আরেক রকম ● দশম বর্ষ পঞ্চম সংখ্যা ● ১-১৫ মার্চ, ২০২২ ● ১৬-৩০ ফাল্গুন, ১৪২৮

সমসাময়িক

বিচ্ছিন্নতাবাদের আগুন বিষয়ক সতর্কতা


এ যেন এক অলিখিত প্রতিযোগিতা! আসামের মুখ্যমন্ত্রী ৪ঠা ফেব্রুয়ারি নিষিদ্ধ সংগঠন কেএলও-র (কামতাপুরী লিবারেশন অর্গানাইজেশন) দেশান্তরী নেতার সঙ্গে অনলাইনে ভার্চুয়াল আলোচনা করলেন। কয়েকদিন পরেই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত ফেরারি জিসিপিএ-র (গ্রেটার কোচবিহার পিপল্‌স অ্যাসোসিয়েশন) নেতার সঙ্গে একই মঞ্চ থেকে ভাষণ দিলেন।

এই শতাব্দীর সূচনালগ্ন থেকেই কোচবিহার জেলাকে পশ্চিমবঙ্গের থেকে বিচ্ছিন্ন করে আলাদা রাজ্য গড়ে তোলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ‘গ্রেটার কোচবিহার পিপল্‌স অ্যাসোসিয়েশন’ (জিসিপিএ) বা চলতি কথায় গ্রেটার। সংগঠনের মূল দাবি, ১৯৪৯ সালে কোচবিহারের ভারতভুক্তির সময় যে চুক্তি হয়েছিল সেটা নাকি মানা হয়নি। ভারত সরকার কোচবিহারকে জেলা করে রেখেছে। একে আলাদা রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করতে হবে। শুধু কোচবিহার জেলা নয়, নরনারায়ণ রাজা থাকাকালীন রাজ্যের যে আয়তন ছিল, সেটাই ফেরাতে চায় জিসিপিএ। সংগঠনের দাবি অনুযায়ী, উত্তরবঙ্গের করতোয়া নদী থেকে আসামের বেশ কিছু অংশ নিয়ে গ্রেটার কোচবিহারের দাবিদার তারা। সবমিলিয়ে আসাম, পশ্চিমবঙ্গের তো বটেই বাংলাদেশেরও দুটি জেলা নিয়ে 'গ্রেটার কোচবিহার' তৈরির দাবি নিয়ে গ্রেটার যাত্রা শুরু করেছিল। এখন সেই দাবি পূরণের খুব বেশি আশা না থাকলেও, অন্য আরও কিছু দাবি নিয়ে গ্রেটার সরব।

গ্রেটারের নেতা অনন্ত রায় স্বঘোষিত ‘মহারাজ’। নিজেকে রাজা ঘোষণা করাই শুধু নয়, কোচবিহার শহরের কাছেই চকচকা গ্রামে একটি রাজবাড়িও বানিয়েছিলেন তিনি। রাজকীয় জীবনযাত্রাই ছিল একটা সময় পর্যন্ত। অনন্তের অধীনে ‘নারায়ণী সেনা’ নামে পৃথক বাহিনী রয়েছে বলে খবর পায় প্রশাসন। সেই বাহিনী ২০১৬ সালের ২৮ অগস্ট (কোচবিহারের ভারতভুক্তি হওয়ার তারিখ) অনন্তকে ‘গার্ড অব অনার’ দেওয়ার পরিকল্পনা করলে তাতে বাধা দেয় রাজ্য সরকার। ‘নারায়ণী সেনা’কে সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনী (বিএসএফ) প্রশিক্ষণ দেয় বলেও অভিযোগ করা হয়। যদিও সে অভিযোগ বরাবরই নাকচ করেছে বিএসএফ। অনন্ত রায়ের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়। ফলে ২০২০-র অগস্ট মাসের পর থেকে তারপর থেকেই অনন্ত 'মহারাজ' আর সেখানে থাকতে পারেন না। নানা অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতারের জন্য সেই সময় পুলিশ রাজবাড়িতে হানা দিলে তিনি সপরিবারে পালিয়ে যান। তারপর থেকে আসামের চিরাং জেলার সতিবরগাঁও গ্রামে তাঁর বসবাস। তখন থেকেই সাধারণের সঙ্গে যোগাযোগ একেবারে বন্ধ।

রাজবংশী বীর সেনাপতি চিলা রায়ের ৫১২তম জন্মবার্ষিকী উদযাপনের আয়োজক এহেন বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা অনন্ত 'মহারাজ'। তাঁর আমন্ত্রণে একই মঞ্চে উপস্থিত পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাস্থলে আসার পথে সারি দিয়ে স্বেচ্ছাসেবকের ভূমিকা পালন করেছে গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের তরুণ প্রজন্ম। এই স্বেচ্ছাসেবকদের নামকরণ করা হয়েছে ‘নারায়ণী সেনা’। সভাস্থলে আসার পথে মুখ্যমন্ত্রী এদের দেখতে পান। মঞ্চে বক্তৃতাপর্বে তিনি জানান, রাজ্য সরকার যে নারায়ণী ব্যাটেলিয়ান তৈরির প্রক্রিয়া চালাচ্ছে, তাতে নারায়ণী সেনার যুবকদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। মুখ্যমন্ত্রীর প্রস্থানের পর অনন্ত 'মহারাজ' জানিয়েছেন রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা মুখ্যমন্ত্রীর হাতে। তিনি কী করবেন, সেটা তাঁর একান্ত নিজস্ব সিদ্ধান্তের বিষয়। কিন্তু তিনি বা তাঁর সংগঠনের পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে নারায়ণী ব্যাটেলিয়ানে রাজবংশী যুবকদের অগ্রাধিকারের বিষয়ে কোনও দাবি পেশ করা হয়নি। এ বিষয়ে তাঁরা পর্যালোচনা করবেন। গ্রেটার সংগঠনের ছেলেরা নারায়ণী ব্যাটেলিয়নে যোগদান করতে চাইলে, সেটা তারা নিজেরাই সিদ্ধান্ত নেবে।

এখানেই প্রশ্ন ওঠে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধে অভিযুক্ত একটি সংগঠনের কর্মীদের কেন সরকারি নিরাপত্তা বাহিনীতে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হল? তারও আগের প্রশ্ন, স্বঘোষিত 'মহারাজ' অনন্ত রায়ের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকারের দায়ের করা ফৌজদারি মামলাগুলি কি তুলে নেওয়া হয়েছে? যদি প্রত্যাহার করা হয়ে থাকে তবে কবে কী কারণে তোলা হয়েছে? প্রত্যাহৃত না হলে অভিযুক্ত ফেরারি ব্যক্তি আয়োজিত সভায় আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বরাষ্ট্র বিভাগের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী কী বার্তা দিতে চাইছেন?

সরকারের কোনো মন্তব্য নেই। সংবাদমাধ্যম নীরব।

মজার ব্যাপার মুখ্যমন্ত্রী চলে যাওয়ার পর ওই একই মঞ্চে উপস্থিত হয়েছিলেন কোচবিহারের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী নিশীথ প্রামানিক এবং তুফানগঞ্জের বিধায়ক তথা বিজেপি নেত্রী মালতি রাভা রায়। তুফানগঞ্জের বিধায়ক বলেন, ‘‘উত্তরবঙ্গ নিয়ে পৃথক রাজ্য ঘোষণার দাবি তো আমাদের রয়েছেই, এরই সঙ্গে আমাদের দাবি, বীর চিলা রায়ের কাহিনি পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। আমাদের ছেলেমেয়েরা এখন চিলা রায় সম্পর্কে কিছুই জানে না। ওঁদের জানাতে হবে যে, চিলা রায় শুধু কোচবিহার নয়, গোটা ভারতবর্ষের গর্ব।’’ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রীর উপস্থিতিতেই তিনি এই মন্তব্য করেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য অবিশ্যি অত্যন্ত সংযত। সুকৌশলে বিষয়টিকে এড়িয়ে গিয়ে তিনি বাংলা ভাগ নিয়ে সরাসরি কিছু না বললেও ‘কোচবিহারবাসীর মুক্তি’র কথা বলেছেন। একই সঙ্গে 'নারায়ণী রেজিমেন্ট'-এর দাবিও তিনি তুলেছেন।

পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি পরাস্ত হওয়ার পরই আলিপুরদুয়ারের সাংসদ জন বার্লা জুলাই মাসে বঙ্গ ভঙ্গের দাবি তুলেছিলেন। তখন অবশ্য রাজ্য বিভাজনের প্রস্তাব এক কথায় নাকচ করে দেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। জানানো হয় এ প্রস্তাব একান্তই সাংসদের নিজস্ব; দলের এতে কোনও সায় নেই। কিন্তু তারপরেও আলিপুরদুয়ারের সাংসদ একাধিক বার বলেছেন। তাঁর একটাই বক্তব্য, স্থানীয় মানুষের দাবি মেনে উত্তরবঙ্গ বিভাজনের প্রয়োজন রয়েছে।

রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব বিষয়টিকে সাংসদের ব্যক্তিগত মতামত বলে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও বাস্তব চিত্র কিন্তু একেবারেই ভিন্ন। রাজ্য জুড়ে চলতে থাকা বিতর্কের আবহেই জুলাই মাসেই কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু উন্নয়ন মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী হলেন আলিপুরদুয়ারের সাংসদ জন বার্লা। অর্থাৎ বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বুঝিয়ে দেয় যে জন বার্লার আচরণে তারা অসন্তুষ্ট নন। বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব স্বাভাবিকভাবেই এখন নীরব। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হওয়ার পরেও জন বার্লাকে আগের মতোই রাজ্য ভাগাভাগি নিয়ে সুর চড়াতে দেখা গিয়েছে।

এইসব ভয়ঙ্কর বিচ্ছিন্নতাবাদী দাবিদাওয়া নিয়ে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আপত্তি কিংবা প্রতিবাদ জানানো হয়নি। বরং প্রকারান্তরে প্রশ্রয় দেওয়া হয়েছে।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার এর আগেও এমন ঘটনা ঘটিয়েছে। দার্জিলিং-এর বিচ্ছিন্নতাবাদী বিমল গুরুং ধারাবাহিক ভাবে হিংসাশ্রয়ী ঘটনা ঘটিয়ে ফেরার হয়ে যান। কয়েক বছর সরকারি ভাষ্যে নিখোঁজ থাকার পর ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে হঠাৎ করেই প্রকাশ্যে উপস্থিত হলেন। কোথায়? দার্জিলিং শহরে আয়োজিত নির্বাচনী জনসভায়, যে সভার প্রধান বক্তা ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তখনও নয়, এমনকি এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি যে বিমল গুরুং-এর বিরুদ্ধে দায়ের করা ফৌজদারি মামলাগুলি কী অবস্থায় আছে।

১৬ই ফেব্রুয়ারির জনসভার পর অনন্তের বক্তব্য, ‘‘আমরা সব সময় কেন্দ্রের শাসক দলের সঙ্গেই থাকতে চাই। কারণ, আমাদের পৃথক রাজ্যের মূল দাবি পূরণ করতে পারবে কেন্দ্রীয় সরকারই। রাজ্য নয়।’’ এখানকার আবেগ মাথায় রেখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারও তো রাজ্য পুলিশে ‘নারায়ণী ব্যাটালিয়ন‍’ তৈরির কথা ঘোষণা করেছেন প্রসঙ্গে অনন্তের বক্তব্য, ‘‘আমরাই তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিতিয়ে মুখ্যমন্ত্রী করেছি। কিন্তু এখন উনি আমাদের দেশদ্রোহী বলছেন। আমার বিরুদ্ধেও রাষ্ট্রদোহিতার একগুচ্ছ মামলা দিয়ে রেখেছেন।’’

অনন্ত রায় বা জীবন সিংহ সকলের সঙ্গেই কেন্দ্র ও রাজ্যের সুসম্পর্ক বজায় রয়েছে। আসামের হিমন্ত বিশ্বশর্মা বা পশ্চিমবঙ্গের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে এ বিষয়ে কোনো পার্থক্য নেই। দেশান্তরী জীবন সিংহকে হিমন্ত বিশ্বশর্মা পরামর্শ দিয়েছেন যে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দিল্লি গিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে কেএলও-র দাবিদাওয়া নিয়ে একটা ফয়সালা করে নিতে হবে। আর অনন্ত 'মহারাজের' সঙ্গে আলোচনা করার জন্য দেশের অমিত পরাক্রমশালী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গুয়াহাটিতে রাত কাটিয়ে সকাল সকাল হেলিকপ্টার চড়ে বঙ্গাইগাঁও পৌঁছে গাড়ি করে চলে যান আসামের চিরাং জেলার প্রান্তিক গ্রাম সতিবরগাঁও। আলোচনা ও প্রাতরাশ সেরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিদায় নেওয়ার পর অনন্ত 'মহারাজ' কথা প্রসঙ্গে সেদিন সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন যে, হঠাৎ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরসূচি নির্ধারিত হয়নি। ২০২১-এর জানুয়ারিতে তিনি দিল্লি গিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছিলেন। তখনই উনি মহারাজের কিছু কিছু দাবি মেনে নেওয়ার বিষয়ে নাকি সম্মতি দিয়েছিলেন। সেইদিনই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, ফেব্রুয়ারির ১১ তারিখ চিরাং জেলার সতিবরগাঁও গ্রামে এসে বিস্তারিত কথা বলবেন। দিল্লিতে কথা হয়ে যাওয়ার পরেও মাত্র আধ ঘণ্টার আলোচনার জন্য এত পরিশ্রম? এত অর্থ ও সময় বিনিয়োগ?

উত্তর খোঁজার জন্য গবেষণার দরকার নেই। এ সেই সার্বিক কর্মসূচির অঙ্গ। জনৈক বিচ্ছিন্নতাবাদীর সঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাক্ষাৎ প্রকারান্তরে বিচ্ছিন্নতাবাদকে প্রশ্রয় দেওয়া ছাড়া আর কিছুই নয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফর রাজবংশী জনগোষ্ঠীর কাছে এই বার্তাই এনে দিয়েছিল যে দেশের অন্যান্য সমস্যার দিকে নজর না দিলেও চলবে; রাজবংশীদের জন্য পৃথক রাজ্য গঠন এক এবং একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মূল দাবি, 'গ্রেটার কোচবিহার রাজ্য' গঠন ছাড়াও রাজবংশী ভাষার গুরুত্ব বৃদ্ধি, রাজবংশীদের তফসিলি জনজাতি ঘোষণা, ভারতীয় সেনাবাহিনীতে 'নারায়ণী রেজিমেন্ট' তৈরির দাবি-সহ অনেক দাবি নিয়েই নাকি সেদিন আলোচনা হয়েছিল।

রাষ্ট্রদোহিতার অনেকগুলি মামলায় অভিযুক্ত জনৈক বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতার সঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নিভৃতে কী আলোচনা হয়েছিল তার বিস্তারিত বিবরণ সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত না হলেও একটি বিষয় পরিষ্কার; সেদিন প্রচ্ছন্ন ভাবে বিচ্ছিন্নতাবাদকে প্রশ্রয় দেওয়া হয়েছিল।

এই পরিস্থিতিতে ঠিক এক বছর পর ২০২২-এর ১৬ই ফেব্রুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধে অভিযুক্ত 'মহারাজ' আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত হলেন।

সবমিলিয়ে অঙ্ক পরিষ্কার। কোনো জটিলতা নেই। কেন্দ্র ও রাজ্যের শাসক দুই পক্ষই প্রকারান্তরে বিচ্ছিন্নতাবাদকে প্রত্যক্ষ ও প্রচ্ছন্ন ভাবে প্রশ্রয় দিয়ে চলেছে। অথবা বলা যায় বিচ্ছিন্নতাবাদকে প্রশ্রয় দেওয়ার প্রতিযোগিতা চলছে। দুই পক্ষই বোধ হয় খেয়াল করছে না যে আগুন নিয়ে খেলতে গেলে হাত পুড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা পুরো একশো শতাংশ। এ এক ভয়ঙ্কর প্রবণতা। সংবাদমাধ্যম ও রাজনৈতিক দলগুলোর চূড়ান্ত নীরবতায় কেন্দ্র ও রাজ্যের শাসক আরও বেশি করে বিচ্ছিন্নতাবাদের সঙ্গে সমঝোতার সুযোগ পেয়ে যাচ্ছে। এখনই এই বিপজ্জনক প্রবণতার বিরুদ্ধে রুখে না দাঁড়ালে দিনের শেষে বিচ্ছিন্নতাবাদের আগুন থেকে দেশ এবং রাজ্যকে রক্ষা করা যাবে না।