আরেক রকম ● নবম বর্ষ দশম সংখ্যা ● ১৬-৩১ মে, ২০২১ ● ১-১৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪২৮

প্রবন্ধ

লাইট হাউস

শেখর দাশ


India had become an “electoral autocracy” / Varieties of Democracy Institute (Sweden)
India downgraded from a “free democracy” to “partially free democracy” / Freedom House (USA)
India is a “flawed democracy” / Intelligence Unit, The Economist (UK)

খাইবার মুল্লুকটির সাথে আমাদের পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন ভালবাসার মানুষ সৈয়দ মুজতবা আলী। তাঁর আশ্চর্য সুন্দর ‘দেশে বিদেশে’ কাহিনিতে। আফগান সীমান্ত ঘেঁষা ওই রাজ্যের অনেক নামঃ গান্ধার,পাখতুনিস্তান,পাস্তুনিস্তান ইত্যাদি ইত্যাদি। ব্রিটিশরা নাম দিয়েছিলউত্তর-পশ্চিম সীমান্ত-প্রদেশ। নানামত, নানান বোধে ভরপুর ওইদেশ বহু কিসিমের মানুষকে আশ্রয় দিয়েছিল। সেরকমই আশ্রয় পেয়েছিলেন রাময়াদ।

বিহারের সম্বর জেলার ছাপড়া শহরে ১৮৪৬-এ রাময়াদের জন্ম। বাবা তুলসিরাম পাঠক। শিক্ষিত, পণ্ডিত মানুষ। তুলিরামের স্ত্রী ধর্মপ্রাণ ভারতীয় নারী। চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষে, রামনবমীর দিন তাঁদের ঘরে এক ছেলে আসে। রামনবমীর দিন জন্ম বলে নাম হয় রাময়াদ লালা। কিন্তু জন্মের এক মাসের মধ্যেই শিশু তার মাকে হারায়। কয়েকবছর পর বাবাকেও।

প্রতিবেশী নিঃসন্তান নরহরি প্রসাদের বাড়িতে রাময়াদ বড় হতে থাকেন। এক ধর্ম-সিক্ত পরিমণ্ডল তাঁকে পুষ্ট করেছিল। বেনারসের কেদারঘাট থেকে এক সাধু তখন ছাপরায় নিয়মিত যেতেন - তাঁকে কেন্দ্র করে ছাপড়ায়নিয়মিত ধর্মচর্চার আসর বসত। বহু ধর্মপ্রাণ মানুষের মতো রাময়াদকেওসেইসব আসর খুব টানত। খুব অল্প বয়সেই - মাত্র ১১ বছরেই তাঁর দীক্ষা হয়। ১৬ বছর বয়সেই সন্ন্যাস। তখন নাম হয় মহাত্মা অদ্বৈতানন্দ। সন্ন্যাসনিয়েই শুরু হয় দেশ ভ্রমণ। পরিচয় হতে থাকে নানান মতের, নানান পথের মানুষের সাথে। তাঁর নরম মনের জন্য অনেকেই তাঁকে দয়ালুজি বলেও ডাকতেন। ঘুরতে ঘুরতে মথুরায় গিয়ে তাঁর এক ফকিরের সাথে আলাপ জমে। ওইফকিরের কাছেই তিনি যেন পথের খোঁজ পান - তাঁর কাছেই প্রাণের আরামের সন্ধান মেলে। ততদিনে আরও ১৬ বছর কেটে গেছে। জুটেছে অনেক অনুগামী।

পরমহংস স্বামী অদ্বৈতানন্দজি - স্বামী পরমহংস দয়ালুজি - মূলত জয়পুরকে কেন্দ্র করেযোগ, ভক্তি ইত্যাদি প্রচার করতে শুরু করেন। ধীরে ধীরে অনুগামীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। সেইরকমই এক অনুগামী ভগবানজি দেওয়ান। পরমহংসজির সান্নিধ্য, শিক্ষা সম্বরের লবণ বিভাগের কর্মী ভগবানজিকে অত্যন্ত প্রভাবিত করে। তিনি স্বামীজিকে নিজের জন্মগ্রামতেরিতে একটিবার যাবার জন্য অনুরোধ করেন। সেটা ১৮৮৯। শিষ্যর অনুরোধে পরমহংস তেরিতে যান। এবং সেখানেই বাকি জীবনটা থেকে যান।

স্বামী পরমহংস দয়ালুজি সেখানে, করক জেলারতেরিতে অনুগামীদের নিয়ে এক আশ্রম তৈরি করেন। চলতে থাকে তাঁর মতপথের চর্চা। ৭৩ বছর বয়সে, ১৯১৯-এ তিনি প্রয়াত হন। তাঁর শিষ্যরা সেখানেই তাঁকে সমাধিস্থ করেন। সমাধি কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে মন্দির - এক ধর্মচর্চা কেন্দ্র।

১৯৪৭-এ দেশভাগের সময় উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ - বর্তমানে খাইবার পাখতুন রাজ্যটি পাকিস্তানের মধ্যে পড়ে। তখন থেকেই পাকিস্তানের সংখ্যালঘু হিন্দুদের কাছে তেরি অত্যন্ত পবিত্র তীর্থস্থান। তবে শুধু হিন্দু নন - উপমহাদেশের পরম্পরা মেনে অনুযায়ী হিন্দু-মুসলিম উভয় মতের ভক্ত মানুষই তাঁর সান্নিধ্য পেতে সেখানে যান। পরমহংসজি যেন লাইট হাউসেরমতোই সকলকে পথ দেখান।

কিন্তু, সবখানেই দুষ্কৃতিরা সুযোগের অপেক্ষায় থাকে। শয়তানের সাধনাতেই তাদের সিদ্ধি। এইরকমই একদল দুষ্কৃতি ১৯৯৭-এ পরমহংসজির সমাধি মন্দিরের ক্ষতি করে। এবং সেই মন্দিরের পুনর্নির্মাণে বাধা দেয়। কিন্তু শুভবুদ্ধির সামনে ওই দুষ্কৃতিরা পিছু হটতে বাধ্য হয়। পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্ট মন্দিরটি পুনর্নির্মাণ করার নির্দেশ দেয়। যদিও সেখানে ধর্মচর্চা আর শুরু হয় নি। তখন থেকে ভক্তরা সেখানে মাঝেমধ্যে যেতেন। সম্প্রতি ওই মন্দিরটি আবার সংবাদের শিরনামে এসেছে - কিন্তু সেকথা পরে আলোচনা করা যাবে। বরং আমরা ’৯০-এর দশকে ফিরে যাব।

(১৯)৯০-এর দশকে ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাসেভয়ঙ্করতম প্রলয়ের শুরু। এদেশে তখন টালমাটাল অবস্থা। ’৯২-এর ৬ ডিসেম্বর ভাঙা হয়েছে অযোধ্যার বাবরি মসজিদ। যারা ভাঙলেন, তারা বললেন ওই মসজিদের নীচে চাপা পড়েছে রামের জন্মস্থান - রামের আঁতুড়ঘর। ওই মসজিদ ভেঙে তারা রামমন্দির গড়লেন। এদেশে মন্দির ভাঙার সঙ্গে সঙ্গে পাকিস্তানের দুষ্কৃতিরা ঝাঁপিয়ে পড়ে ওদেশের হিন্দুমন্দিরগুলোর ওপর। সেইসময় প্রায় তিরিশটা হিন্দুমন্দির সেদেশে ভাঙা হয়! তারই ধারাবাহিকতায় কি ১৯৯৭-এ পরমহংসজির মন্দির আক্রমণ?উপমহাদেশে ফ্যাসিবাদের বিস্ফোরণের পথে বাবরি মসজিদ ভাঙা সবথেকে বড় মাইলস্টোন। ওই ঘটনা ভারতীয়দের স্মৃতিতে আজও জ্বলজ্বল করছে। তবু প্রসঙ্গটা এখানে ঝালিয়ে নেওয়া অসঙ্গত হবে না।

ইতিহাসবিদদের মতে মুঘল সম্রাট বাবরের নির্দেশে মীর বাকী ১৫২৮ খ্রিষ্টাব্দে অযোধ্যার মসজিদ তৈরি করেন। কিন্তু তখন কোনো সমস্যা ছিল না। প্রায় ৩০০ বছর পরে, ব্রিটিশ যুগে ঝঞ্ঝাটের শুরু। ঝঞ্ঝাট এড়াতেব্রিটিশ মসজিদের চারিদিকে বেড়া দিয়ে ঘিরে দিয়েছিল। উভয়পক্ষই - হিন্দু-মুসলিম ওইস্থানের দখল নিতে চাইলেও, মসজিদ মসজিদই থেকেছে। ১৯৩৪-এ হিন্দু-মুসলিম সংঘর্ষে মসজিদের ক্ষতি হয়, ব্রিটিশ সরকার মেরামতের উদ্যোগ নেয়। ’৪৭-এ দেশভাগ, ভারতীয়দের হাতে (এবং পাকিস্তানীদের হাতে) ক্ষমতা হস্তান্তর। ১৯৪৯-এ হিন্দু মহাসভা চুরি ক’রে মসজিদের মধ্যে একটা রামমূর্তি বসিয়ে দেয়। তারপর থেকেই চলতে থাকে আইনি এবং বে-আইনি পথে মসজিদ দখলের লড়াই। ১৯৮৬-তে কেন্দ্র সরকারের নির্দেশে বাবরি মসজিদে হিন্দুদের ধর্মাচারণের অনুমতি দেওয়া হয়। ১৯৯০-এ বাবরি মসজিদ ভেঙে রামমন্দির গড়ার উদ্দেশ্যে তখনকার ভারতীয় জনতা পার্টি(ভাজপা)-র সভাপতি লালকৃষ্ণ আদবানী রথযাত্রা শুরু করেন - সোমনাথ থেকে অযোধ্যা। রথযাত্রার পথে পথে এবং অযোধ্যায় দাঙ্গা ছড়াতে শুরু করে। ’৯১-এর লোকসভা ভোটে ভাজপা ১২১ আসন পেয়ে দ্বিতীয় বৃহত্তম দলে পরিণত হয়। উত্তরপ্রদেশে কল্যাণ সিং-এর নেতৃত্বে ভাজপা রাজ্যসরকারও গড়ে ফেলে! ১৯৯২-এর ৬ ডিসেম্বর বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, আরএসএস এবং তাদের অনুগামী দলের ডাকে দেড়লাখ করসেবক বাবরি মসজিদ ঘিরে ফেলে। রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে প্রতিশ্রুতি দেয় মসজিদ অক্ষত থাকবে।

সে দিনই মসজিদ ভাঙা হয়!মসজিদ ভাঙার পর কাছাকাছি মুসলিম মহল্লার বাড়িঘর ভাঙা হয়। সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে দাঙ্গা। খুব রক্ষণশীল হিসেবে ২০০০ মানুষ মারা যান। দুটো এফআইআর দাখিল করা হয়। একটা করসেবকদের নামে - নামবিহীন এক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে মসজিদ ভাঙার অভিযোগে। আরেকটি লালকৃষ্ণ আদবানী, মুরলিমনোহর যোশী, উমা ভারতি প্রমুখ ভাজপা নেত্রীবৃন্দের নামে - সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক বক্তৃতা দেওয়ার কারণে। ১৬ ডিসেম্বর (১৯৯২) কেন্দ্র সরকার ঘটনার তদন্তর জন্য বিচারপতি এমএস লিবারহানের নেতৃত্বে তদন্ত কমিশন গঠন করে।

স-তে-রো বছর পর, ২০০০-এ লিবারহান কমিশন তার রিপোর্ট দেয়। কমিশনের মতে ভাজপা নেতা অটলবিহারী বাজপেয়ী, লালকৃষ্ণ আদবানী, মুরলিমনোহর যোশী, কল্যাণ সিং, প্রমোদ মহাজন এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতা গিরিজা কিশোর, অশোক সিঙ্ঘল প্রমুখ নেতা মসজিদ ভাঙার দায়ে অপরাধী। (আদালতের সাম্প্রতিক রায় অন্য কথা বলে।)

আর্কেওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্দিয়া (এ এস আই) বাবরি মসজিদের মাটি খুঁড়ে সত্য ইতিহাস বের করে আনার দায়িত্ব পেয়েছিল। ২০০৩-এ এএসআই রিপোর্ট দেয়। পুরো রিপোর্টের একমাত্র শেষ চ্যাপ্টার মসজিদের নীচে একটা হিন্দু-মন্দিরের উল্লেখ পাওয়া যায়। যদিওরিপোর্টের অন্যান্য অংশের মতো শেষ চ্যাপ্টারে কোনো লেখকের নাম ছিল না! ওই অংশে, ভাঙা বাবরি মসজিদ থেকে সংগৃহীত উপাদানের মধ্যে উত্তর ভারতের মন্দিরের ধ্বংসাবশেষের কথা লেখা হয়। বলাবাহুল্য ওই সিদ্ধান্তের পক্ষে কোনো সূত্র এএসআই রিপোর্টে পাওয়া যায় নি। নৃতত্ত্ববিদ সুপ্রিয়া ভার্মা এবং জয়া মেনন এএসআই-এর সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেন। তাঁদের মতে বাবরি মসজিদের নীচে কোনো ছোটো মসজিদ বা বৌদ্ধস্তূপ ছিল, হিন্দু মন্দির নয়।

বিষয়টা আদালতে গড়ায়। ২০১০-এ এলাহাবাদ হাইকোর্ট রায় দেয় বাবরি মসজিদের বিতর্কিত এলাকাটির তিনভাগের একভাগ সুন্নি মুসলিম ওয়াকফ বোর্ডকে মসজিদ গড়তে এবং দুভাগ রামমন্দির গড়তে দেওয়া হবে। ২০১১-তে সুপ্রিম কোর্ট ওই আদেশের ওপর স্থগিতাদেশ দেয়। ’১৪-তে প্রধানমন্ত্রী হলেন নরেন্দ্র মোদী। মোদী ক্ষমতায় বসতেই বাবরি মামলা অক্সিজেন পেল। আমরা জানি মোদী-ভাজপার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির অন্যতম বিষয় ছিল রামমন্দির নির্মাণ। সম্প্রতি- ২০১৯-এর ৯ নভেম্বর সুপ্রিমকোর্ট রায় দিল বাবরি মসজিদের বিতর্কিত জমিটি পুরোপুরি রামমন্দির করার জন্য দেওয়া হবে। সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডকে অযোধ্যার অন্যত্র মসজিদ গড়ার জন্য পাঁচ একর জমি দেওয়া হবে। ৫ আগস্ট (২০২০) নরেন্দ্র মোদী ভেঙে ফেলা বাবরি মসজিদের জমিতে রামমন্দির নির্মাণের কাজ শুরু করলেন। ৩০ সেপ্টেম্বর (২০২০) বিশেষ সিবিআই আদালত মসজিদ ভাঙার অভিযোগে অভিযুক্ত লালকৃষ্ণ আদবানী, মুরলিমনোহর যোশী, উমা ভারতী, কল্যাণ সিং সহ ৩২ জনকে নির্দোষ বলে রায় দিল! যদিও লিবারহান কমিশনের প্রতিবেদনে ওঁরা দোষী ছিলেন।

এখানেই আবার করক জেলার তেরিতে ভেঙে ফেলা পরমহংসজির মন্দির প্রসঙ্গ ফিরে আসতে পারে। ১৯৯৭-এ ভেঙে ফেলার পর পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে মন্দিরটি নতুন করে গড়ে তোলার পর সেখানে আর ভজনপূজন শুরু হয় নি। দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার গুমোট পরিমণ্ডলে তখন ফ্যাসিবাদের আঁশটে গন্ধ। দুনিয়ার বৃহত্তম গণতন্ত্র যখন ফ্যাসিবাদের থাবায় রক্তাক্ত হচ্ছে তখন প্রতিবেশী দেশগুলোতেও ফ্যাসিবাদীদের দাঁত নখ বেরিয়ে পড়ে। পাকিস্তানের অনেক হিন্দু তখন দেশান্তরী হন। খাইবার-পাখতুনখাওয়া থেকেও। ফলে তেরি গ্রামে হিন্দুরা প্রায় অস্তিত্বহীন হয়ে পড়েন। কিন্তু মন্দির থেকে যায়। সম্প্রতি স্থানীয় প্রশাসন মন্দিরে ধর্মচর্চার উদ্যোগ নেন। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় মন্দিরটির সংস্কারের প্রয়োজন হয়ে পড়ে। স্থানীয় হিন্দুরা সেই উদ্যোগনেন। তখনই ঝামেলার শুরু। জনৈক উলেমা মউলভি মহম্মদ শরিফের নেতৃত্বে ডিসেম্বরের ৩০ তারিখ (২০২০) একদল দুষ্কৃতি ওই মন্দিরে হামলা করে এবং আগুন লাগায়।

পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ঘটনার বিচারের দায়িত্ব নেয়। প্রধান বিচারপতি গুলজার আহমদের নেতৃত্বে গঠিত বেঞ্চ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক কর্তাদের ডেকে পাঠায়। পুলিস কর্তা জানান, শান্তিরক্ষার দায়িত্বে নিযুক্ত আধিকারিকসহ ৯২ জন পুলিস কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ১০৯ জন দুষ্কৃতিকে জেলে ভরা হয়েছে।

পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্টখাইবার-পাখতুনখাওয়া রাজ্যে সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে দু’সপ্তাহের মধ্যে গড়ে দিতে। নির্দেশ দিয়েছে, যারা ভেঙেছে তাদের কাছ থেকেই মন্দির গড়ার টাকা আদায় করতে ইত্যাদি ইত্যাদি।

মধ্যযুগের ইতিহাস পড়তে গিয়ে দেখেছি, যখন যে রাজাগজা ক্ষমতায় বসেছেন তিনি অন্যের ধর্মস্থান ভেঙে তার ওপর নিজের ধর্মকেন্দ্র করে গড়ে নিয়েছেন। ভারতের বহু মন্দির-মসজিদের নীচে এইরকম কাহিনি চাপা পড়ে রয়েছে। কিন্তু সে ছিল মধ্যযুগের চলন। তারপর সভ্যতা অনেক এগিয়েছে। মহান ভারত দুনিয়ার কাছে বিস্ময় - দুনিয়ার বৃহত্তম গণতন্ত্রের চর্চা এখানে চলছে। এশিয়া বা দুনিয়ার বহু দেশে গণতন্ত্র বাড়েবাড়ে মুখ থুবড়ে পড়েছে, কিন্তু ভারত খেকে গেছে লাইট হাউসের মতো দিকদর্শী।

নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে আমরা শুধু দেশে নয়, দুনিয়াতেও পিছিয়ে পড়ছি। মুখ ঢেকে যাচ্ছে লজ্জায়। আমাদের মনে আছে বিশ্বযুদ্ধের মাধ্যমে জার্মানি হিটলারের হাত থেকে মুক্ত হয়েছিল। আমরা নিশ্চয় তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ চাই না।