আরেক রকম ● দশম বর্ষ চতুর্বিংশ সংখ্যা ● ১৬-৩১ ডিসেম্বর, ২০২২ ● ১-১৫ পৌষ, ১৪২৯

প্রবন্ধ

বিবর্তন ও মানুষের রোগ

জয়ন্ত দাস


বিবর্তন কথাটা আমাদের অপরিচিত নয়। তবে মানুষের রোগের সঙ্গে বিবর্তন ঠিক কীভাবে সম্পর্কিত, সেটা একটু নতুন বিষয় মনে হতে পারে। বিবর্তন বলতে বোঝায় সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তন। জৈবিক বিবর্তনের ফলে পৃথিবীর ইতিহাসে বিভিন্ন ধরণের জীবের বিকাশ ঘটেছে। অবশ্য জৈবিক বিবর্তন ছাড়াও অন্যভাবেও বিবর্তন কথাটাকে ব্যবহার করা হয়, যেমন সংস্কৃতিক বিবর্তন।

জৈবিক বিবর্তন

জৈবিক বিবর্তনের ফলে একটি জীব বদলে যায়। বেশি বদল হলে একধরনের জীব থেকে অন্য ধরনের জীবের উৎপত্তি হয়। মানুষের মধ্যে জৈবিক বিবর্তনের উদাহরণ দেওয়া তেমন শক্ত নয়। আজ থেকে দশ হাজার বছর আগে, যখন মানুষ পশুপালন শেখেনি, তখন বাচ্চারা মায়ের দুধ খেয়ে হজম করতে পারত। জীবনের প্রথম দু-তিন বছরের পরে সে দুধ খাওয়া ছেড়ে দিত। প্রাপ্তবয়স্ক হবার সময় ও তার পরে সে দুধ খেতে পেত না। যখন দুধ পেত না তখন তা হজম করার ব্যবস্থাও কাজে লাগত না এবং সেই ক্ষমতা লুপ্ত হয়ে যেত। ফলে প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ দুধ হজম করতে পারত না। তবে পশুপালন শুরু করার পরে আস্তে আস্তে দেখা গেল, অনেক মানুষের শরীরে দুধ হজমের ক্ষমতা প্রাপ্তবয়স্ক হবার পরেও রয়ে যাচ্ছে। প্রাপ্তবয়স্করা দুধ হজম করবার ক্ষমতা বজায় রাখছে, মানুষ ঘোড়া-গরু-ছাগল ইত্যাদি পালিত পশুর দুধ বেশি বয়সেও হজম করতে পারছে।

কেমন করে এই পরিবর্তন ঘটল? এটা একটা জিনগত মিউটেশন। জিন নিয়ে আমরা বিস্তারিত বলব না, শুধু বলব, জিন হল বংশগতির মৌলিক একক। তা বাবা-মায়ের কাছ থেকে সন্তানের শরীরে যায়। বাবার শুক্রাণু আর মায়ের ডিম্বাণুর মিলনে বাচ্চার প্রথম কোষ তৈরি হয়। শুক্রাণু আর ডিম্বাণুর মধ্যে দিয়ে বাবা আর মায়ের জিন ছেলে বা মেয়ের শরীরে যায়। জিন আমাদের শরীরের নানা কাজকর্ম করার ক্ষমতাকে অনেকটা নিয়ন্ত্রণ করে। অর্থাৎ আমরা কম বয়সেই কেবলমাত্র দুধ হজম করতে পারব, নাকি বেশি বয়স পর্যন্ত পারব, এটা জিন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। জিন বদলে যাবার ফলে বংশানুক্রমিক ভাবে দুধ হজম করার ক্ষমতা বদলে গেছে।

এই বংশানুক্রমিক বদলটা হল ছোটখাট এক বিবর্তন। এটা মাত্র কয়েক হাজার বছরের মধ্যে ঘটে গেছে। ৭০-৮০ লক্ষ বছর আগেকার কথা ভাবলে আমরা বড় মাপের বিবর্তন দেখতে পাব। সেই সময়ে মানুষ ছিল না, ছিল কিছু বনমানুষ ধরনের প্রাণী। তাদের থেকে অনেক ধাপে বিবর্তনের ফলে মানুষ এসেছে। এটা অনেক বড় পরিবর্তন। একটা-দুটো জিনগত পরিবর্তনের ফলে এতখানি বিবর্তন ঘটেনি, অনেকগুলো জিন পরিবর্তন বা মিউটেশন লেগেছে। জিনগত পরিবর্তনের ফলে প্রথমে সেই বনমানুষদের একটা অংশ বংশানুক্রমিকভাবে বদলে গেল ও দুপায়ে হাঁটাচলা শুরু করল। দুপায়ে যারা দাঁড়াতে শিখল তাদের একটা অংশের মধ্যে আরও অনেক জিনগত পরিবর্তনের ফলে এল আমাদের মতো আধুনিক মানুষ বা হোমো সেপিয়েন্স।

যে কোনও বয়সে দুধ খেয়ে হজম করার সক্ষমতা হল ছোট একটা বংশানুক্রমিক বা জিনগত পরিবর্তন। আর বনমানুষের মত কোনও প্রাণী থেকে মানুষ হওয়া হল অনেক বড় জিনগত পরিবর্তন, একটা প্রজাতি থেকে সম্পূর্ণ নতুন একটা প্রজাতির উদ্ভব। লক্ষ্য করার বিষয় হল, এসব পরিবর্তন জিনগত, অর্থাৎ মানুষের কোষের একটি ক্ষুদ্র অণুতে ঘটছে। জিন বদলে যেতে পারে, তাকে বলে মিউটেশন। জিনগত পরিবর্তন বা মিউটেশন ঘটে যাদৃচ্ছিকভাবে তথা random-ভাবে। জিন-বাহকের ওপর ভাল প্রভাব পড়বে কিনা, সে সব ভেবেচিন্তে মিউটেশন হয় না। অধিকাংশ মিউটেশনই মানুষের শরীরের ওপর খারাপ প্রভাব ফেলে, বা কোনও প্রভাব ফেলে না। বিরল কিছু মিউটেশন মানুষকে পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে বাঁচতে সুবিধা দেয়। সেই সুবিধাজনক মিউটেশন-যুক্ত জিনগুলো কিছু মানুষ বংশানুক্রমিকভাবে পায়। তারা সুবিধাজনকভাবে পরিবর্তিত হয় ও টিকে থাকে, বা ‘নির্বাচিত’ হয়। সুবিধাজনক বৈশিষ্ট্যযুক্ত জীবগোষ্ঠীর এই নির্বাচিত হওয়াকে বলে ‘প্রাকৃতিক নির্বাচন’। আবার, বিশেষ বৈশিষ্ট্যদায়ী জিন ও জিনগত বৈশিষ্ট্যের নির্বাচনকেও প্রাকৃতিক নির্বাচন বলে।

লক্ষ্য করার বিষয় হল, পশুপালক গোষ্ঠীদের মধ্যে মিউটেশনের ফলে জিনের এমন পরিবর্তন ঘটল যে, নতুন ‘মিউট্যান্ট’ জিন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের শরীরেও দুধ হজম করার ক্ষমতা দিল। পশুপালন শুরুর আগে একই মিউটেশন ঘটে থাকলেও তা মানুষকে কোনও সুবিধা দেয়নি এবং মিউট্যান্ট জিনটি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। পশুপালন শুরু হবার পরে ইউরোপীয়দের মধ্যে এরকম একটি মিউটেশন ঘটেছিল। আলাদা করে আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যে একাধিক এই রকমের মিউটেশন ঘটেছিল। তখন প্রাপ্তবয়স্কদের দুধ খেতে পাবার সুযোগ ছিল, তাই এই মিউটেশন সুবিধা দিয়েছিল ও প্রাচীন মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছিল। জিনের এইরকম উপকারী মিউটেশন খুব বিরল। অধিকাংশ মিউটেশন ক্ষতিকর, বা লাভক্ষতি কোনোটাই করে না। কিন্তু এই লাভজনক মিউটেশন একবার পশুপালক মানুষের সমাজে একজনের মধ্যে চলে এলে, সে দুধ থেকে অতিরিক্ত পুষ্টি লাভ করতে পারল। অন্যদের চেয়ে তার স্বাস্থ্য ভাল হল, এবং তার সন্তান সংখ্যা গড়পড়তায় বেশি হল। সেই সন্তানদের মধ্যে এই বেশি বয়সে দুধ হজমের জিন উত্তরাধিকার সূত্রে চলে গেল। তাদের সন্তান বেশি হল। এইভাবে প্রাপ্তবয়স্কদের দুধ হজমের বৈশিষ্ট্য ছড়িয়ে পড়ল।

এটাই হল ‘প্রাকৃতিক নির্বাচন’ বা ন্যাচারাল সিলেকশন। সুবিধাজনক বৈশিষ্টগুলো একটা জনসমষ্টির মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। সেই বৈশিষ্ট্য উত্তরাধিকার সূত্রেই কেবল ছড়াতে পারে, কারণ সেই বৈশিষ্ট্যের জন্য কোনো জিন দায়ী। সেই জিনটাও জনগোষ্ঠীতে এভাবে ছড়িয়ে পড়ে। একে বলে প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে বিবর্তন।

জীবাণু জগতে বিবর্তন

জীবাণুরা অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী হয়ে উঠছে। এটা প্রাকৃতিক নির্বাচন ও তার থেকে বিবর্তনের আদর্শ উদাহরণ। পেনিসিলিন হল মানুষের আবিষ্কার করা প্রথম অ্যান্টিবায়োটিক। ১৯৪১ সাল নাগাদ যখন পেনিসিলিন ওষুধটা প্রথম ব্যাপকভাবে প্রয়োগ করা শুরু হল, তখন প্রায় সমস্ত ব্যাকটেরিয়া এই ওষুধে মারা পড়ত। ডাক্তারেরা মহা খুশি, এই একটা অস্ত্রে অনেক জীবাণুকে চিরদিনই ঘায়েল করা যাবে। কিন্তু কয়েক বছরের মধ্যেই দেখা গেল, পেনিসিলিন দিলেও অনেক ব্যাকটেরিয়া মরছে না। যেমন স্ট্যাফাইলোকক্কাস জীবাণু - এই জীবাণুর সংক্রমণ আমাদের ঘা বিষিয়ে দেয়। প্রথমদিকে পেনিসিলিন দিলেই স্ট্যাফাইলোকক্কাস সংক্রামিত ঘা সেরে যেত। কিন্তু পরে স্ট্যাফাইলোকক্কাস জীবাণুরা প্রায় সবই পেনিসিলিন প্রতিরোধী হয়ে গেল। এখন শতকরা ৫ ভাগ স্ট্যাফাইলোকক্কাসও পেনিসিলিনে মরে না।

‘পেনিসিলিনেজ’ নামক একটা রাসায়নিক পেনিসিলিনকে অকার্যকর করে দেয়। মিউটেশনের ফলে একটা জীবাণুর এমন একটা নতুন জিন তৈরি হল যা পেনিসিলিনেজ তৈরি করে। (পাদটীকা ১) আমরা বলব পেনিসিলিনেজ জিন। সেই পেনিসিলিনেজ জিন-যুক্ত জীবাণু পেনিসিলিন দিলেও মরল না। ব্যাকটেরিয়ার মত জীবাণুদের যৌন জনন হয় না, তাদের বাবা-মা নেই। কিন্তু তাদের বিভাজন হয়, অর্থাৎ একটা থেকে দুটো, দুটো থেকে চারটে, এরকম করে তাদের সংখ্যা বাড়ে। একটা ব্যাকটেরিয়া থেকে যতগুলো ব্যাকটেরিয়া এভাবে জন্মায় তাদের সবার মধ্যে আদি ব্যাকটেরিয়াটির জিন থাকে।

কল্পনা করুন একটা মানুষের দেহে কোটি কোটি স্ট্যাফাইলোকক্কাস ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ করেছে। তাদের মধ্যে একটি ব্যাকটেরিয়া পেনিসিলিনেজ তৈরি করতে পারে। এবার চিকিৎসক পেনিসিলিন প্রয়োগ করলেন। সব স্ট্যাফাইলোকক্কাস ব্যাকটেরিয়া মরে গেল, বেঁচে রইল একটা। তার পেনিসিলিনেজ তৈরির জিন আছে। সে বংশবৃদ্ধি করল, তার ‘বাচ্চারা’ সব পেনিসিলিনেজ তৈরির জিন নিয়ে জন্মাল। এইভাবে অন্য সব স্ট্যাফাইলোকক্কাস মরে গেল, কেবল পেনিসিলিনেজ তৈরি-করা স্ট্যাফাইলোকক্কাসগুলো বেঁচে রইল। পেনিসিলিন তাদের মারতে পারে না। এইভাবে যত পেনিসিলিন ব্যবহার বাড়ল তত বেশি করে ব্যাকটেরিয়াগুলো পেনিসিলিন প্রতিরোধী হয়ে উঠল। শুধু পেনিসিলিন নয়, বা শুধু স্ট্যাফাইলোকক্কাস নয়। বিজ্ঞানীরা নতুন নতুন অ্যান্টিবায়োটিক বের করছেন আর ব্যাকটেরিয়া সেগুলোতে নানা কায়দায় প্রতিরোধী হয়ে পড়ছে। ই. কোলাই, বা যক্ষ্ণারোগের জীবাণু - এরা অ্যান্টিবায়োটিকে মরছে না। এটা জীবাণুদের পক্ষে চমৎকার বিবর্তন, কিন্তু আমাদের পক্ষে খারাপ খবর।

সাংস্কৃতিক বিবর্তন ও রোগ

জৈবিক বিবর্তন ছাড়া আরেক ধরনের বিবর্তন আছে, সেটা হল সাংস্কৃতিক বিবর্তন। সাংস্কৃতিক বিবর্তন জিনের মাধ্যমে পরিবাহিত হয় না, বা কেবল বাবা-মার থেকেই সন্তানের কাছে যায়, এমনও নয়। কিন্তু এই বিবর্তন ঘটছে বলেই সমাজ বদলাচ্ছে। যেমন আমরা আগে ল্যান্ডলাইন টেলিফোনে কথা বলতাম। সেই টেলিফোন আমাদের সমাজের ওপরে বা আমাদের আচরণের ওপরে কিছু সুনির্দিষ্ট প্রভাব ফেলেছিল। তারপর হাতে এল মোবাইল টেলিফোন। মোবাইল ফোন ল্যান্ডলাইন টেলিফোন থেকে অনেক কিছুই উত্তরাধিকার সূত্রে গ্রহণ করল। কিন্তু এটা ল্যান্ডলাইনের চেয়ে বেশি সুবিধাজনক হল। মোবাইল ফোন আমাদের সমাজকে বিশেষভাবে প্রভাবিত করল, আমাদের জীবনযাত্রা বদলে দিল। এটা হল সংস্কৃতিক বিবর্তনের একটা উদাহরণ।

এবার বড়মাপের সাংস্কৃতিক বিবর্তনের কথা ভাবা যাক। মানব-ইতিহাসে ও প্রাগিতিহাসে সাংস্কৃতিক বিবর্তনের মোটা দাগের কয়েকটা পর্যায় আছে।

প্রথম পর্যায় হল শারীরবৃত্তীয়ভাবে আধুনিক মানুষ বা হোমো সেপিয়েন্স-এর উদ্ভব। আজ থেকে মোটামুটি ৩ লক্ষ বছরের বেশি আগে আধুনিক মানুষ উদ্ভূত হয়েছিল। তারা শিকার এবং সংগ্রহের মাধ্যমে খাদ্য সংগ্রহ করত। তাদের মধ্যে ভাষা উদ্ভূত হল, তারা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ল।

দ্বিতীয় পর্যায় শুরু হল মোটামুটি ১০-১২ হাজার বছর আগে, কৃষির উদ্ভব থেকে। শিকার এবং সংগ্রহের পরিবর্তে মানুষ চাষের মাধ্যমে খাদ্য উৎপাদন করতে শুরু করল।

তৃতীয় পর্যায় শুরু হল শিল্পবিপ্লবের আমল থেকে। যেদিন থেকে যন্ত্র মানুষের দৈহিক কাজ করে দিতে শুরু করল, সেদিন থেকে আমরা শিল্পবিপ্লবের গোড়াপত্তন ধরতে পারি। এখন আমরা শিল্পবিপ্লবের পরের দিকে বাস করছি। হয়তো তথ্যপ্রযুক্তির বিপ্লব ও উৎপাদন-শিল্পের তুলনায় পরিষেবা ক্ষেত্রের গুরুত্ব বৃদ্ধিকে সাংস্কৃতিক বিবর্তনের চতুর্থ পর্যায় বলা যায়। নানা পর্যায়ে মানুষের জীবনযাত্রা বদলে যাচ্ছে - একে আমরা সাংস্কৃতিক বিবর্তন বলব।

আমাদের চেহারা বা আমাদের শরীরের ভেতর ও বাইরের কাজকর্ম তিন লক্ষ বছর ধরে তেমন বদলায়নি। ১ লক্ষ বছর আগেকার শিকারি-সংগ্রাহক মানুষের সদ্যোজাত শিশুকে যদি টাইম মেশিনে করে এনে আজকের সমাজে বড় করা হয় তাহলে অন্য পাঁচজনের থেকে তাকে আলাদা করে চেনা যাবে না। সে স্কুলে যাবে, মোবাইল ফোনে কথা বলবে এবং কালক্রমে হয়ত উকিল বা শিল্পী বা মোটর মেকানিক হয়ে উঠবে। কিন্তু কৃষির উদভাবন, শিল্পবিপ্লব এবং আধুনিক শিল্পবিপ্লবের ফলে আমাদের জীবনযাত্রা বদলে গেছে। দেহ বদলায়নি, কিন্তু পরিবেশ বদলে গেছে। মানুষ নিজেই নিজের পরিবেশ বদলে ফেলেছে। এ হল সাংস্কৃতিক বিবর্তনের ফল।

সাংস্কৃতিক বিবর্তনের ফলে মানুষের অসুখের চালচিত্র বদলে গেছে। দ্রুত সাংস্কৃতিক বিবর্তন আর ধীর লয়ে চলা জৈবিক বিবর্তনের মধ্যে ফারাক তৈরি হয়েছে, তার ফলে পুরনো অসুখের অনেকগুলো কমে গেছে, আবার নানা নতুন রোগ দেখা দিয়েছে। জৈবিক বিবর্তনের তুলনায় সাংস্কৃতিক বিবর্তন খুব দ্রুত হয়। মাত্র ১২ হাজার বছর আগে মানুষের জীবনযাত্রা অকল্পনীয় রকমের ভিন্ন ছিল। প্রাচীন মানুষ শিকার করে আর কুড়িয়ে বাড়িয়ে খাদ্য সংগ্রহ করত। তাদের প্রচুর শারীরিক পরিশ্রম করতে হত, আর খাদ্যের অনিশ্চয়তা ছিল খুব বেশি। এখন গড়পড়তা মানুষের খাটুনি তার চাইতে অনেক কম। অন্যদিকে, একটা বড় সংখ্যক মানুষের কাছে খাদ্য সহজলভ্য। অনেকের কাছে সুষম খাদ্য সহজলভ্য না হলেও খাদ্যের শক্তি মুল্য বা ক্যালোরি সহজলভ্য।

দৈহিক পরিশ্রমের জন্য ক্যালোরি দরকার। মানুষের শরীরের বিবর্তন এমনভাবে হয়েছে যে, সে বেশি পরিশ্রম করতে আর বেশি ক্যালোরির খাদ্য খেতে জৈবিকভাবে তৈরি। সেটাই তার জৈবিক বিবর্তনের ফল। এখনও মানুষের জৈবিক শরীর সেই একই রকমের আছে। কিন্তু এখন আমাদের শারীরিক পরিশ্রম কমে গেছে, অন্যদিকে অধিকাংশ মানুষের কাছে খাদ্য থেকে ক্যালোরি সহজপ্রাপ্য। এর ফলে নানা রোগ হচ্ছে। যেমন স্থূলতা, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হার্টের রোগ, স্ট্রোক। এগুলোকে আমরা ইভোলিউশনারি মিসম্যাচ রোগ বা বিবর্তনীয় গরমিলজনিত রোগ বলি।

খাদ্য ছাড়াও অন্য কিছু কারণে বিবর্তনীয় গরমিলজনিত রোগ হয়। যেমন কোষ্ঠকাঠিন্য, অ্যাসিড রিফ্লাক্স, ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম, মায়োপিয়া, আর্থ্রাইটিস, পিঠের নিচে ব্যথা (LBP), কিডনির রোগ, কয়েক ধরনের ক্যান্সার। এছাড়া আছে নানা মানসিক রোগ ও সমস্যা, যেমন বিষণ্নতা, উদ্বেগ, ইনসম্নিয়া। এগুলো নিয়ে গবেষণা করে বোঝা গেছে, আজকের পরিবেশে মানুষের দেহ মানিয়ে নিতে পারছে না বলে এই রোগগুলো বেশি হচ্ছে। প্রশ্ন আসে, যখন মানুষ কৃষিকাজ শেখেনি, তখন তাদের গড় আয়ু কম ছিল। যে সব অসুখ বেশি বয়সে হয়, প্রাচীন শিকারি-সংগ্রাহক মানুষের মধ্যে সে সব অসুখ বেশি ছিল না। মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে, তাই ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হার্টের রোগ বেড়েছে। একেবারে কম বয়সে মারা গেলে এসব রোগ দেখা দেবার সময় পেত না।

এখানে কয়েকটা কথা ভাবার আছে।

প্রথমত, আজকে শিকারি-সংগ্রাহক যে সব মানুষ আছেন, তাদের বেশি বয়সেও এই রকম রোগ হয় না, বা খুব কম হয়। দ্বিতীয়ত, ক্রমশ কম-বয়সীদের মধ্যে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হার্টের রোগ এসব বাড়ছে। তৃতীয়ত, ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম, অ্যাসিডে গলা বুক জ্বালা, মায়োপিয়া, পিঠের নিচে ব্যথা ও নানা মানসিক রোগ ও সমস্যা, এগুলো অনেক সময়েই কম-বয়সীদেরই সমস্যা। তাই বলা যায় সত্যিই এই মিসম্যাচ ডিজিজ বা বিবর্তনীয় গরমিলজনিত অসুখ বাড়ছে।

স্থূলত্ব বনাম অপুষ্টি

অত্যাধিক খাবার জন্য স্থূলত্ব হচ্ছে, এবং স্থূলত্ব থেকে ডায়াবেটিস, হৃদযন্ত্রের রোগ, স্ট্রোক ও অন্যান্য নানারকমের অসুখ হচ্ছে। অন্যদিকে, কম খেয়ে অনেক মানুষ অপুষ্টির শিকার হচ্ছেন। পৃথিবীতে ও ভারতে খাদ্য উৎপাদন বেড়েছে, কিন্তু এখনও সবাইকে খাওয়াবার মত যথেষ্ট খাদ্য উৎপাদিত হয় কি? রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিজস্ব সংবাদে জানানো হচ্ছে, “এই গ্রহের প্রত্যেককে খাওয়ানোর জন্য যথেষ্ট খাদ্য আজ উত্পাদিত হয়, কিন্তু বিশ্বের কিছু অংশে ক্ষুধা বাড়ছে, এবং প্রায় ৮২.১ কোটি মানুষ ‘দীর্ঘস্থায়ীভাবে অপুষ্টির শিকার’ বলে মনে করা হয়।” (তথ্যসূত্র ২) কিছু আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মতে অপুষ্টির হার আরও বেশি। একই সময়ে বিশ্বে শতকরা ৩৯ ভাগ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ওজন বেশি। যাদের ওজন অল্পমাত্রায় বেশি তাদের বলা হয় বেশি-ওজন বা ওভারওয়েট, আর খুব বেশি ওজন হলে তাদের স্থূল বা ওবিস বলা হয়। বর্তমান মোট জনসংখ্যার শতকরা ১৩ ভাগ হল স্থূল। (তথ্যসূত্র ৩, ৪) ২০১৫ সাল থেকে বিশ্বে ক্ষুধার্তের সংখ্যা বাড়ছে, কিন্তু স্থূলত্বও কমছে না, বরং বাড়ছে।

রাষ্ট্রসঙ্ঘের সংস্থা ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন জানাচ্ছে, আমাদের দেশে অন্তত ১৯ কোটি মানুষ ক্ষুধার শিকার। পৃথিবীর সমস্ত ক্ষুধার্ত মানুষের এক-চতুর্থাংশ আমাদের দেশে থাকেন। (তথ্যসূত্র ৫) খাদ্য উৎপাদন জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে তাল রাখতে পারছে না, এবং তার থেকেও বড় কথা হল উৎপন্ন খাদ্য কিনে খাবার মত পয়সা এক বিরাট অংশের মানুষের কাছে নেই। ভারতে সরকারি সমীক্ষা বলছে ভারতে ৫ বছরের নীচে শিশুদের ৩৫ শতাংশ অপুষ্টির শিকার, প্রাপ্তবয়স্ক নারীদের ১৮ শতাংশ অপুষ্ট। কোভিড মহামারীর সময় থেকে অপুষ্টি বাড়ছে।

কেউ কেউ বেশি খায় এবং স্থূল হয়, সেজন্যেই অন্যদের ক্ষুধা অপুষ্টি থাকে, এটা পুরো মিথ্যে নয়। রাষ্ট্রসংঘ তার ওয়েবসাইটে বলছে, বিশ্বে মোট খাদ্য উৎপাদনের ১৭ শতাংশ অপচয় হয়। গৃহস্থালিতে ১১ শতাংশ, খাদ্য পরিষেবায় ৫ শতাংশ এবং খুচরো বিক্রির সময় ২ শতাংশ নষ্ট। এই নষ্টের হিসেবে একটা নষ্ট বাদ পড়ে যায়, সেটা হল খেয়ে নষ্ট। যেটা আপনার খাওয়া প্রয়োজন তার চাইতে বেশি খেলে সেই খাদ্যটা শুধু নষ্ট হল তাই নয়, সেটা আপনার শরীরের ক্ষতি করল। অন্যদিকে আরেকজন খেতে পেল না। বিশ্বে ১০০ কোটির বেশি মানুষ স্থূলকায় (obese), ওভারওয়েট আরও বেশি। ৩৪ কোটি বালক-বালিকা, ৪ কোটি শিশু স্থূল। সংখ্যাটা বাড়ছে। ভারতেও স্থূলতা যথেষ্ট। একটা সমীক্ষায় দেখা গেছে, ভারতে শহরাঞ্চলে ৪০ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক স্থূলকায়।

স্থূলত্ব কেবল বড়লোকের সমস্যা নয়, তা গরীবদের আক্রমণ করছে। তার সঙ্গে ডায়াবেটিস হার্টের রোগ এসব পিছু পিছু আসছে। আমেরিকার পরিসংখ্যান বলছে, ওদেশের সব চেয়ে গরীব জনগোষ্ঠী হলেন কালো নারীরা, আর তাদের মধ্যে স্থূলত্ব সব চাইতে বেশি। আমাদের দেশে এরকম সরকারি পরিসংখ্যান নেই, বা থাকলেও সহজলভ্য নয়, তবে এদেশেও গরীবদের স্থূলত্ব বাড়ছে। গরীবেরা অনেক সময় উচ্চ ক্যালোরির খাদ্য কম দামে পান, তাতে অন্য পুষ্টিমূল্য কম। যেমন ফাস্ট ফুড, জাংক ফুড। তাতে স্থূলত্ব বাড়ে এবং শরীর কমজোরিও হয়ে পড়ে।

প্রক্রিয়াজাত চটজলদি খাদ্য

এটা একটা বড় সমস্যা। প্রক্রিয়াজাত খাদ্য শরীরের পক্ষে ভাল নয়, তাতে চিনি, তেল-চর্বি, নুন বেশি, ফাইবার ও ভিটামিন কম। যেমন কোক-পেপসি-কেক-প্যাস্ট্রি-পিৎজা-বার্গার-পপকর্ন-পটেটো-চিপস থেকে রসগোল্লা-সন্দেশ-জিলিপি-সিঙ্গাড়া-চানাচুর বা টু-মিনিট নুডলস, চপ-কাটলেট-এগরোল-মোগলাই, এমনকি বেশি চিনি দেওয়া চা আর পাঁউরুটি। হ্যাঁ, সঙ্গে ঝোলা গুড় দিলেও। এগুলো ক্ষতিকর, কিন্তু মানুষ ঠিক এধরনের খাদ্যই খেতে চান। সেটা তাঁদের দোষ নয়।

আমাদের দেহ গড়ে উঠেছে অনেক আগে, তখন মানুষ ছিল শিকারি ও সংগ্রাহক। বেশি ক্যালোরির খাদ্য সে পেত না, সে সাধারণত ক্যালোরি-সংকটে ভুগত। ফলে বেশি ক্যালোরির খাদ্য সে ভালবাসত, কারণ সে রকম খাদ্য তাকে বাঁচিয়ে রাখত। প্রক্রিয়াজাত খাদ্য বা ফাস্ট ফুড, জাংক ফুডে ঠিক এইধরনের বেশি ক্যালোরির উপাদানই আছে। তাতে শর্করা, তেল, চর্বি বেশি, অন্যদিকে ভিটামিন ও খাদ্যের ফাইবার কম। তার ওপরে, এদেশের অধিকাংশ সস্তা প্রক্রিয়াজাত খাদ্যে প্রোটিনও কম আছে। ফলে শরীরে বেশি ক্যালোরি ঢুকছে, অতিরিক্ত ক্যালোরি ফ্যাট হয়ে শরীরে জমছে। মিষ্টি বা শর্করা বেশি খাবার ফলে ডায়াবেটিস হচ্ছে। তেল-চর্বি বেশি খাবার ফলে চর্বি ও কোলেস্টেরল বাড়ছে, হার্টের রোগ, স্ট্রোক ইত্যাদি বাড়ছে। আর এসব খাদ্যের অনেকগুলোতে বেশি নুন থাকে। নুনে কিন্তু কোনও ক্যালোরি নেই, আছে সোডিয়াম। শিকারি সংগ্রাহক পূর্বসূরিদের জীবনে সথেষ্ট সোডিয়াম বা নুন পাওয়া কঠিন ছিল, তাই আমাদের নুন খেতে ভাল লাগে। কিন্তু বর্তমানকালে খাদ্যে নুনের পরিমাণ প্রয়োজনের চাইতে বেশি, এমনকি আমাদের দেহের জন্য দেহ যতটা নুন নিরাপদ, তার চাইতেও আমাদের খাদ্য বেশি নুন থাকছে। অতিরিক্ত নুন আমাদের প্রেসার বাড়ায়, কিডনির ক্ষতি করে।

আদিম যুগে ফেরা

অনেকে ভাবেন, সাংস্কৃতিক বিবর্তনের ফলে পরিবেশ বদলাচ্ছে বটে, কিন্তু আমাদের শরীরও নিশ্চয়ই বদলাচ্ছে। একদিন সেই বদলানো শরীর বদলে-যাওয়া পরিবেশকে ধরে ফেলবে। অনেকে কল্পনা করেন, মাথার কাজ বাড়ছে আর শরীরের কাজ কমছে - অতএব প্রাকৃতিক নির্বাচন-জনিত বিবর্তন একদিন আমাদের উত্তর-প্রজন্মের মানুষদের লিকপিকে হাত-পা আর বিরাট মাথার মালিক করে তুলবে। বাস্তবে তা হওয়া সম্ভব নয়। সাংস্কৃতিক বিবর্তন দ্রুত হয়, জৈবিক বিবর্তন হয় ধীরে। শুধু তাই নয়, প্রাকৃতিক নির্বাচন প্রজনন-সাফল্যের ওপর নির্ভর করে। বিরাট বড় মাথা থাকলেই তাদের বাচ্চাকাচ্চা খুব বেশি হয়, এমন প্রমাণ নেই। সুতরাং আমাদের শারীরিক বিবর্তন কোনোদিনই সাংস্কৃতিক বিবর্তনের ফলে জীবনযাত্রার সমস্ত পরিবর্তনের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারবে না। বিবর্তনীয় গরমিল গত ৫০ বছরে দ্রুত বেড়েছে, সামনের ২৫ বছরে তার চাইতেও দ্রুতহারে বাড়বে। তাহলে আমরা কি সভ্যতা ত্যাগ করবে? আদিম যুগে ফিরে যাব?

মিসম্যাচ ডিজিজ তথা গরমিল-জনিত অসুখ আদিম যুগে ছিল না বটে, কিন্তু সে বড় সুখের সময় ছিল না। প্রতিদিন ১০-১৫ কিলোমিটার দৌড়াদৌড়ি করে আধপেটা খেয়ে থাকার বিকল্পটি ক’জন বেছে নেবেন? পেটের গণ্ডগোলে বা সামান্য জ্বর-ব্যাধিতে বা বাঘের পেটে গিয়ে মরে গেলে যাদের তেমন আপত্তি নেই তারা নিশ্চয়ই বলবেন, দাও ফিরে সে অরণ্য, লও এ নগর! কিন্তু তাদের জন্যেও আরেকটা সমস্যা আছে। জাদুবলে পৃথিবীকে এক লক্ষ বছর পিছিয়ে নিয়ে মানুষকে শিকারি সংগ্রাহক জীবনে ফিরিয়ে নেওয়া যদি-বা যায়, সেই পৃথিবীতে মাত্র দু-এক কোটি মানুষের খাদ্য-সংস্থান হবে। শিকারি-সংগ্রাহক জীবনের জন্য মাথাপিছু অনেক বেশি অরণ্যভূমি অত্যাবশ্যক। এমনকি শিল্পবিপ্লবের আগেকার কৃষিযুগে ফিরে গেলে সেই সময়ের কৃষির দ্বারা সারা বিশ্বে ১০০ কোটি মানুষের অন্ন জুটতে পারে। আজকের ভারতের মানুষদের খাওয়াতেই গোটা একটা পৃথিবীর বেশি জায়গা লাগবে। অতএব সে রাস্তা একেবারেই বন্ধ।

কিন্তু সে রাস্তায় হাঁটার দরকারই বা কী? মানুষের দেহ-মন একটা বিশেষ পরিবেশে গড়ে উঠেছে, কিন্তু ঠিক সেই পরিবেশই তার লাগবে এমন নয়। সে অন্য পরিবেশে দিব্যি থেকে এসেছে ও তার বংশবৃদ্ধি হয়েছে, গড় আয়ু বেড়েছে। অবশ্য সম্প্রতি গড় আয়ু কমতে শুরু করেছে - যেমন আমেরিকাতে ২০১৯ থেকে ২০২১ সালে পরপর দু’বছর গড় আয়ু কমেছে। (তথ্যসূত্র ৬) এটা সরকারি তথ্য। বিবর্তনীয় গরমিলজনিত অসুখগুলোই তার জন্য দায়ী। এই রোগগুলোর ফলে দীর্ঘ রোগভোগ ও আর্থিক কষ্ট বাড়ছে।

সভ্যতার অসুখ বা বিবর্তনীয় গরমিলজনিত অসুখগুলোকে আটকাতে গেলে জীবনযাত্রার ব্যাপক পরিবর্তন দরকার। তাতে কিছু আরাম ছাড়তে হবে। প্রসেসড ফুড ছাড়তে হবে, বাড়িতে রান্না করার কষ্টকর কাজটা করতে হবে, নয়তো গড়ে তুলতে হবে যৌথ রান্নাঘর। হয়তো কিছু উচ্চ প্রযুক্তি কমাতে হবে, যেমন কলে ছাঁটা চালের বদলে ঢেঁকিতে ছাঁটা চাল খেতে হবে। মোটরগাড়ি ব্যাপকভাবে কমাতে হবে, সাইকেলের ব্যবহার বাড়াতে হবে। গ্রস ডোমেস্টিক প্রোডাক্ট বা জিডিপি দিয়ে মাপা যে উন্নয়ন, এগুলো তার পক্ষে যাবে না। কিন্তু অন্য উপায় নেই বলেই মনে হয়।


পাদটীকা ও তথ্যসূত্রঃ

(১) সম্ভবত এই পেনিসিলিনেজ তৈরি করার জিন অন্য জীবাণুর মধ্যে আগেই ছিল। এক ধরনের ছত্রাক থেকে পেনিসিলিন নিষ্কাশন করা হয়। সেই ছত্রাককে আক্রমণ করে এমন ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে পেনিসিলিনেজ থাকাই স্বাভাবিক। মানুষ পেনিসিলিন ব্যবহার শুরু করার পরে সম্ভবত পেনিসিলিনেজ জিন অন্য জীবাণুর মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছিল।

(২) https://news.un.org/en/story/2019/10/1048452, ২০ মে, ২০২২।

(৩) https://worldpopulationreview.com/country-rankings/obesity-rates-by-country, ২০ মে, ২০২২।

৪) https://www.who.int/news-room/fact-sheets/detail/obesity-and-overweight ২০ মে, ২০২২।

(৫) https://www.fao.org/india/fao-in-india/india-at-a-glance/en/

(৬) https://www.cdc.gov/nchs/pressroom/nchs_press_releases/2022/20220831.htm