আরেক রকম ● অষ্টম বর্ষ সপ্তদশ সংখ্যা ● ১৬-৩০ নভেম্বর, ২০২০ ● ১-১৫ অগ্রহায়ণ, ১৪২৭

প্রবন্ধ

কৃষ্ণগহ্বর, তুমি কি তাদের মতো সত্য নও?

অর্ধেন্দু সেন


বিশ শতকের গোড়ায় পদার্থবিদ্যায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসে। ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক তাঁর কোয়ান্টাম তত্ত্বের প্রবর্তন করেন। দেখা যায় এনার্জির প্রবাহ অবিচ্ছিন্ন হয় না। হয় নির্দিষ্ট ধাপে। বোঝা যায় যে নিউটন-ম্যাক্সওয়েলের ফিজিক্স আর চলবে না। ১৯০৫ সালে আসে আইনস্টাইনের বিশেষ আপেক্ষিক তত্ত্ব। ১৯১৫ সালে তাঁরই সাধারণ আপেক্ষিক তত্ত্ব। স্থান কাল সম্বন্ধে আমাদের প্রচলিত ধারণায় আমূল সংশোধনের প্রয়োজন হয়। ১৯২৫ সালে হাইসেনবার্গ-শ্রোডিঙ্গারের কোয়ান্টাম বলবিদ্যা বা কোয়ান্টাম মেকানিক্স কার্যকারণ-সম্পর্ক আর নির্ধারণবাদের ভিত নড়িয়ে দেয়। এই আঘাত পদার্থবিদ্যাকে দুর্বল না করে তাকে এক নতুন জীবন দেয়। বিশেষভাবে উপকৃত হয় জ্যোতির্পদার্থবিজ্ঞান।

নক্ষত্রের জন্ম হয় প্রচুর পরিমাণ গ্যাস একত্র হলে। গ্যাসের পরিমাণ বাড়লে অভিকর্ষের টানও বাড়ে তাই আরও গ্যাস জড়ো হয়। পারস্পরিক আকর্ষণে গ্যাসের পিণ্ড সঙ্কুচিত হয়। তাই গোড়ায় নক্ষত্রের ঘনত্ব বাড়তেই থাকে। অযুত নিযুত অনু কাছাকাছি এলে নিজেদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কিও বাড়ে। নক্ষত্রের তাপমাত্রাও বাড়ে। একসময়ে এই তাপমাত্রা বেড়ে কয়েক কোটি ডিগ্রিতে পৌছয়। সেই তাপমাত্রায় এবং বিশাল চাপে নক্ষত্রের ভিতরটা হয় হাইড্রোজেন বোমার মতো। শুরু হয় 'নিউক্লিয়ার ফিউশন'। হাইড্রোজেন পরিবর্তিত হতে থাকে হিলিয়ামে। একইসঙ্গে উৎপন্ন হয় প্রচুর এনার্জি।

বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের বয়স আনুমানিক ১৫০০ কোটি বছর। সূর্যের বয়স ৫০০ কোটি বছর। সূর্যে যে পরিমাণ জ্বালানি আছে তা আরও ৫০০ কোটি বছর চলে যাবে। সব নক্ষত্র কিন্তু এতদিন বাঁচে না। তারাদের মধ্যে সূর্য আকারে ছোটো। তার জ্বালানির খরচ কম। তাই সে বাঁচে বেশি। তারাদের গড় আয়ু ১০০ কোটি বছর। নিউক্লিয়ার ফিউশন যতো দিন চলে নক্ষত্র ততদিন জ্বলজ্বল করে তাপ আর আলো বিকিরণ করতে পারে। আর ফিউশন-জনিত উত্তাপ নক্ষত্রের সঙ্কোচন বন্ধ রাখে। কিন্তু একদিন তো জ্বালানি শেষ হতে বাধ্য। তখন কি হয়?

১৯২০-র দশকে কিছু নক্ষত্র বিজ্ঞানীদের নজরে আসে যাদের ঘনত্ব অত্যন্ত বেশি - সূর্যের কোটি কোটি গুণ। আকারে ছোটো হওয়ায় এদের নাম হয় শ্বেত বামন - হোয়াইট ডোয়ার্ফ। বিজ্ঞানীরা বোঝেন এদের জ্বালানি শেষ হয়ে গেছে। অনিয়ন্ত্রিত সঙ্কোচনের ফলে এদের ঘনত্ব এতো বেড়েছে। তাহলে এটাই কি সব তারার শেষ অবস্থা? পদার্থবিদ সুব্রমনিয়ান চন্দ্রশেখর তখন গবেষণার জন্য কেম্ব্রিজ যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তিনি হিসেব করে দেখলেন যে সূর্যের সমান বা তার চেয়ে ছোটো তারা এইভাবেই শেষ হবে। এদের ক্ষেত্রে সঙ্কোচন বন্ধ হবে পাউলি-র 'এক্সক্লুশন প্রিন্সিপ্লের' দরুন। এই কারণেই রাদারফোর্ড বা বোর-এর মতে অ্যাটমে ইলেকট্রনগুলি নিউক্লিয়াসের চারিদিকে ঘোরে নির্দিষ্ট কক্ষপথে। সবাই মিলে নিউক্লিয়াসে হুমড়ি খেয়ে পড়ে না। অ্যাটম তার আয়তন বজায় রাখতে পারে। টেবিলের উপর একটা বই রাখলে সেটা টেবিল ফুঁড়ে মাটিতে পড়ে যায় না। একই কারণে শ্বেত বামনের ঘনত্ব আর বাড়ে না।

কিন্তু যাদের ভর বেশি তাদের সঙ্কোচন এত সহজে থামবে না। তারার ভর যদি সূর্যের দেড় গুণ বা তার বেশি হয় তার পরিণতি হবে নিউট্রন স্টার। এর ব্যাস হতে পারে দশ বিশ কিলোমিটার। বুঝে দেখুন। মাত্র দশ-বিশ কিলোমিটারের মধ্যে সূর্যের দুই-তিন গুণ ভর! কি সাঙ্ঘাতিক হবে তার ঘনত্ব! এই ধরনের তারাও আবিষ্কার হয় ১৯২০-র দশকে। আর যে তারা ছিল সূর্যের দশগুণ ভারী? সে নিউট্রন স্টার হিসেবেও স্থায়ী হবে না। ব্ল্যাক হোল হবার আগে তার থামা নেই। ধরুন আপনি টেলিস্কোপ দিয়ে এইরকমের এক তারাকে দেখছেন ক্রমাগত ছোটো হয়ে যেতে। দেখছেন ধীরে ধীরে তারাটি লালচে হচ্ছে আর ম্লান হয়ে আসছে। একসময়ে মনে হবে সেটা একটা কালো পর্দায় ঢেকে গেল। তখন সেটা ব্ল্যাক হোল বা কৃষ্ণ গহ্বর।

১৯৮৪ সালের এক লেকচারে ব্ল্যাক হোলের ব্যাপারটা সুন্দর বুঝিয়েছিলেন চন্দ্রশেখর। মহাকাশে যেতে হলে আমাদের পৃথিবীর আকর্ষণ অতিক্রম করতে হয়। এর জন্য প্রয়োজন হয় একটা ন্যূনতম গতিবেগ যাকে বলা হয় 'এস্কেপ ভেলোসিটি'। এই গতিবেগ হল প্রতি সেকেন্ডে ১১.২ কিলোমিটার। চাঁদ পৃথিবীর তুলনায় হাল্কা তাই সেখানে এই ভেলোসিটি অনেক কম। এতই কম যে চাঁদে বায়ুমণ্ডল নেই। গ্যাস যা ছিল সব এস্কেপ করে গেছে। সূর্য পৃথিবীর চেয়ে অনেক ভারী তাই সূর্যে এই গতিবেগ অনেক বেশি। তবে ভরের সঙ্গে ঠিক নয়। এস্কেপ ভেলোসিটি বাড়ে ঘনত্বের সঙ্গে।

ধরুন আমরা সূর্যের ভর এক রেখে ব্যাস ছোটো করতে করতে পাঁচ কিলোমিটারে নিয়ে এলাম। তখন তার এস্কেপ ভেলোসিটি হবে আলোর গতিবেগের সমান। তার মানে কি আলোও বেরোতে পারবে না সেখান থেকে? ঠিক তাই। কিন্তু আলোর উপর কি অভিকর্ষ বলের কোনো প্রভাব আছে? নিউটনের তত্ত্বে এই প্রভাবের কথা ছিল না কিন্তু আইনস্টাইন দেখালেন গ্র্যাভিটির প্রভাবে স্থান-কাল বেঁকে যায়। তাহলে আলোর রশ্মিও বেঁকে যাবে। সাধারণ আপেক্ষিক তত্ত্ব বলে সূর্যের কাছে আলোর রশ্মি ১.৭৫ সেকেন্ড বেঁকবে। এডিংটন ঠিক করলেন এটা মেপে দেখবেন। সূর্যের আশেপাশের নক্ষত্র দেখতে হলে অপেক্ষা করতে হয় পূর্ণ গ্রহণের জন্য। ১৯১৯-এর সূর্যগ্রহণে দলবল নিয়ে বেরোলেন তিনি এবং প্রমাণ করলেন আইনস্টাইনের ধারণা ঠিক।

১৯২৮ সালে কেম্ব্রিজের পথে জাহাজে বসেই চন্দ্রশেখর ছকে ফেললেন কৃষ্ণ গহ্বরের জন্মবৃত্তান্ত। কিন্তু এডিংটন মানতে নারাজ। চন্দ্রশেখরের ইচ্ছা ছিল এডিংটনের তত্ত্বাবধানে ব্ল্যাক হোল নিয়ে কাজ করার। তা আর হল না। তাঁকে অন্য বিষয় বেছে নিতে হল গবেষণার জন্য। এডিংটনকে দোষ দেওয়া যায় না। খোদ আইনস্টাইন মনে করতেন সাধারণ তত্ত্ব কৃষ্ণ গহ্বরের হদিস দিলেও বাস্তবে ব্ল্যাক হোল পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ। কৃষ্ণ গহ্বর বিরোধিতার কারণ ছিল 'সিঙ্গুলারিটি'। কথাটা গণিত শাস্ত্র থেকে ধার করা।

ফিজিক্সে কোনো গাণিতিক ফাংশন ব্যবহার করতে হলে দেখে নিতে হয় সেটা ভদ্র সভ্য কিনা। যে কোনো বিন্দুতে তার একটাই মূল্য থাকবে। ফাংশন সর্বত্র অবিচ্ছিন্ন হবে। ডিফারেন্সিয়েট করা গেলে তো কথাই নেই। তার মূল্য কোথাও অসীম হয়ে যাবে না। কৃষ্ণ গহ্বরের সমস্যা হল তার সিঙ্গুলারিটি। নক্ষত্র ছোটো হোক আপত্তি নেই কিন্তু কোথাও না থেমে তার আয়তন যদি শূন্য হয়ে যায় তাহলে তার ঘনত্ব হবে অসীম। তখন পদার্থবিদ্যার কোনও সূত্রই আর কাজ করবে না।

কিন্তু বিশ্বের শুরু তো হয়েছে বিগ ব্যাং থেকে। সেটাও তো একটা 'সিঙ্গুলারিটি'! তা ঠিক। কিন্তু যা হয়ে গেছে তা মেনে নেওয়া যায় বিশেষ করে যা হয়েছে এক হাজার কোটি বছর আগে। অন্যদিকে রোজই কোনো না কোনো নক্ষত্রের জ্বালানি ফুরিয়ে যাচ্ছে। তারা সবাই যদি 'সিঙ্গুলারিটি' হয়ে যায় তাহলে সামাল দেবে কে! স্টিফেন হকিং লিখেছেন বিজ্ঞানীদের সঙ্গে এক বৈঠকে মহামান্য পোপ বলেছিলেন পদার্থবিদ যেকোনো বিষয়ে গবেষণা করতে পারে কিন্তু সৃষ্টিতত্ত্ব নিয়ে ভাবনা চিন্তা - সেটা ধর্মের এক্তিয়ার। বিজ্ঞানী সঙ্গত কারণেই সিঙ্গুলারিটি দেখলে ভয় পায়।

কিন্তু সাধারণ আপেক্ষিক তত্ত্ব নিয়ে যেখানে যা কাজ হল সবেতেই শোনা গেল সিঙ্গুলারিটির কথা। শোয়ার্সচাইল্ড ওপেনহাইমার রায়চৌধুরী সবাই বললেন তাই। শুধু দুই রাশিয়ান বিজ্ঞানী লিফশিৎ আর খালাতনিকফ বলেছিলেন সিঙ্গুলারিটি যে হবেই তা নয়। তখনও বিজ্ঞানীরা ভাবতেন সিঙ্গুলারিটি হয়তো এসে যাচ্ছে কিছু বিশেষ শর্ত আরোপিত হচ্ছে বলে। শেষে সব সংশয় দূর করলেন দুই ব্রিটিশ বিজ্ঞানী হকিং এবং পেনরোজ্। ১৯৬০-এর দশকে এঁরা প্রমাণ করলেন গ্র্যাভিটেশনাল কোল্যাপ্স যেভাবেই হোক না কেন ব্ল্যাক হোল এড়ানো যাবে না। সিঙ্গুলারিটি এড়ানো যাবে না। এ হল সাধারণ আপেক্ষিক তত্ত্বের অবধারিত পরিণাম। দেখা গেল সিঙ্গুলারিটিতে এঁদের আপত্তি নেই। সিঙ্গুলারিটিকে পাশবালিশ করে এঁরা নিশ্চিন্তে ঘুমোতে পারেন। অবশ্য তার কারণ ছিল। তা হল 'কসমিক সেন্সরশিপ'। এই সূত্র বলে এ ধরনের সিঙ্গুলারিটি হবে লোকাল - ইভেন্ট হরাইজনের চাদরে ঢাকা। এরা আমাদের প্রভাবিত করতে পারবে না। কৃষ্ণ গহ্বরের বিষয়ে ষাট বছরের গবেষণার জন্য পেনরোজ্ এবছর পদার্থবিদ্যায় নোবেল পুরস্কার পেলেন। হকিং বেঁচে থাকলে তিনিও নিশ্চয়ই পেতেন।

যে কৃষ্ণ গহ্বরকে চোখে দেখা যায় না তার অস্তিত্ব প্রমাণ হবে কি করে? প্রমাণ হবে পরোক্ষে। তার গ্র্যাভিটির প্রভাবে। আকাশে অনেক তারার জুটি দেখা যায়। দুটি তারা একসঙ্গে থাকে। পারস্পরিক টানে একে অন্যের চারিদিকে ঘুরপাক খায়। অনেক সময়ে বোঝা যায় জুটি কিন্তু এক পার্টনার অদৃশ্য। হিসেব করে দেখা হয় অদৃশ্য তারাটির ভর কতো? যদি 'চন্দ্রশেখর লিমিট' অর্থাৎ সূর্যের দেড় গুণের কম হয় তাহলে তা কৃষ্ণ গহ্বর হতে পারে না। সূর্যের পাঁচ বা দশ গুণ হলে নির্ঘাত ব্ল্যাক হোল। এভাবেই ১৯৬৩ সালে ধরা পড়ে প্রথম ব্ল্যাক হোল যার নাম হয় Cygnus X-1। ১৯৬৭ সালে চিহ্নিত করা হয় একটি নিউট্রন স্টারকে যার ব্যাস দশ কিলোমিটার। বিজ্ঞানীরা আরও উৎসাহ নিয়ে লেগে যান ব্ল্যাক হোলের সন্ধানে।

অনেক সময় কোনো জুটির ব্ল্যাক হোল তার পার্টনারকে চূর্ণ করে শুষে নেয়। সেই প্রচণ্ড টানে তারার চূর্ণ উদ্দীপিত হয়ে এক্সরে এমনকি গামা-রে’র বিকিরণ করতে থাকে। এই বিকিরণ দেখেও ব্ল্যাক হোলের উপস্থিতির অনুমান করা গেছে। বছর পাঁচেক হল ক্যালিফোর্নিয়ার 'লাইগো' আমাদের গ্র্যাভিটি-তরঙ্গের সন্ধান দিচ্ছে। এবছরই ধরা পড়েছে এক পরম শক্তিশালী তরঙ্গ। মনে করা হচ্ছে কোনো ব্ল্যাক হোল তার জুটিকে পুরোপুরি গ্রাস করায় এই তরঙ্গের উৎপত্তি। একে কি বলব? প্রতক্ষ্য প্রমাণ না পরোক্ষ?

জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের ধারণা প্রতিটি নক্ষত্রপুঞ্জের মাঝখানে একটি করে অতিকায় ব্ল্যাক হোল আছে। নক্ষত্রপুঞ্জগুলি প্রচণ্ড বেগে ঘুরছে তাদের অক্ষে। এর জন্য যে বিশাল টানের প্রয়োজন তা আসছে কোত্থেকে? যে তারাগুলি আমরা চোখে দেখি তাদের সম্মিলিত গ্র্যাভিটি এত শক্তিশালী নয়। তাই এর পিছনে ব্ল্যাক হোল বা অন্য কোনো 'ডার্ক ম্যাটার' থাকতে বাধ্য। আমাদের নক্ষত্রপুঞ্জ 'মিল্কি ওয়ে'-র মাঝখানে আছে 'স্যাজিটেরিয়াস'-এ। এটি একটি কৃষ্ণ গহ্বর যার ভর সূর্যের ৪০ লক্ষ গুণ। স্যাজিটেরিয়াস-এর উপর গবেষণার জন্য এবছর নোবেল পেলেন রাইনহার্ড গেঞ্জেল ও আনদ্রিয়া গেজ্।

পেনরোজের বহুমুখী প্রতিভা তাঁকে নানাদিকে চালিত করেছে। তাঁর প্রথম দুটো পপুলার বই 'এম্পেররস নিউ মাইন্ড' আর 'শ্যাডোস্ অফ দ্য মাইন্ড' প্রায় হকিং-এর 'ব্রিফ হিস্ট্রি'-র মতোই জনপ্রিয় হয়েছিল। বই দুটিতে তিনি আলোচনা করেছিলেন আমাদের ব্রেনের কর্মপদ্ধতি নিয়ে। ব্রেনের সঙ্গে মনের সম্পর্ক নিয়ে। তারপর ব্ল্যাক হোল। পেনরোজ্ টাইলস্। এখন তিনি বলছেন 'সাইক্লস্ অফ টাইম' বা সময়ের আবর্তের কথা। তাপগতিবিদ্যা এবং এন্ট্রপির দিক থেকে জগতের শুরু এবং শেষের মধ্যে সাদৃশ্য খুঁজে পেয়েছেন তিনি। গ্রহ-তারা-নক্ষত্রপুঞ্জ শেষ হয়ে যাবার পরে বাঁচবে কিছু অতি-বৃহৎ কৃষ্ণ গহ্বর। তারাও ধীরে ভর হারাবে হকিং রেডিয়েশনের মাধ্যমে। ভরশূন্য জগত বুঝবে না সে ছোটো না বড়ো, যুবা না বৃদ্ধ। পেনরোজের মতে এই হবে নতুন জগত সৃষ্টির উপযুক্ত পরিবেশ। কি মুশকিল! এতো সত্য-ত্রেতা-দ্বাপর-কলির গপ্পো। কোন পুরাণে পড়েছিলাম তাও মনে নেই। আবার পড়তে হবে? মিরজা গালিব তাঁর এক 'শের'-এ লিখেছিলেন 'ভালই ছিলাম যখন ছিলাম না। হয়েই আমার কাল হল'। সত্যি কথা। এতো ঝামেলা জানলে কি হতে রাজী হতুম?