আরেক রকম ● একাদশ বর্ষ একবিংশ সংখ্যা ● ১-১৫ নভেম্বর, ২০২৩ ● ১৬-৩০ কার্তিক, ১৪৩০

প্রবন্ধ

প্রাণের উৎস সন্ধানে এক প্রাণবান বিজ্ঞানী

মধুশ্রী বন্দ্যোপাধ্যায়


(৫ই নভেম্বর জে. বি. এস. হ্যালডেন-এর জন্মের ১৩১তম বার্ষিকী, তাঁর স্মরণে এই লেখা)


১৯ শতকের দ্বিতীয় ভাগে, চার্লস ডারউইন ও আলফ্রেড ওয়ালেস ‘বিবর্তনের প্রাকৃতিক নির্বাচন তত্ত্ব’ প্রস্তাবনার পরে প্রাণের উৎস নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে আলাপ আলোচনা চলতে থাকে। এই পরিপ্রেক্ষিতে ব্রিটিশ জীববিজ্ঞানী জে. বি. এস. হ্যালডেন-এর নাম প্রথমেই মনে আসে। ১৯২৯ সালে জন বার্ডন স্যান্ডারসন হ্যালডেন পৃথিবীতে প্রাণের উৎপত্তি সম্পর্কে একটি যুক্তিনির্ভর প্রকল্প প্রকাশ করেছিলেন, যা ছিল বিগত শতকে দুই বিশ্বযুদ্ধের মধ্যেকার সময়ে এই বিষয়ে মূল আলোচনা ও গবেষণার কেন্দ্রবিন্দু। তাঁর অনুমানভিত্তিক প্রকল্প আদিম পৃথিবী এবং প্রাণের উৎস ও বিবর্তনের এক যুক্তিগ্রাহ্য বর্ণনা দিয়েছিল, আর সেই মতবাদকে অগ্রাহ্য করা ছিল কঠিন। সেই সময়ে ইংল্যান্ডে জে. বি. এস. হ্যালডেন ও সোভিয়েত রাশিয়াতে আলেকজান্ডার ওপারিন প্রাণের উদ্ভবের বিষয়ের মূল ধারণাগুলো আলাদাভাবে উপস্থাপন করেন। এই দুটি তত্ত্ব, আপাতদৃষ্টিতে সদৃশ, তবে নির্দিষ্ট স্বতন্ত্র উপসংহার প্রস্তাব করেছিল। তাঁরা অবশ্য পরস্পর পরিচিত ছিলেন না এবং প্রাথমিকভাবে হ্যালডেন জানতেনও না ওপারিন-এর কর্মকাণ্ড। পরে হ্যালডেন এবং ওপারিন প্রাণের উৎপত্তি সম্পর্কিত ধারণাগুলোকে একত্রিত করেন এবং এই প্রকল্পের নাম হয় 'ওপারিন-হ্যালডেন মডেল'। এই তত্ত্বের মূল সূত্রগুলো হলঃ পৃথিবীর আদিম সময়ে সমুদ্রে অজৈব অণু থেকে জৈব অণুর গঠন, জৈব অণু থেকে কোষের ইমারতি ইঁটগুলো গঠন (যেমন অ্যামিনো অ্যাসিড, নিউক্লিওটাইডস, সাধারণ শর্করা) এবং শেষে এই ইমারতি মশলার সাহায্যে প্রাক-কোষ গঠন।

পৃথিবীতে প্রাণের উৎপত্তি সম্বন্ধে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য মতবাদ হল 'ওপারিন-হ্যালডেন মডেল'। এই মতবাদ মূলত প্রাণের রাসায়নিক উৎপত্তিকে (chemical origin of life) ব্যাখ্যা করে। সেই মতবাদেরই সম্প্রসারিত ও মার্জিত রূপ আজকে বিভিন্ন জীববিজ্ঞানী প্রস্তাব করছেন। হ্যালডেন সেই সময়ে ইংল্যান্ডে আইনস্টাইনের মতোই বিখ্যাত বৈজ্ঞানিক সেলিব্রিটি ছিলেন। তাঁর সমসাময়িকদের একজন তাঁকে ব্যাখ্যা করেছেন এইভাবে - “(তিনিই হলেন) শেষ মানুষ যিনি জানেন যে সবকিছু জানতে হবে।” তবে তিনি একটি মহাকাব্যিক যন্ত্রণার জীবনযাপন করেছিলেন এবং তার বেশিরভাগই স্ব-প্ররোচিত। তাঁর জীবনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড সেই যন্ত্রণার মাত্রাকে প্রবলতর করেছিল। তাঁর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড মানুষের সেই বিপন্নতার কথাই বলে যা আমরা এখন বেঁচে থেকে উপলব্ধি করছি।

হ্যালডেন, যিনি জেবিএস নামেই বেশি পরিচিত, বিজ্ঞানের জগতে এক অবিস্মরণীয় নাম। তিনি ছিলেন বিবর্তনীয় জীববিজ্ঞান (এভোলিউশনারী জেনেটিক্স) ও জনজাতি জীববিজ্ঞান (পপুলেশন জেনেটিক্স)-এর অন্যতম স্থপতি, ব্যক্তি জীবনে ছিলেন নিরীশ্বরবাদী ও মার্ক্সবাদী, যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে ১৯৫৬ সালে নিজের রাজনৈতিক মতামতের জন্য বাধ্য হয়েছিলেন ব্রিটেন ছাড়তে, চলে এসেছিলেন কলকাতাতে, 'ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউট'-এ অধ্যাপক হিসেবে। পরবর্তীকালে তিনি ভারতের নাগরিকত্ব নিয়েছিলেন।

ইংল্যান্ডের এক বর্ধিষ্ণু এবং ঐতিহ্যময় পরিবারে জে. বি. এস. হ্যালডেন জন্মেছিলেন ১৮৯২ সালের নভেম্বর মাসে। তাঁর বাবা জন হ্যালডেন ছিলেন এক শারীরবিজ্ঞানী (ফিজিওলজিস্ট)। তিনি তাঁর পরীক্ষানিরীক্ষায় নিজে এবং কিশোর ছেলেকে গিনিপিগের মতো ব্যবহার করতেন। হ্যালডেন মনে হয় বাবার সঙ্গে এইসব গবেষণা উপভোগ করতেন - বিজ্ঞানের জন্য ঝুঁকি এবং কোনো নির্দিষ্ট কারণের জন্য কষ্ট পাওয়া সম্ভবত ছোটবেলা থেকেই তাঁর জীবনকে কষ্টসাধ্য ও শক্তপোক্ত করে গড়ে তুলেছে। তখনকার অন্যান্য ধনী পরিবারের ব্যক্তিদের মতো জেবিএস-এর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শুরু হয়েছিল ইটন কলেজে। মেধাবী এবং বুদ্ধিমান জেবিএস অক্সফোর্ডে ক্লাসিক এবং গণিত অধ্যয়ন করেন এবং পাশে জেনেটিক্স নিয়ে নিজে নিজে পরীক্ষানিরীক্ষা শুরু করেন।

যখন প্রথম বিশ্বযুদ্ধের জন্য তাঁর আনুষ্ঠানিক পড়াশোনা বাধাগ্রস্ত হয়েছিল এবং যুদ্ধে যোগদান করতে হয়েছিল, তখন তিনি যুদ্ধক্ষেত্রে পরিখাতে বসে তাঁর জেনেটিক্স নিয়ে প্রথম পেপারের কাজ করেছিলেন। যুদ্ধক্ষেত্রে হাতে করে বোমা ছোড়ায় পারদর্শী হয়ে উঠে তিনি আবিষ্কার করেছিলেন যে তিনি খুন করতে পারেন এবং খুন করে অবসাদগ্রস্তও হন না। তাঁর এক জেনারেল তাঁকে “আমার সেনাবাহিনীর সবচেয়ে সাহসী এবং নোংরা সৈনিক” বলে পরিচয় দিয়েছিলেন। যুদ্ধক্ষেত্রের সেইসব দিনগুলোকে সারা জীবন তিনি স্মরণে রেখে স্বপ্নের জাল বুনেছিলেন।

যুদ্ধ থেকে ফিরে আসবার পর, হ্যালডেন ১৯২২ সালে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা শুরু করেন। সেই সময়ে শার্লট ফ্রাঙ্কেন বার্গেস ছিলেন একটি স্থানীয় প্রকাশনার এক প্রতিবেদক, তাঁদের দেখা হওয়ার সময় শার্লট বিবাহিত ছিলেন। তখন এমনকি ব্রিটেন-এর সমাজও ছিল রক্ষণশীল। এইসব বিতর্কের জন্য কেমব্রিজে তাঁর শিক্ষকতার চাকরিটা প্রায় যেতে বসেছিল। শার্লটের বিবাহবিচ্ছেদ চূড়ান্ত হওয়ার পর এই দম্পতি ১৯২৫ সালে বিয়ে করেন।


একই সঙ্গে সেই সময়ে অবশ্য তিনি গবেষণায় নিজেকে একেবারে ডুবিয়ে রেখেছিলেন। ডারউইনে-এর বিবর্তনবাদ এবং মেন্ডেল-এর প্রাথমিক জিনতত্ত্বকে (মেন্ডেল অবশ্য কখনই 'জিন' শব্দটি ব্যবহার করেননি, তিনি উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া বৈশিষ্ট্যকে প্রথম বৈজ্ঞানিকভাবে বিশ্লেষণ করেন) হ্যালডেন একত্রিত করতে সাহায্য করেছিলেন যা 'আধুনিক সংশ্লেষণ' নামে পরিচিত। বিবর্তনের কারণগুলো নিয়ে হ্যালডেন-এর বিবর্তনীয় তত্ত্ব সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দলিল ছিল যা সাধারণত 'আধুনিক সংশ্লেষণ' নামে উল্লেখ করা হয়। সেই সময়ে হ্যালডেন এবং আরও কয়েকজন প্রতিভাধর গবেষকদের অন্তর্দৃষ্টির জন্য বিবর্তনীয় জীববিজ্ঞান (এভোলিউশনারী জেনেটিক্স) একটি শক্তিশালী বিজ্ঞানে পরিণত হয়েছে যা জিন থেকে জীবজগৎ, প্রাক-কোষ থেকে জৈবিক কোষ গঠন এবং শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর মিলন পর্যন্ত একটি বিশাল পরিসরকে বিশ্লেষণ করতে সাহায্য করেছে।

অজৈব পদার্থ থেকে জৈব অণুর গঠন

ওপারিন-হ্যালডেন মডেল প্রাণের উৎসের সন্ধানে যে প্রকল্প দিয়েছিলেন, তাতে প্রথমে অজৈব বস্তুসমূহ থেকে তৈরি হয়েছিল প্রাক-কোষ। প্রাক-কোষ থেকে আসে সরল এককোষী জীব। তাঁরা বলেছিলেন, সেই সময়ে আদিম সমুদ্র সৌরশক্তি দিয়ে চালিত একটি বিশাল রাসায়নিক ল্যাবরেটরির মতো কাজ করেছে। আর সেখানে সুনির্দিষ্ট কিছু অজৈব পদার্থ থেকে পরপর ঘটে যাওয়া রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে জীবনের উদ্ভব হয়েছে। খুব সংক্ষেপে এই হল তাঁদের প্রকল্পের মূল কথা।

তাঁরা মনে করেছিলেন বৃহস্পতি ও অন্যান্য গ্রহের মতোই গ্যাস ও ধূলিকণা থেকে ঘনীভূত হয়ে পৃথিবী আজকের রূপ নিয়েছে। সাড়ে চারশো কোটি বছর আগে পৃথিবী ছিল মারাত্মক উত্তপ্ত। তখন বায়ুমণ্ডলে কোনো অক্সিজেন ছিল না। সুতরাং আজকে বৃহস্পতি গ্রহে যে গ্যাস আছে পৃথিবীর প্রাথমিক জলবায়ুও তেমনই ছিল বলে তাঁরা মনে করেছিলেন। সেই বাতাস ছিল মিথেন, হাইড্রোজেন ও অ্যামোনিয়া দিয়ে তৈরি। আর ছিল সামান্য জলীয় বাষ্প ও কিছু খনিজ পদার্থ। সেই সময়ে বায়ুমণ্ডলের বাইরে ওজোন স্তর না থাকায় সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মি খুব সহজেই পৃথিবীতে এসে পৌঁছাত। এর সঙ্গে মহাজাগতিক রশ্মিগুলোর বিকিরণ ছিল আজকের দিনের চেয়ে বহুগুণে বেশি। আর ছিল ঘনঘন বিদ্যুৎ ঝলক ও বজ্রপাত।

সুগভীর উষ্ণ সমুদ্রজলে পৃথিবীর প্রথম বায়ুমণ্ডলের সহজলভ্য গ্যাস থেকে মহাজাগতিক উৎস থেকে ধেয়ে আসা অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাবের ফলে জৈব যৌগ, যেমন অ্যামিনো অ্যাসিড, নিউক্লিওটাইড তৈরি হয়েছিল। এরাই হল প্রাক-কোষের 'বিল্ডিং ব্লক' বা আদি ইমারতি মশলা।

নিউক্লিওটাইড একক জুড়ে জুড়ে তৈরি হয় জৈব অণুর দীর্ঘ শৃঙ্খল। পৃথিবীর সমস্ত প্রাণের জন্য অপরিহার্য জৈব অণুর লম্বা শৃঙ্খল। প্রোটিন, শ্বেতসার, ‘ডিএনএ’, ‘আরএনএ’, লিপিড - সবই হল জৈব অণুর লম্বা শৃঙ্খল। সেইসময়ে সমুদ্র যেন ছিল প্রচুর পরিমাণে জৈব অণুর বিশাল বাটি ভর্তি পাতলা ঝোল, প্রি-বায়োটিক স্যুপ। এরপরে প্রাক-কোষ এসে এইসব জৈব অণুগুলোকে নিয়মবদ্ধভাবে শৃঙ্খলিত করবার কাজটা করবে।

প্রাক-কোষ গঠন

হ্যালডেন মনে করতেন দূষিত পরিবেশ থেকে আলাদা করতে জৈব অণুর ছোটো-বড়ো শৃঙ্খলের চারিদিকে জলে অদ্রবণীয় চর্বি জাতীয় লিপিড পদার্থের সচ্ছিদ্র পাতলা জৈব প্রাচীর তৈরি হয়েছিল। প্রি-বায়োটিক স্যুপের মধ্যে প্রাচীর ঘেরা জৈব অণুর ছোটো-বড়ো শৃঙ্খলই হল প্রাক-কোষ - অনেকটা যেন স্যুপের মধ্যে তরকারির টুকরো। এই প্রতিপাদ্য অনুযায়ী, স্যুপের মধ্যে জৈব অণুর দীর্ঘ শৃঙ্খল বিপাক ক্রিয়া করে, বংশগত তথ্য সংকেতে লিখে রাখতে পারে এবং সম্ভবত প্রতিলিপিও তৈরি করতে পারে।

হ্যালডেন এবং ওপারিনের ধারণাগুলো জীবনের উৎস, বিশেষত কোষের গঠন সম্পর্কে প্রথম কিছুটা যুক্তিসহ তত্ত্ব পেশ করেছিল, ওপারিন-হ্যালডেনদের এই মডেল ১৯৫০-এর দশক পর্যন্ত পরীক্ষা করা সম্ভব হয়নি। ১৯৫৩ সালে শিকাগো ইউনিভার্সিটিতে অধ্যাপক হ্যারল্ড ইউরির ছাত্র ছিলেন স্ট্যানলি মিলার, তাঁরা ল্যাবরেটরিতে একটা কাচের গোলকের মধ্যে প্রিক্যামব্রিয়ান যুগের মহাসাগরের মতো এক আদর্শ প্রতিরূপ তৈরি করেন ও ওপারিন-হ্যালডেনদের তত্ত্বকে হাতেকলমে পরীক্ষা করতে থাকেন। তাঁদের পরীক্ষাগারে অজৈব উপাদান থেকে সাধারণ জৈব যৌগ তৈরি করা এবং তারপর সেগুলোকে একত্রিত করে প্রোটিনের 'বিল্ডিং ব্লক' তৈরি করা সম্ভব হয়েছিল। কিন্তু জীবের কাজে লাগে এমন প্রোটিন তৈরি করা যায়নি।

আজকে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত, যে গ্যাসের মিশ্রণ মিলার ব্যবহার করেছিলেন আদি পৃথিবীর সম্ভাব্য বায়ুমণ্ডলের থেকে তা ছিল ভিন্ন, তখন ছিল মূলত নাইট্রোজেন ও কার্বন ডাই-অক্সাইড। আদি পৃথিবীর সম্ভাব্য বায়ুমণ্ডল অনুসারে এর পরে বহু গবেষণা করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে সেই মিশ্রণ থেকেও অ্যামিনো অ্যাসিড ও ছোট প্রোটিন অণু তৈরি করা গেছে। কিন্তু মানুষের কাজে লাগে এমন সঠিক প্রোটিন তৈরি এখনও সম্ভব হয়নি।

হ্যালডেন-এর রাজনৈতিক জীবন

বিগত শতাব্দীর তিরিশের দশকে বিজ্ঞানের সঙ্গে সঙ্গে হ্যালডেন-এর কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে যোগাযোগ ঘনিষ্ঠতর হয়। ট্রাফালগার স্কোয়ারে গগনভেদী বক্তৃতা; স্ট্যালিনের সোভিয়েত ইউনিয়ন ভ্রমণ; স্প্যানিশ গৃহযুদ্ধের শুরু থেকেই একেবারে প্রথম সারিতে থেকে প্রচার - এইসবই ছিল তাঁর বর্ণময় বহুমুখী জীবনের বিভিন্ন দিক।

তখন স্পেনে ১৯৩৬ সালের জুলাই থেকে ১৯৩৯ সালের এপ্রিল পর্যন্ত প্রায় তিন বছর ধরে গৃহযুদ্ধ চলেছে। একদিকে প্রজাতন্ত্রপন্থীরা ভোটের মধ্য দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার পক্ষে ছিল। আর অন্যদিকে জাতীয়তাবাদীরা ছিল এর বিরুদ্ধে। স্প্যানিশ গৃহযুদ্ধের সময় হ্যালডেন প্রজাতন্ত্রপন্থীদের পপুলার ফ্রন্ট সরকারকে সমর্থন করেছিলেন। সেই সময়ে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মানুষ ওই গৃহযুদ্ধে বামপন্থী পপুলার ফ্রন্ট সরকারের পক্ষে যোগ দেয়। ১৯৩৬ সালের জুলাই মাসে বামপন্থী পপুলার ফ্রন্ট সরকারের বিরুদ্ধে জাতীয়তাবাদীদের পক্ষ থেকে বিদ্রোহ হয়। আর তাতে জাতীয়তাবাদীদের পক্ষ নেয় জেনারেল ফ্রান্সিসকো ফ্রাঙ্কোর সামরিক শক্তি। জাতীয়তাবাদী কনফেডারেট স্পেনের ক্ষমতা দখল করতে চেয়েছিল। জাতীয়তাবাদীরা ‘Una, Grande y Libre’ (‘One, Great and Free’) শ্লোগান দিয়ে ফ্যাসিস্ট শক্তির সহায়তায় নিজ দেশবাসীর ওপরে আকাশ থেকে গুলি করায় মদত দেয়। সোভিয়েত ইউনিয়ন স্পেনীয় প্রজাতন্ত্রকে সহায়তা করার জন্য আন্তর্জাতিক আবেদন করেছিল। আর অন্যদিকে ফ্যাসিবাদী শক্তিগুলো, ইতালি ও জার্মানি, সমর্থন করে স্পেনের জাতীয়তাবাদীদের সমর্থনে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বাধীন কনফেডারেশনকে।

অন্তত ৫ লক্ষ মানুষ মারা গেছেন স্পেনের গৃহযুদ্ধে। বিখ্যাত ব্রিটিশ মার্ক্সিস্ট লেখক ক্রিস্টোফার কডওয়েল মাত্র ৩০ বছর বয়সে, কবি ফেদেরিকো গার্সিয়া লোরকা ৩৮ বছর বয়সে মারা যান এই যুদ্ধে।

"কিছুক্ষণ ঘুমোতে চাই
কিছুক্ষণ, এক মিনিট, এক শতাব্দী;
কিন্তু সবাইকে অবশ্যই তা জানতে হবে আমি মরে যাইনি।"

- ফেদেরিকো গার্সিয়া লোরকার কবিতা থেকে।

এই যুদ্ধে ব্রিটিশ সরকার কোনো পক্ষে হস্তক্ষেপ না করার নীতি (আসলে ঘুরিয়ে ফ্যাসিবাদীদের সমর্থনের নীতি) নেওয়ায় জেবিএস ব্রিটিশ সরকারের কড়া সমালোচনা করেছিলেন। সেই সময়ে জে. বি. এস. হ্যালডেন এবং তাঁর স্ত্রী শার্লট হ্যালডেন উভয়েই কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগদান করেন এবং আন্তর্জাতিক ব্রিগেডের জন্য সৈন্য ও অর্থ সংগ্রহে সক্রিয় হন।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন লন্ডনে জার্মান গোলার হামলা চলাকালীন, হ্যালডেন একটি বিশাল, সস্তা, বোমা থেকে বাঁচবার জন্য ভূগর্ভস্থ আশ্রয়কেন্দ্রের নকশা করেছিলেন। তিনি যুক্তি দিয়েছিলেন যে হাজার হাজার জীবন এই আশ্রয়কেন্দ্র বাঁচাতে পারে। এই 'হ্যালডেন আশ্রয়কেন্দ্র' অবশ্য কখনও নির্মিত হয়নি। তাতে হ্যালডেন বিরক্ত হয়েছিলেন। তিনি মনে করেছিলেন এই নিস্পৃহতা পুঁজিবাদী সমাজের আরেকটি অপরাধ। এসব বলার জন্য তাঁর বিরুদ্ধে ব্রিটিশ সরকার একটি মামলা করেছিল। ব্রিটিশ গোয়েন্দারা তাকে ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে নজরদারির মধ্যে রেখেছিল এই সন্দেহে - সম্ভবত ভিত্তিহীন - যে তিনি একজন সোভিয়েত গুপ্তচর।

জীবনের প্রারম্ভে বয়ঃসন্ধির সময়ে বাবার সহকারী হিসেবে তিনি ডুবুরি, নাবিক এবং খনি শ্রমিকদের কাজের অবস্থার উন্নতির জন্য নিজের ঘাড় এবং ফুসফুসের ক্ষতি হবার ঝুঁকি নিয়েছিলেন। একজন সৈনিক হিসেবে, তিনি কেবল যুদ্ধের বর্বরতাই নয়, পরিখার কমরেডশিপও উপভোগ করেছেন। ১৯৩২ সাল থেকে তিনি 'রয়্যাল সোসাইটি'র ফেলো, চেয়েছিলেন শুধু সুবিধাপ্রাপ্ত শ্রেণী নয়, বিজ্ঞান সবাইকে সাহায্য করুক। তিনি ভেবেছিলেন সোভিয়েত-এর বিজ্ঞান নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা 'সকলের জন্য বিজ্ঞান'-এর প্রতিশ্রুতি দিক, এবং শেষে তিনি একজন কমিউনিস্ট হয়ে ওঠেন - অবশেষে পৃথিবী বিখ্যাত কমিউনিস্ট মুখপত্র ‘দ্য ডেইলি ওয়ার্কার’-র সম্পাদকীয় বোর্ডের চেয়ারম্যান হন।

জেবিএস এবং শার্লট ১৯৪২ সালে আলাদা হয়ে যান, অবশেষে ১৯৪৫ সালে তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ হয় এবং তিনি ডাঃ হেলেন স্পুরওয়েকে বিয়ে করেন। ১৯৫৬ সালে, হ্যালডেন-রা ভারতে চলে আসেন।

বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে ভারতবর্ষে এসে তিনি তাঁর কর্মক্ষেত্র হিসেবে বেছে নেন কলকাতার 'ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউট'কে। সেখানে তিনি 'বায়োমেট্রি রিসার্চ ইউনিট'-এর অধ্যাপক হিসেবে নিযুক্ত হন। ১৯৫৭ থেকে ১৯৬১ তিনি আইএসআই-এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। আইএসআই-এ থাকাকালীন তিনি সেখানকার পাঠ্যসূচীকে আধুনিক করে তোলেন এবং রাশিবিজ্ঞান গবেষণায় প্রভূত উন্নতিসাধন করেন। হ্যালডেন-ই সম্ভবত প্রথম, যিনি বিবর্তনবাদের তত্ত্বকে গাণিতিক সূত্রের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত করেন। সেখানকার কর্তৃপক্ষ বিশেষত প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক প্রশান্তচন্দ্র মহালানবিশের সঙ্গে মতান্তরের কারণে তাঁকে আইএসআই ছাড়তে হয়। তারপর ১৯৬১ সালে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বিজু পট্টনায়েকের আমন্ত্রণে একটি জিন গবেষণা কেন্দ্র গড়ে তুলতে হ্যালডেন ওড়িশা যান এবং নিজের তত্ত্বাবধানে গবেষণাগারটি প্রতিষ্ঠা করেন।

আমেরিকান সাই-ফাই লেখক গ্রফ কনক্লিন যখন তাঁকে 'বিশ্ব নাগরিক' হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন, তখন তিনি বলেছিলেন, “কোনো সন্দেহ নেই যে আমি এক অর্থে বিশ্ব নাগরিক। কিন্তু আমি টমাস জেফারসনের সঙ্গে একমত যে, একজন নাগরিকের প্রধান কর্তব্যগুলোর মধ্যে একটি হল তার সরকারের জন্য উপদ্রবস্বরূপ হওয়া। যেহেতু কোনো বিশ্ব রাষ্ট্র নেই, আমি এটা করতে পারি না।

অন্যদিকে, আমি ভারত সরকারের জন্য একটি উপদ্রব হতে পারি, এবং হয়ে আছিও। এদের যথেষ্ট পরিমানে সমালোচনার অনুমতি দেওয়ার যোগ্যতা রয়েছে, অবশ্য খুব ধীরে এরা প্রতিক্রিয়া জানায়। আমি ভারতের নাগরিক হিসেবেও গর্বিত, যা ইউরোপের তুলনায় অনেক বেশি বৈচিত্র্যময়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউএসএসআর বা চীনের সঙ্গে কোনো তুলনাই চলে না এবং এইভাবে সম্ভাব্য বিশ্ব সংস্থার জন্য একটি ভাল মডেল।

এটা অবশ্যই ভেঙ্গে যেতে পারে, কিন্তু এটা একটা চমৎকার পরীক্ষা। তাই আমি ভারতের নাগরিক হিসেবে চিহ্নিত হতে চাই।” [অনুবাদ লেখকের]

একজন নাগরিকের প্রধান কর্তব্যগুলোর মধ্যে একটি হল তার সরকারের জন্য উপদ্রবস্বরূপ হওয়া। উপদ্রবস্বরূপ হবার ও গ্রহণ করবার যোগ্যতা অর্জন করা।

আজকে আমাদের দেশের সরকারের সেই যোগ্যতা আছে কি? কেন্দ্রে ও রাজ্যে?

১৯৪০-এর দশকে, হ্যালডেন প্রথম লক্ষ্য করেছিলেন যে অনেক লোহিত রক্তকণিকার অসুখ, যেমন সিকেল-সেল অ্যানিমিয়া এবং বিভিন্ন থ্যালাসেমিয়া, গ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চলগুলিতে বেশি হয় যেখানে আবার ম্যালেরিয়াও বেশি হয়। আফ্রিকার যেসব অঞ্চলে ম্যালেরিয়া বেশি, সেখানে মানুষের মধ্যে সিকল-সেল মিউটেশনের উপস্থিতি বেশি হতে পারে। অর্থাৎ সিকল-সেল অ্যানিমিয়া ও থ্যালাসেমিয়া আর ম্যালেরিয়ার মধ্যে একটা সম্পর্ক পাওয়া যাবে বলে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন জেবিএস। তার কয়েক বছর পরেই তাঁর ভবিষ্যদ্বাণী গবেষক এ. সি. অ্যালিসন প্রমাণ করেন।

হ্যালডেন ছিলেন এক অসাধারণ লেখক। একটি বাক্য উদ্ধৃত করবার লোভ সংবরণ করতে পারছি না, “You can drop a mouse down a thousand-yard mine shaft; and, on arriving at the bottom, it gets a slight shock and walks away, provided that the ground is fairly soft. A rat is killed, a man is broken, a horse splashes.”

“আপনি একটি হাজার গজ গভীর খনিখাদের নিচে একটি নেংটি ইঁদুরকে ফেলতে পারেন; এবং নিচে পৌঁছে, নেংটি ইঁদুরটি একটি হালকা ধাক্কা খায় এবং দূরে সরে যায়, অবশ্য শর্ত থাকতে হবে যে মাটি মোটামুটি নরম আছে। একটি ধাড়ি ইঁদুর মারা যায়, একটি মানুষ ভেঙে যায়, একটি ঘোড়া ছিটকে পড়ে।" [অনুবাদ লেখকের]

আমরা সকলেই জানি ওপর থেকে নিচে পড়ার সময়ে একদিকে থাকে মাধ্যাকর্ষণ শক্তি যা বস্তুকে তাদের ভর অনুসারে পৃথিবীর দিকে আকর্ষণ করে। আবার উল্টোদিকে আছে বায়ুগতি (অ্যারোডাইনামিক) প্রতিরোধশক্তি। অর্থাৎ যখন কোনো বস্তু বায়ুমণ্ডলের মধ্যে মুক্ত অবস্থায় থাকে, তখন দুটি বিরোধী শক্তি তার উপর কাজ করেঃ মাধ্যাকর্ষণ এবং বায়বীয় প্রতিরোধ। যত উচ্চতা থেকেই এই পতন হোক, বাতাসের মধ্যে বস্তুর গতি একটা নির্দিষ্ট মানের ওপরে কখনও যায় না। যেহেতু নেংটি ইঁদুরের ক্ষেত্রফল ও ভরের অনুপাত অন্য প্রাণীগুলোর তুলনায় অনেকটা বেশি তাই তার ওপর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির থেকে বায়ুগতি প্রতিরোধশক্তি অনেক বেশি হয় আর তাই সে আঘাত পায় কম কারণ মাটিতে পড়ার সময়ে তার বেগ হয় কম। খুব সংক্ষেপে কার্যকারণ ব্যাখ্যা করতে চেষ্টা করলাম।

এত কথা না বলে হ্যালডেন অর্ধ শতক ধরে বিজ্ঞান অনুরাগীদের জন্য এক কাব্যময় ধাঁধা রেখে গেছিলেন সমাধান করবার জন্য।

শেষের কথা

তাঁর সেরা সময়ে, হ্যালডেন ছিলেন উৎসুক বিজ্ঞানকর্মী, কর্মবীর এবং মানবতাবাদী। তিনি অনুভব করেছিলেন, যেমন আমরা এখন আমাদের শতাব্দীতে চারিদিকে যুদ্ধ দেখে নতুন করে অনুভব করছি, দেশগুলো আসলে ধনী ব্যক্তিদের দ্বারা চালিত আর তারা হল যুদ্ধবাজ; দেশের ক্ষমতায় অধিষ্ঠিতরা ক্ষমতাবানদের সংকীর্ণ স্বার্থকে দেশের মঙ্গলের উর্ধে রাখে।

অবশ্য সোভিয়েতের সময়ে ডারউইনের প্রাকৃতিক নির্বাচনের বিপরীতে লাইসেঙ্কোর ল্যামার্কীয়বাদের সমর্থন এবং স্তালিনের সময়ে বিখ্যাত উদ্ভিদবিজ্ঞানী বিবর্তনবাদী নিকোলাই ভাভিলভ সহ কিছু বিশিষ্ট জীববিজ্ঞানীদের ওপরে দমনমূলক নীতি নিয়ে তিনি বিশেষ কোনো মন্তব্য করেননি। একসময়ে সোভিয়েতের গর্বের বিজ্ঞানী থেকে বিবর্তনবাদী ভাভিলভ অপছন্দের বিজ্ঞানীতে রূপান্তরিত হয়েছিলেন। ভাভিলভকে গ্রেপ্তার করা হয় ও তাঁর মৃত্যুদণ্ড হয়। পরে সাজা কমে হয় কুড়ি বছরের সশ্রম কারাদণ্ড। ভাভিলভ একা নন। ১৯৩৪ সাল থেকে ১৯৪০ সাল পর্যন্ত সোভিয়েত দেশে জীববিজ্ঞানীদের অনেকেই শাস্তি পেয়েছেন। এদের অনেকের বিরুদ্ধে ত্রোফিম লাইসেঙ্কো বা তার অনুচরদের অভিযোগ ছিল, এবং সেই অভিযোগ এদের শাস্তির জন্য অনেকাংশে দায়ী। জেবিএস-এর এই নিশ্চুপ (অ)সমর্থন পরবর্তীকালে যথেষ্ট সমালোচিত হয়েছে। অবশ্য এর পরে তিনি আর সোভিয়েত রাশিয়াতে যাননি। যুদ্ধ শেষে ১৯৫০ সালে তিনি কমিউনিস্ট পার্টি ত্যাগ করেন।

এসব সত্ত্বেও ব্রাজিলিয়ান-ব্রিটিশ জীববিজ্ঞানী এবং নোবেল বিজয়ী পিটার মেদাওয়ার হ্যালডেনকে “আমার পরিচিত সবচেয়ে চতুর (ক্লেভার) মানুষ” বলে অভিহিত করেছেন। আর্নস্ট মেয়ার তাঁকে পলিম্যাথ হিসেবে বর্ণনা করেছেন; মাইকেল জে. ডি. হোয়াইট হ্যালডেনকে “তাঁর প্রজন্মের সবচেয়ে পাণ্ডিত জীববিজ্ঞানী এবং সম্ভবত শতাব্দীর সেরা” হিসেবে চিহ্নিত করেছেন; আর ‘ডিএনএ’-র বিখ্যাত 'ডাবল হেলিক্স মডেল'-এর অন্যতম প্রবক্তা নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত আমেরিকান জীববিজ্ঞানী জেমস ওয়াটসন তাঁকে “ইংল্যান্ডের সবচেয়ে চতুর (ক্লেভার) এবং উদ্ভট জীববিজ্ঞানী” হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

এই বর্ণময় বিজ্ঞানী শুধু প্রাণের উৎসের অনুসন্ধানেই থেমে ছিলেন না, একই সঙ্গে তিনি ছিলেন মহাবিশ্বের উৎপত্তি ও বিকাশ বোঝার চেষ্টায় অনুসন্ধিৎসু। মহাবিশ্ব ক্রমাগত স্ফীত হচ্ছে, হয়ে চলেছে। একসময়ে এই ছুট থামবে, নাকি মহাবিশ্ব সম্প্রসারিত হয়েই চলবে, নাকি এক পর্যায়ে তার মহাসংকোচন (বিগ ক্রাঞ্চ) আরম্ভ হবে, তা নিয়ে গবেষণা চলছে। হয়তো মানব ও মানবোত্তর সভ্যতা যতদিন টিকে থাকবে ততদিন এই চেষ্টা চলবে, কারণ মহাবিশ্ব অনন্ত হোক বা না হোক, তার রহস্য অনন্ত।

জে. বি. এস. হ্যালডেন-এর ভাষায়, “মহাবিশ্বকে বোঝার জন্য আমাদের একমাত্র আশা হল যতটা সম্ভব বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে একে দেখা। ...এখন, আমার নিজের সন্দেহ হয় যে, মহাবিশ্বটি কেবল আমাদের ধারণার চেয়ে অদ্ভুত নয়, আমরা যা অনুমান করতে পারি তার চেয়েও অদ্ভুত।" [অনুবাদ লেখকের]

১৯৬৪ সালে ভুবনেশ্বরে তাঁর দেহান্ত হয়।

৫ই নভেম্বর তাঁর ১৩১তম জন্মবার্ষিকী। আসুন, তাঁকে একবার জানতে চেষ্টা করি, তাঁর বৈজ্ঞানিক ও রাজনৈতিক মতবাদ বুঝতে চেষ্টা করি। তাঁকে স্মরণ করি।


তথ্যসূত্রঃ

১) S. Tirard, “J. B. S. Haldane and the origin of life,” J. Genet, 96, 735–739 (2017)

২) J. B. S. Haldane, “The origin of life,” The Rationalist Annual, 148: 3–10, (1929)

৩) J. B. S. Haldane, “Science and Life, Essays of a Rationalist,” Pemberton Publishing Co. Ltd., in Association with Barrie and Rocklife, (1929)

৪) Bill Bryson, “A Short History of Nearly Everything,” Broadway Books, (2006)

৫) Jonathan Weiner, “The Groundbreaking Scientist Who Risked All in Pursuit of His Beliefs,” The New York Times, July 28, (2020)

৬) Scoville, Heather,“Biography of J. B. S. Haldane.” ThoughtCo, Apr. 5, (2023)