিত সনেট একটি শ্রী ও সৌষ্ঠব ফুটিয়ে তলাই তাঁর উদ্দেশ্য ছিল। তাঁর এ উদ্দেশ্য অনেক সময়েই সার্থক হয়েছে।

আধুনিক কবিদের অন্যতম জীবনানন্দ দাশও কিছু সনেট রচনা করেছেন। তাঁর রূপসী বাংলা কাব্যগ্রন্থের সনেটগুলি দীর্ঘতর পংক্তিবদ্ধে রচিত।

এ প্রবন্ধে মাত্র কয়েকজন বাংলার উৎকৃষ্ট সনেট কারের নাম উল্লিখিত হ’ল। কিন্তু এঁরাই একমাত্র সনেট রচনা করেছেন বললে ভুল হবে। গোবিন্দ চন্দ্র দাশ, চিত্তরঞ্জন দাশ, কালিদাস রায়, সুশীলকুমার দে, বুদ্ধদেব বসু প্রভৃতি আরও অনেকেই সনেট রচনা করতে প্রয়াসী হয়েছেন। এঁদের দানকেও অস্বীকার করা যায় না।

সবশেষে এ কথাই বলা যায়, বিদেশ থেকে যে সমস্ত জিনিষ আমরা আমদানি করেছে তাদের মধ্যে এই ক্ষুদ্রকায় কবিতার দামও কম নয়। আকারে ক্ষুদ্র হলেও সাহিত্যের এ শাখাটি বিশেষ আকর্ষণীয়। যে ব্যক্তিগত সুগভীর ও আন্তরিক অনুভূতি ধ্যান ও গীত কল্পনার নিরন্তর প্রাণের মধ্যে অতিশয় নিটোল স্বচ্ছ উজ্জ্বল কাব্য বিন্দুরূপে ফুটে ওঠে তাই সনেটের উপজীব্য। কবির অতিশয় ব্যক্তিগত অনুভূতি, ভাব বেদনা, বাসনা, হর্ষ, সনেট সম্পর্কে বলা যায় - “A poem does not require to be an epic to be great, any more than a man need to be noble.” তাই বাংলার অনেক কবিই একে ভালবেসেছেন -
“ভালবাসি সনেটের কঠিন বন্ধন
শিল্পী যাহে মুক্তি লভ, অপরে ক্রন্দন।“

তাই তাঁরা বলতে পেরেছেন -
“আজ তাই ছাড়ি যত ধ্রুপদ ধামার
চুটকিতে রাখি যত আশা ভালবাসা”।