আরেক রকম ● একাদশ বর্ষ পঞ্চম সংখ্যা ● ১-১৫ মার্চ, ২০২৩ ● ১৬-৩০ ফাল্গুন, ১৪২৯

প্রবন্ধ

সঞ্জয় উবাচ


নতুনের ডাক

সঞ্জয় বললেন, মহারাজ আপনার ধর্মরাজ্যে প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবার কথা আমি আগেই বলেছি আপনাকে।

হ্যাঁ, বলেছ সঞ্জয়। কিন্তু মুশকিল কি জান, তোমাদের এই ধারণাসমূহের সঙ্গে আমার সম্যক পরিচয় নেই। তাই তোমার বর্ণনার সব তাৎপর্য আমি ঠিক হৃদয়ঙ্গম করতে পারি না বলেই মনে হয়।

বুঝতে পারছি মহারাজ। যুগ থেকে যুগান্ত পেরিয়ে আবার অন্য কোনো যুগের প্রবর্তনা। এই বড়ো মাপের পরিবর্তনের পটভূমিতে সব কিছুই কেমন বদলে যায়। এমনকি এই যে - ধরিত্রীর সাপেক্ষে আমরা সব কথা বলি, আমাদের সব ভাবনা সাজাই, সেই ধরিত্রীও তার রূপ বদল করে।

তা তো বটেই। ঋতু সাপেক্ষে তার রূপ পরিবর্তনের খবর আমরা ইন্দ্রিয়ের স্তরেই টের পাই। আমি নেহাত দৈববশে অন্ধ তাই চক্ষুরিন্দ্রিয়ের সাপেক্ষে যা দৃশ্যমান, আমি সেই অভিজ্ঞতা থেকে বঞ্চিত। কিন্তু অন্যান্য ইন্দ্রিয় আমার সজাগ। ওই এক ইন্দ্রিয়ে আমি ন্যূন বলেই হয়তো অন্য অনেক ইন্দ্রিয়ে আমি সম্ভবত তীক্ষ্ণতর। এই বোধহয় প্রকৃতির পরিপূরণ।

আমাদের ব্যক্তি সাপেক্ষে যে-দুনিয়া তার জন্য আপনি যা বলেছেন তা একেবারে যথার্থ। কিন্তু মহারাজ, আপনি যে ধারণাবিশ্বের কথা তুলেছেন এবং সে প্রসঙ্গে আমি আপনাকে পরিবর্তনের যে-মাত্রার কথা বলতে চেয়েছি তা ঠিক ঋতু পরিবর্তনের মতো শুধুই চক্রাকার পরিবর্তন নয়। যদিও চক্রাকার পরিবর্তন বলে যা স্বতঃই প্রতীয়মান হয় না, অনেক সময়ে তাও সময় পরিধিকে আরো যথেষ্ট প্রসারিত করে নিলে চক্রাকার মনে হতে পারে। চক্রাকার মানে একটা মোটামুটি নির্দিষ্ট আবর্তনকাল আছে ঘটনাটির। যদি আমার পর্যবেক্ষণকাল সেই আবর্তনকালের তুলনায় সংক্ষিপ্ততর হয়, তাহলে আমার পর্যবেক্ষণে তার পুনরাবর্তন ধরা পড়বে না। মনে হবে এ পৃথিবী একবার পায় তারে, পায় নাকো আর। অর্থাৎ ওই অস্তিত্ব যেন একমেবাদ্বিতীয়ম্।

তোমার কথা থেকে মনে হচ্ছে চক্রাকার ব্যতিরেকে অন্য কোনো রকমের পরিবর্তনের কথা আছে তোমার চিন্তায়।

হ্যাঁ, মহারাজ। তা না হলে আপনি কোনো রকমেই নতুন কোনো বস্তু পাবেন না। সবই যদি চক্রাকারে আবর্তিত হয়, তাহলে যথেষ্ট প্রসারিত পর্যবেক্ষণকালে সবই ঘুরে ঘুরে আসবে। নতুন বলে কোনো ধারণাই করা যাবে না সে জগতে। তাই বিশ্বরূপ দর্শন। সবই সেখানে ধৃত। তাই নতুনের জন্য লাগবে গুণগত পরিবর্তনের ধারণা। এ রকম নয়, অন্য রকমের ধারণা। ওই ঋতু পরিবর্তনের কথাই ভাবুন না। বারেবারে ফিরে ফিরে আসে। পর্ণমোচী বৃক্ষ তার পাতা ঝরায়, নির্দিষ্ট ঋতুতে ঝরা পাতার ডালে আবার নতুন পাতা গজায়। বছরের পর বছর, এই আবর্তনের মধ্যেই গাছের বয়স বাড়ে। তার চিহ্ন ধরা থাকে তার বল্কলে। কিশলয়ের এই বার্ধক্যের পরিণতি, এটা নতুন ঘটনা, অন্য রকমের ঘটনা, চক্রাকার পরিবর্তনের ধারণায় এই নতুনকে ধরা যাবে না। বারেবারে বদলানোর প্রক্রিয়ার মধ্যে লুকোনো ছিল এই নতুন রকমের বদল। এটা গুণগত পরিবর্তনের কথা।

তুমি যা বললে সঞ্জয়, তাতে মনে হচ্ছে এ আমাদের বয়সের রহস্য। আমাদের বয়োবৃদ্ধির প্রক্রিয়ার মধ্যেই সহজাত হয়ে থেকে গিয়েছে এই বদল, এই নতুন, এই আলাদা রকম, এই অন্যত্ব, এই বৃদ্ধত্ব। পুরোনো হওয়া, ক্ষয়ে যাওয়াই আমাদের নতুনত্ব। আর এই বদলটা একমুখী, কেবল একই দিকে ধাবমান।

যথার্থ উপলব্ধি করেছেন, মহারাজ। ওই যে এক কবির কথায় আছে, ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা সব শিশুরই অন্তরে। তবে এখানে এক জটিল প্রশ্ন আছেঃ শিশু আর শিশুর পিতা এক না আলাদা। সহজ উত্তর - একও বটে, আবার আলাদাও বটে। এই দুইই আমাদের একসঙ্গে নিতে হবে। অন্তরে ঘুমিয়ে থাকা যে পিতা - সে শিশুটির বিকশিত রূপ। ওই রূপে পৌঁছোতে গিয়ে ঘটে গেছে শিশুর গুণগত পরিবর্তন। সেটা তার বিকাশের সাংস্কৃতিক স্তর। আর জৈবিক স্তরে বিকাশের পরেও হয়তো কিছু মিল খুঁজে পাওয়া যাবে। সম্ভবত তাই দিয়ে শনাক্ত করা যাবে এই পিতা ওই শিশুরই অন্তরে ঘুমিয়ে ছিল।

তোমার এই নতুনের ডাক বর্গ হিসেবে প্রজাতন্ত্রকে কিভাবে স্পর্শ করছে একটু বুঝিয়ে বলো, সঞ্জয়।

প্রজাতন্ত্রে রাজ্য শাসক দৈবাদিষ্ট নয়, বংশানুক্রমিকও নয়। সে প্রজাবর্গের ইচ্ছা নিয়ন্ত্রিত। বুঝতেই পারছেন, সকল প্রজার কি ইচ্ছা তা সুষ্ঠুভাবে নির্ধারণ করাই এক শক্ত কাজ। তার বন্দোবস্ত যদি বা কোনোক্রমে করা যায়, তা পদে পদে রক্ষা করে চলা অতীব দুরূহ ব্যাপার। তার জন্য আছে নানা বিধিবিধান, নানা দস্তুর এবং এক আস্ত সংবিধান। আধুনিক কালের সব রাষ্ট্রেরই মোটামুটি এরকম এক সাংবিধানিক ব্যবস্থা রয়েছে।

প্রজাতন্ত্র যদি প্রজার ইচ্ছা নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থাই হয়, তাহলে ওই যে তুমি বললে, ‘আছে নানা বিধিবিধান, নানা দস্তুর এবং এক আস্ত সংবিধান’, তা এতসব জিনিস এল কোথা থেকে?

এই প্রশ্নের উত্তরে বলি মহারাজ, আপনি ঠিক শনাক্ত করেছেন সমস্যা। প্রজা নিয়ন্ত্রিত হতে গেলে ওই সমস্ত ব্যাপারেই প্রজার ইচ্ছা প্রতিফলিত হতে হবে। শুধু তাই না, প্রজার ইচ্ছা যথাযথভাবে প্রতিফলিত না হলে সেসব বিধিবিধানের গণতান্ত্রিক চরিত্র ক্ষুণ্ণ হয়। তাতেও প্রশ্ন উঠতে পারে হলই বা ক্ষুণ্ণ। কী এসে যায় তাতে? এ পর্যন্ত এসে গেলে তখন বলতে হবে গণতন্ত্র ক্ষুণ্ণ হলে যা বাকি থাকে তার নাম স্বেচ্ছাতন্ত্র বা স্বৈরতন্ত্র।

সেটা কি এই কারণে যে, রাজতন্ত্র আজ আর নেই তাই।

খানিকটা হয়তো তা বটে। কিন্তু অতীত অভিজ্ঞতা বলে যে রাজতন্ত্র, হয়তো অল্প কিছু ব্যতিক্রম ব্যতিরেকে কালে কালে স্বেচ্ছাতন্ত্রেই পৌঁছে যায়। যাবে কি যাবে না তা শেষ বিচারে নির্ভর করে রাজা বা রানী, সম্রাট বা সম্রাজ্ঞীর ব্যক্তিত্বের উপরে। সোজা কথায় ব্যক্তির মন মেজাজ অভিরুচি, এই সবের উপরে। বোঝাই যাচ্ছে এরকম কোনো তন্ত্রকে প্রজাতন্ত্র বলে মেনে নেওয়া যায় না।

তা যায় না, এ কথা ঠিকই বলেছ সঞ্জয়। কিন্তু তুমি কি বলবে রাজা বা সম্রাট বা দেশনায়কের ব্যক্তিস্বভাবই মূল নিয়ামক শক্তি। যে লোকহিতের জন্য লোকনায়ক রাজা বা সম্রাট আখ্যায় ভূষিত, সেই লোকমনের কোনো ভূমিকা নেই এই স্বেচ্ছাতন্ত্রের রূপান্তর প্রক্রিয়ায়।

এটা খুবই অন্তর্দৃষ্টি সম্পন্ন কথা, মহারাজ। আপনার মতো ভূয়োদর্শী অভিজ্ঞের পক্ষেই এই সমৃদ্ধ দৃষ্টিলাভ সম্ভব। বস্তুত ওই লোকমনের চাওয়ারই এক রকমের প্রকাশ দেখা যায় লোকনায়কের ভাবনাভঙ্গি ও আচার আচরণে। লোকমনের আকাঙ্ক্ষা ও অভিলাষের সঙ্গে আবার জড়িয়ে থাকে সমাজ সংস্থাপন ও সমসময়ের বার্তা। লোকনায়কের অনুকূল ব্যক্তিস্বভাব এই সবকিছুর সঙ্গে মিলে গেলে সোনায় সোহাগা।

তা তোমাদের প্রজাতন্ত্রে এর প্রতিকার কী?

নিশ্চিত প্রতিকার, সত্যি কথা বলতে, কিছু আছে কিনা বলা শক্ত। তবে আধুনিক কালের রাষ্ট্রচিন্তায় এর এক প্রতিবিধান 'সংবিধান' রচনা করা। সংবিধান বা গঠনতন্ত্র, যাই বলুন না কেন, এ কালের যে-কোনো সংঘ সংগঠনের সেটাই এক অর্থে প্রাণ ভোমরা। আধুনিক রাষ্ট্রের বেলায় তো বটেই। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই সংবিধানের অস্তিত্ব একেবারে লিখিত আকারেই সংরক্ষিত হয়। উজ্জ্বল ব্যতিক্রম ইংরেজদের যুক্তরাষ্ট্র। সেখানে দীর্ঘদিনের গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু সংবিধান অলিখিত। সর্বৈব দস্তুর নির্ভর সে সংবিধান।

তা এমন যে সর্বশক্তিমান সংবিধান, তার সঙ্গে প্রজাতন্ত্রের যোগ স্থাপিত হচ্ছে কিভাবে?

গণপরিষদের মাধ্যমে। দেশের মানুষের প্রতিনিধিত্বমূলক প্রতিষ্ঠান এই গণপরিষদ্‌। আমাদের দেশে ইংরেজ শাসনের অবসানকালে নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত হয়েছিল এই গণপরিষদ্‌। ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়ার অঙ্গ হিসেবে ১৯৪৬-এর নির্বাচনে গঠিত হয় এই পরিষদ্‌। লক্ষ্য ছিল স্বাধীন ভারতের সংবিধান প্রণয়ন। প্রণীত এই সংবিধানেই নিহিত আমাদের সার্বভৌমত্ব। একটা কথা আমাদের আলোচনায় প্রায়ই নেপথ্যে চলে যায়। আমরা খেয়াল রাখি না। কথাটা এই যে আমাদের স্বাধীনতা বস্তুত ক্ষমতা হস্তান্তর। প্রাক্‌-স্বাধীনতা পর্বের যে-সরকারের হাত থেকে ক্ষমতা হস্তান্তর আইনের বলে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছিলাম সেই সরকারের যে-সার্বভৌমত্ব তা বর্তেছিল আমাদের প্রণীত নতুন সংবিধানে। সংবিধানের ভূমিকায় পরিষ্কারভাবে লেখা আছে যে আমরা, এই ভারতের জনগণ, নিজেরাই নিজেদের জন্য এই সংবিধান প্রস্তুত করে গ্রহণ করলাম। ক্ষমতা হস্তান্তরের মধ্য দিয়ে আমরা পরতন্ত্র শাসন থেকে স্বতন্ত্র শাসনের পথে পা বাড়ালাম। আর এই সংবিধান রচনা ও তা নির্দিষ্টভাবে গ্রহণের মধ্য দিয়ে আমরা নিজেদের এক স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে গঠিত করলাম। এই সংবিধানই আমাদের সার্বভৌম ক্ষমতার উৎস। ১৯৫০-এর ২৬ জানুয়ারি থেকে আমাদের এই স্বাধীন সার্বভৌম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের পথচলা শুরু।

তোমার কথা থেকে আমি যা বুঝতে পারছি সঞ্জয়, এই সংবিধান তাহলে আমাদের ধর্মরাজ্যের বর্তমান রাষ্ট্রিক চেহারার এক অতি মূল্যবান স্তম্ভ।

অবশ্যই মহারাজ। তবুও এ কথাটা বারবার বলতে হয় এই জন্যে যে, এ দেশে এখনো অনেকে মনে করেন সুবিধামতো, প্রয়োজনমতো যেমন দেশের আইন পরিবর্তন করা যায় তেমনি প্রয়োজনে সংবিধানও পরিবর্তন সাপেক্ষ।

তা তুমি কি বলতে চাও যে সংবিধান অপরিবর্তনীয় অনড় কোনো একটা গঠনতান্ত্রিক দলিল?

কখনোই নয়। আমাদের সংবিধান প্রণেতারা অবশ্যই সংবিধানে পরিবর্তনের অবকাশ রেখেছেন। সংবিধান সংশোধনের নির্দিষ্ট বিধিবিধান রয়েছে। তা যেমন তেমনভাবে করলেই হয় না। মনে রাখতে হবে যে সংবিধান দেশের অনাগত ভবিষ্যতেরও দিশারী। তাই বলে কি তা স্থাণুবৎ কোনো বস্তু। তা নয়, তবে শুধু সংখ্যাগরিষ্ঠের মর্জিমতো তা নাড়াচাড়া করার জিনিস নয়। আমাদের সংবিধানে অতীতেও এরকম বদল ঘটাবার নজির আছে, মহারাজ। আর এখন যেটা হল সেটা প্রায় সংখ্যাগরিষ্ঠের রাজনৈতিক কর্মসূচি অনুসারী। আমি সংবিধানের ৩৭০ ধারা বিলোপের কথা বলছি, মহারাজ। কিন্তু এ নিয়ে এখন আর কথা বাড়ানো চলবে না। কারণ বিষয়টি সর্বোচ্চ আদালতের বিচারাধীন রয়েছে এখনো। আমাদের শাসনতন্ত্রে সংবিধানের ব্যাখ্যায় সুপ্রিম কোর্টই শেষ কথা বলার অধিকারী।

যা তুমি বলার অধিকারী নও তা বলার জন্য আমি তোমাকে জোর করব না, সঞ্জয়। আমার বুঝতে সুবিধা হবে বলে তুমি শুধু এই ধারার অন্তর্গত বিষবস্তুর কথা বলো।

এই ধারা বলে জম্মু ও কাশ্মীরে কিছু কিছু বিশেষ ব্যবস্থা চালু ছিল। ঐতিহাসিক ভৌগোলিক নানা বৈচিত্র্যের জন্য বিভিন্ন অঞ্চলে এরকম বিশেষ ব্যবস্থা কিছু অস্বাভাবিক ব্যাপার নয়। উত্তর-পূর্বের রাজ্যের ক্ষেত্রেও এরকম বিশেষ ব্যবস্থা আছে। এ ব্যাপারে দেশের সবাই এখন উচ্চ ন্যায়ালয়ের দিকে তাকিয়ে আছেন।

বুঝলাম।

কিন্তু মহারাজ, সংবিধানের প্রসঙ্গে আরো কিছু কথা আছে। সংবিধান নেহাতই শুধু দুই মলাটে বাঁধানো একটা বই নয়। আইন আদালত পূর্ব-নজির মিলিয়ে সে এক বিরাট খোলা পরিসর যেন। বিভিন্ন আদালতের রায়, অনেক সময়ে এমনকি বিদেশি আদালতের রায়ও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠতে পারে। আদালতের মামলায় পূর্ব কোনো রায় বা আদালতের পর্যবেক্ষণ অবশ্যই সাংবিধানিক ধারণার চরিত্র বিচারে বিবেচ্য হতেই পারে।

তোমার কথায় আমার রীতিমতো কৌতূহল জাগ্রত হচ্ছে। এই এত বড়ো দেশ আমাদের এই ভারতবর্ষ। এত তার বৈচিত্র্য। খাদ্যাভ্যাসে, পোশাক পরিচ্ছদে কতই না বিচিত্রের সমারোহ। এত বিভিন্ন রকমের জনগোষ্ঠী, এতগুলি ভাষা, এত রকমের জীবনযাপনের সংস্কার। এই এক সংবিধানের সূত্রে বাঁধা। এই বিপুলতার সামনে দাঁড়ালে একেবারে গা ছমছম করার মতো একটা ব্যাপার ঘটে।

একেবারে ঠিক কথা বলেছেন মহারাজ। আমি লক্ষ করেছি আপনি কিছুক্ষণ আগে আমাদের এ দেশকে ভারতবর্ষ বলে উল্লেখ করেছেন। আপনার পক্ষে সমুচিত কাজ। আপনার ঐতিহ্যে এ দেশ প্রাচীন জম্বুদ্বীপের একটি অংশ। সেই অংশগুলি ছিল এক একটি বর্ষ। মোট ন-টি বর্ষের একটির নাম ছিল ভারত। বর্ষগুলির তালিকাঃ কুরু, হিরণ্ময়, রম্যক, ইলাবৃত, হরি, কেতুমাল, ভারত, ভদ্রাশ্ব ও কিম্‌পুরুষ। প্রসঙ্গত বলি মহারাজ, আমাদের নতুন সংবিধানে এ দেশের গৃহীত নাম এখন আবার শুধু ভারত। আপনার ভারতবর্ষ আজ আমাদের ভারত।


[সৌরীন ভট্টাচার্য]